আন্দোলনের সমর্থনে রেমিট্যান্স কমিয়ে দেন যুক্তরাষ্ট্র-সৌদি প্রবাসীরা

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ৮ অক্টোবর, ২০২৪
  • ২১ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রির্পোট:- বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন সাড়া ফেলেছিল প্রবাসেও। আন্দোলনকারীরা দেশে রেমিট্যান্স না পাঠানোর ক্যাস্পেইন শুরু করেন।
এতে ব্যাপকভাবে সাড়া দিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবে কর্মরত বাংলাদেশিরা, কমে যায় দেশ দুটি থেকে আসা প্রবাসী আয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের জুলাই-সেপ্টেম্বর তিন মাসের প্রবাসী আয় পর্যালোচনা করে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।

বাংলাদেশে রেমিট্যান্স পাঠানো দ্বিতীয় প্রধান দেশ যুক্তরাষ্ট্র। জুলাই-সেপ্টেম্বর তিন মাসে দেশটি থেকে প্রবাসী আয় আসে ৯২ কোটি ৩ লাখ ৮৯ হাজার ডলার। জুলাই মাসে দেশটি থেকে প্রবাসীরা পাঠিয়েছিলেন ২৩ কোটি ৮৯ লাখ ৬০ হাজার মার্কিন ডলার। ৫ আগস্টে শেখ হাসিনা সরকারের পতন হলে প্রবাসী আয় বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় ২৯ কোটি ৩৪ লাখ ৭০ হাজার ডলার। পরের মাস সেপ্টেম্বরে আরও বেড়ে দাঁড়ায় ৩৮ কোটি ৭৯ লাখ ৫০ হাজার ডলার।

জুলাই পরবর্তী দুই মাসে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবাসী আয়ের বৃদ্ধির হার যথাক্রমে ২২ দশমিক ৮০ এবং ৬২ দশমিক ৩৪ শতাংশ।

জুলাই-সেপ্টেম্বর তিন মাসে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রবাসী বাংলাদেশিরা পাঠিয়েছেন ১০৩ কোটি ২২ লাখ ১০ হাজার ডলার। দেশটির প্রবাসীরা দেশের আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত হলেও জুলাই মাসে দেশে প্রবাসী আয় খুব একটা কমেনি। জুলাই মাসে দেশটি থেকে থেকে প্রবাসী আয় আসে ৩৩ কোটি ২৬ লাখ ৭০ হাজার ডলার। আগস্টে ৩৩ কোটি ৭৭ লাখ ৬০ ডলার এবং সেপ্টেম্বর আসে ৩৬ কোটি ১৭ লাখ ৮০ হাজার ডলার।

সংযুক্ত আরব আমিরাতে জুলাই আন্দোলন পরবর্তী প্রবাসী আয় বাড়ে যথাক্রমে ১ দশমিক ৫৩ শতাংশ এবং ৮ দশমিক ৭৬ শতাংশ।

জুলাই-সেপ্টেম্বর তিন মাসে দেশে প্রবাসী আয় পাঠানো তৃতীয় দেশ সৌদি আরব। এ সময়ে দেশটিতে কর্মরত প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন ৮৫ কোটি ৮৮ লাখ ৬০ হাজার ডলার। এর মধ্যে জুলাই মাসে পাঠিয়েছেন ২৪ কোটি ৪৬ লাখ ৫০ হাজার ডলার। আগস্টে ২৬ কোটি ৮৭ লাখ ৫০ হাজার ডলার এবং সেপ্টেম্বরে ৩৪ কোটি ৫৪ লাখ ৬০ হাজার ডলার।

সৌদি আরবে আগস্ট-সেপ্টেম্বর দুই মাসে প্রবাসী আয় বৃদ্ধির হার যথাক্রমে ১০ শতাংশ ও ৪১ শতাংশ।

প্রবাসী আয় পাঠানোর ক্ষেত্রে ইতালিতেও জুলাই থেকে আগস্ট-সেপ্টেম্বরে ইতিবাচক পরিবর্তন হয়েছে। প্রবাসী আয় পাঠানোর শীর্ষ পাঁচ দেশের মধ্যে ইউরোপের দেশটি অন্যতম। ইতালি থেকে প্রবাসীরা জুলাই মাসে রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন ১২ কোটি ৮২ লাখ ৯০ হাজার ডলার। আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে প্রবাসী আয় পাঠিয়েছেন যথাক্রমে ১৫ কোটি ১৬ লাখ ৪০ হাজার ডলার এবং ১৪ কোটি ৫৭ লাখ ৬০ হাজার ডলার।

আগস্ট-সেপ্টেম্বরে দেশেটি থেকে প্রবাসীদের রেমিট্যান্স পাঠানোতে প্রবৃদ্ধি যথাক্রমে ১৮ দশমিক ২০ শতাংশ ও ১৩ দশমিক ৬১ শতাংশ।

জুলাই মাসে প্রবাসীরা আন্দোলনে সামিল হয়েছিলেন। তারা কম প্রবাসী আয় পাঠিয়েছেন, এটা ঠিক। আবার আন্দোলন চলাকালে দেশে ব্যাংক বন্ধ থাকার কারণেও রেমিট্যান্স পাঠাতে না পারাও একটি কারণ বলে মনে করেন ব্র্যাকের মাইগ্রেশন ও ইয়ুথ প্ল্যাটফর্মের সহযোগী পরিচালক শরিফুল হাসান।

বাংলানিউজকে তিনি বলেন, আগস্ট-সেপ্টেম্বর মাসে প্রবাসী আয় বৃদ্ধি পেয়েছে, এটা দেশে সরকার পরিবর্তনের ইতিবাচক প্রভাব। আবার প্রবাসীদের জন্য আরেকটি বাস্তবতা হলো, দেশে দুর্যোগ-দুর্বিপাকে ও ঈদ-পার্বণে বেশি অর্থ পাঠান; যাতে দেশে পরিজনরা ভালো থাকেন, দেশ উপকৃত হয়। আগস্ট-সেপ্টেম্বরে দেশে বন্যা হয়েছিল। প্রবাসী আয় বেশি পাঠানোর এটাও একটি কারণ।

দেশের বাইরে কর্মের সন্ধানে যাওয়া বাংলাদেশির সংখ্যা প্রায় দেড় কোটি। এ সব প্রবাসী প্রতি বছর ২০ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ দুই লাখ ৪২ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রবাসীদের পাঠানো প্রবাসী আয়ের পরিমাণ ২৩ দশমিক ৯১ বিলিয়ন ডলার। ২০২০-২১ অর্থবছরে সর্বোচ্চ প্রবাসী আয় আসে। এ বছর আসা প্রবাসী আয়ের পরিমাণ ছিল ২৪ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন ডলার।

প্রবাসী বাংলাদেশিরা দেশের অর্থনীতিতে যেমন ভূমিকা রাখছেন, দেশের আন্দোলন-সংগ্রামেও তাদের ভূমিকা লক্ষ্য করা গেছে। দেশে এবারের সরকার পতনের আন্দোলনে সমর্থনের পাশাপাশি প্রবাসীরা রেমিট্যান্স না পাঠিয়ে বিগত সরকারকে অর্থনৈতিক চাপ প্রয়োগ করেন। বাংলানিউজ

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.net
Website Design By Kidarkar It solutions