শিরোনাম
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে সব নির্বাচন চান সম্পাদকরা রাজপথে পরিকল্পিত নৈরাজ্য,হাসিনার ষড়যন্ত্রে একের পর এক অস্থিরতার চেষ্টা প্রতিষ্ঠানের মালিকানা হারাচ্ছেন বড় গ্রুপের প্রভাবশালীরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ঘুষের সিন্ডিকেট,বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংস্থার সঙ্গে দেনদরবারেও জড়িত পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ পুনর্গঠনের দাবিতে রাঙ্গামাটিতে বিক্ষোভ-সমাবেশ ডিসেম্বরে বাংলাদেশ-ভারত বৈঠকের প্রস্তুতি, হাসিনার প্রত্যর্পণ নিয়ে আলোচনার সম্ভাবনা বিচারের পর আ.লীগকে নির্বাচনে স্বাগত জানানো হবে-টাইম ম্যাগাজিনকে ড. ইউনূস আগামী নির্বাচন নিয়ে দিল্লি ভয়ংকর পরিকল্পনা করছে: জাগপা নেতা রহমত নতুন সিইসি নাসির উদ্দীনের নাম ছিল বিএনপির তালিকায় নাসির উদ্দীনকে সিইসি করে নির্বাচন কমিশন গঠন

চট্টগ্রামে মাংস বিক্রি হচ্ছে পোয়া হিসেবে

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় সোমবার, ১৩ মার্চ, ২০২৩
  • ৪২১ দেখা হয়েছে

চট্টগ্রাম:-চট্টগ্রামের মানুষকে বলা হয় ভোজনরসিক। নিজেরাও যেমন ইচ্ছামতো খায়, বাড়িতে মেহমান আসলে খাওয়াতেও পছন্দ করেন। অতিথিদের হরেক রকম খাবার দিয়ে মেহমানদারি করা তাদের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। চট্টগ্রামের মেজ্জান গণি বেকারির বেলা বিস্কুট, শুঁটকির কথা তো দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বাইরের অনেকেও জানে। তবে এখন জিনিসপত্রের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে তাদের জীবনে। এখন ভোজনবিলাস তো দূরে থাক, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতেও হিমশিম খাচ্ছেন এখানকার একটি বড় অংশের মানুষ। বাজারে ২৫০ গ্রাম করে গরু আর পিস হিসেবে মুরগি বিক্রির দৃশ্য দেখলে তাদের বর্তমান অবস্থা কিছুটা বুঝা যায়।
শুক্রবার সকালে চট্টগ্রাম নগরের চকবাজারের কাঁচাবাজারে গিয়ে দেখা যায় বেশ কয়েকটি দোকানে ‘পিস’ হিসেবে মুরগি বিক্রি হচ্ছে। আবার কয়েকটি দোকানে ২৫০ গ্রাম করে বিক্রি হচ্ছে গরুর মাংস। যেগুলো ঠিক দুই মাস আগেও চিন্তা করা যেতো না। এসব দোকানে ‘এখন মুরগির মাংস পিস হিসেবে বিক্রি হয়, এখানে ন্যূনতম ২৫০ গ্রাম মাংস বিক্রি হয়’ ব্যানার টাঙ্গিয়ে রাখতে দেখা গেছে।

ফটিকছড়ির কাঞ্চননগরের একটি মহল্লার সর্দার মাস্টার জসিম উদ্দিন বলেন, এখানে আগে গড়ে প্রতি মাসে কয়েকটি মেজবান হতো।

বিশেষ করে ডিসেম্বর থেকে মার্চ মাসে সবচেয়ে বেশি মেজবান দেয়া হতো। মানে এখন মেজবানের মৌসুম চলছে। আর সেখানে আমাদের এই সমাজসহ আশেপাশের সমাজে গত দুই মাসে কোনো মেজবান হয়নি। মানুষ নিজেরাই চলতে পারছে না, সেখানে মেজবান দেবে কীভাবে?

এদিকে গতানুগতিক মেজবানের পাশাপাশি চট্টগ্রাম শহরের প্রায় সব ভালো রেস্টুরেন্টে বিক্রি করা হতো মেজবানের মাংস। এরমধ্যে শুধুমাত্র মেজবানের বিশেষায়িত রেস্টুরেন্ট আছে ১৪-১৫ টি। সেসব রেস্টুরেন্টে বিকিকিনি ছিল চোখে পড়ার মতো। তবে বর্তমান সময়ে এদের ব্যবসায়েও ভাটা পড়েছে। কয়েকটি মেজবানের রেস্টুরেন্ট ইতিমধ্যে বন্ধও হয়ে গেছে।

নগরের মুরাদপুরে অবস্থিত ‘ডেইলি মেজ্জান’ রেস্টুরেন্ট। তুলনামূলক কম মূল্য ও ভালো স্বাদের কারণে প্রতিষ্ঠানটির বেশ নাম-ডাক আছে পুরো শহরে। করোনা মহামারির সময়েও ভালো ব্যবসা করেছিল প্রতিষ্ঠানটি। তবে দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধির কারণে অন্যদের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটির খাবারের মূল্যও বাড়িয়েছে সম্প্রতি। আর এতেই কাস্টমার কমে গেছে ৩০-৪০ শতাংশ।
প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক অহিদুল আলম বলেন, আসল মেজবানের স্বাদ ধরে রাখার পাশাপাশি তুলনামূলক কম মূল্যের কারণে আমাদের বিক্রি বেশ ছিল। তবে এখন দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধির কারণে আমাদেরকে খাবারের মূল্য বাড়াতে হয়েছে।
চট্টগ্রামে বিয়ে-শাদি মানেই বুঝতে হবে বাহারি খাবারের মেলা। ৮-১০ পদ খাবার দিয়ে বরযাত্রীসহ মেহমানদের আপ্যায়ন করতে হবেÑ এটাই ছিল এখানকার নিয়ম। তবে এখানেও লেগেছে দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব। খরচ কমাতে এখন এই আইটেমগুলোতে কাটছাঁট করছেন আয়োজকরা।

চট্টগ্রাম মহানগর হোটেল রেস্টুরেন্ট বাবুর্চি সমিতির সেক্রেটারি শহিদুল ইসলাম বলেন, ১৬ বছর ধরে চট্টগ্রামে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে রান্নাবান্না করছি। এক সময় কমপক্ষে ৮-১০ পদের খাবার দিয়ে বিয়ে-শাদিতে খাওয়ানো হতো। আর এখন এটি ৬-৭ আইটেমে নেমে এসেছে। আসলে কিছুই করার নেই। মানুষ তো হাঁপিয়ে উঠেছে।
শনিবার বিকালে নগরের হিলভিউ বাজারে গিয়ে দেখা যায় ক্রেতাদের নাভিশ্বাস। এখানে প্রতি কেজি হাড়ছাড়া গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৮৫০ টাকা, হাড়সহ গরুর মাংস ৭৫০ টাকা, ব্রয়লার মুরগি ২৫০ টাকা, তেলাপিয়া মাছ ২০০ টাকা, পাঙ্গাশ মাছ ১৮০ টাকা, রুই ২৬০ টাকা আর প্রতি ডজন ডিম ১৩০ টাকা। মুদির আইটেমের মধ্যে সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১৮৭ টাকা, সরিষার তেল ৩২০ টাকা, প্রতি কেজি চিনি ১২০ টাকা, চনার ডাল ৭৭ টাকা, মসুর ডাল (বড় দানা) ১১৫ টাকা, ছোট দানা মসুর ডাল ১৫০ টাকা, পিয়াজ ৪০ টাকা, রসুন ১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

তবে একই সময়ে দেশের বৃহত্তর পাইকারি ভোগ্যপণ্যের বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে খোঁজ নিয়ে জানা যায় ভিন্ন চিত্র। সেখানে প্রতি লিটার সয়াবিন তেল ১০৭ টাকা, সরিষার তেল ২৪৫ টাকা, প্রতি কেজি চিনি ১০৭ টাকা, চনার ডাল ৭৭ টাকা, মসুর ডাল ছোট ১৩০ টাকা, বড় দানার মসুর ডাল ৮৮ টাকা, পিয়াজ ৩০ টাকা, রসুন ১০২ টাকায় পাইকারি বিক্রি হচ্ছে। এক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, দেশের পাইকারি বাজার অনেকটা স্বাভাবিক হলেও রহস্যজনক কারণে খুচরা বাজার স্থিতিশীল।

এ বিষয়ে চাক্তাই খাতুনগঞ্জ আড়তদার ব্যবসায়ী সমিতি সেক্রেটারি মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বলেন, খাতুনগঞ্জের বাজার এখন স্থিতিশীল। বলতে গেলে গত বছরের রমজানের তুলনায় এইবার চিনি ছাড়া প্রায় সব আইটেমের মূল্য কম। এখানে আমদানি স্বাভাবিক আছে, মজুতও পর্যাপ্ত আছে। এরমধ্যে একটা শ্রেণি আমদানি বন্ধ-মজুত কম গুজব ছড়িয়ে খুচরা বাজার অস্থিতিশীল করছে ও সুবিধা নিচ্ছে।এক্ষেত্রে তাই প্রশাসনকে খুচরা বাজার মনিটরিংয়ে গুরুত্ব দেয়া দরকার।মানবজমিন

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com
Website Design By Kidarkar It solutions