ডেস্ক রির্পোট:- শেখ হাসিনার সরকারের পদত্যাগের পরপরই একে একে তার দলীয় নেতাকর্মীদের সীমাহীন দুর্নীতি আর অনিয়মের তথ্য সামনে আসতে শুরু করেছে। ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পরই সরব হয়ে উঠেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আওয়ামী লীগ নেতা, বিভিন্ন এমপি, মন্ত্রী ও প্রভাবশালীদের দুর্নীতি তদন্ত শুরু করেছে সংস্থাটি। যদিও এসব অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরে দুদকে লাল ফিতায় বন্দি ছিল।
অভিযোগ রয়েছে, সরকারে বিভিন্ন মহলের তদবির আর চাপের কারণে দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাটি স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারেনি। তবে সরকার পতনের পর এসব অভিযোগ আমলে নিয়ে তদন্তে নেমেছে দুদক। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল সোমবার আওয়ামী লীগ সরকারের ৪১ জন মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও এমপির বিরুদ্ধে দুর্নীতি অনুসন্ধানের নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংস্থাটি। দুদকের একটি সূত্র কালবেলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
এর আগে গত রোববার দুদক চেয়ারম্যানের কাছে অস্বাভাবিক সম্পদ বৃদ্ধি হওয়া ৪১ জন এমপি, মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীর তালিকা এবং সম্পদ বৃদ্ধির পরিসংখ্যান দিয়ে অনুসন্ধানের আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার এম সরোয়ার হোসেন। গতকাল দুদকের যাচাই-বাছাই কমিটিতে ৪১ এমপি-মন্ত্রীর সম্পদের তথ্য অনুসন্ধানের বিষয়টি অনুমোদন দেওয়া হয়।
দুদকের তালিকায় সাবেক যেসব মন্ত্রীর নাম রয়েছে তারা হলেন সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সমাজকল্যাণমন্ত্রী ডা. দীপু মনি, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনামন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান, সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম, তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ
আহমেদ পলক, শিক্ষামন্ত্রী মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, নৌপ্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, ধর্মমন্ত্রী ফরিদুল হক, সাবেক পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী ইমরান আহমদ, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন, শিল্পপ্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, সাবেক নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মহিবুর রহমান।
তালিকায় যেসব এমপি: বেনজীর আহমেদ (ঢাকা-২০), সরওয়ার জাহান (কুষ্টিয়া-১), শরিফুল ইসলাম জিন্না (বগুড়া-২), শহিদুল ইসলাম বকুল (নাটোর-১), শেখ আফিল উদ্দিন (যশোর-১), ছলিম উদ্দীন তরফদার (নওগাঁ-৩), কাজী নাবিল আহমেদ (যশোর-৩), এনামুল হক (রাজশাহী-৪), মামুনুর রশিদ কিরণ (নোয়াখালী ৩), কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা (খাগড়াছড়ি), মেহের আফরোজ চুমকি (গাজীপুর-৫), কাজিম উদ্দিন আহমেদ (ময়মনসিংহ-১১), স্বপন ভট্টাচার্য (যশোর-৫), আনোয়ার হোসেন মঞ্জু (পটুয়াখালী-২), নূরে আলম চৌধুরী (মাদারীপুর-১), আবু সাইদ আল মাহমুদ স্বপন (জয়পুরহাট-২), শেখ হেলাল উদ্দিন (বাগেরহাট-১) ও জিয়াউল রহমান (চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২)।
জানতে চাইলে দুদক সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন বলেন, ‘আমাদের কাছে একটি তালিকা এসছে। তালিকাটি আমাদের যাচাই-বাছাই কমিটি দেখছে। কেউ অপরাধ করলে অবশ্যই তদন্ত হবে। এখানে ছাড় পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।’