কোটা আন্দোলন: আলোচিত-সমালোচিত যত কথাবার্তা

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১ আগস্ট, ২০২৪
  • ৯৭ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রির্পোট:- কোটাপ্রথা নিয়ে টানা আন্দোলন শুরু হয় ৫ জুলাই। শুরুতে এই আন্দোলন অহিংস হলেও তা সংঘাতপূর্ণ হয়ে ওঠে ১৫ জুলাই থেকে। প্রথমে আন্দোলন প্রতিহত করতে নামেন ছাত্রলীগ ও দলীয় সমর্থকেরা। পরে নামানো হয় পুলিশ, বিজিবি ও সেনাবাহিনীকে। এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় ২১২ জন নিহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
শুরু থেকেই আলোচনায় বসলে এই আন্দোলন শান্তিপূর্ণভাবে সমাপ্ত হতো বলে মনে করেন দেশের বিশিষ্টজনেরা। অথচ সরাসরি আলোচনা না করে নীতিনির্ধারকদের নানা ধরনের মন্তব্যের কারণে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে। বিভিন্নজনের করা মন্তব্য নিয়ে সমালোচনাও হচ্ছে প্রচুর। আবার কেউ কেউ আলোচনায় বসার কথাও বলেছিলেন। পুরো আন্দোলনের সময়ে নানাজনের মন্তব্য নিয়েই এই প্রতিবেদন।

আন্দোলন যখন শুরু—————–

১ জুলাই, সোমবার

# ‘৪ জুলাইয়ের মধ্যে আইনিভাবে আমাদের দাবির চূড়ান্ত সুরাহা করতে হবে।’

—নাহিদ ইসলাম, সমন্বয়ক, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত সমাবেশে

৩ জুলাই, বুধবার

# ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা সবাই অনগ্রসর নন, তাই সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা রাখা সংবিধানসম্মত নয়। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে বড় আকারে মুক্তিযোদ্ধা কোটা চিরস্থায়ী করলে স্বাধীনতার মূল উদ্দেশ্যকে ধ্বংস করা হয়।’

—জি এম কাদের, বিরোধীদলীয় নেতা, জাতীয় সংসদে বাজেট অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্য

৪ জুলাই, বৃহস্পতিবার

# ‘এত আন্দোলন কিসের রাস্তায় শুরু হয়েছে? আন্দোলনের চাপ দিয়ে কি হাইকোর্টের রায়, সুপ্রিম কোর্টের রায় পরিবর্তন করবেন?’

—প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, হাইকোর্টের দেওয়া রায় নিয়ে আপিল বিভাগের শুনানিতে দেওয়া বক্তব্য

# ‘২০১৮ সালে গণ-আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে ওই বছর নির্বাহী বিভাগ কোটা বাতিল করে যে পরিপত্র জারি করেছিল, আজকে বিচার বিভাগ দিয়ে সেই কোটাকে আবার পুনর্বহাল করা হলো। এটা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একটা প্রহসন। রাষ্ট্রযন্ত্রের মধ্যে এই সমন্বয়হীনতা ও অন্তর্দ্বন্দ্বের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের কোনো সম্পর্ক নেই। তারা নিজেদের মধ্যে সমন্বয় করুক এবং শিক্ষার্থীদের দাবি বিবেচনা করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সেগুলো পূরণ করুক।’

—নাহিদ ইসলাম, সমন্বয়ক, শাহবাগ মোড় অবরোধ কর্মসূচিতে দেওয়া বক্তব্য

৬ জুলাই, শনিবার

# ‘বিএনপি তো একটি রাজনৈতিক দল। দেশের ভেতরে যা হচ্ছে, তার প্রতিক্রিয়া তো বিএনপিকে দিতেই হবে। এটা ছাত্রদের আন্দোলন। এখানে বিএনপির সম্পৃক্ত হওয়ার প্রয়োজন নেই। তাই বলে ন্যায্য আন্দোলনে নৈতিক সমর্থন করব না?’

—মির্জা ফখরুল ইসলাম, মহাসচিব, বিএনপি, সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি কোটাবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ভর করছে কি না, এমন এক প্রশ্নের জবাবে

৮ জুলাই, সোমবার

# ‘কোটা বাতিলের বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন। আদালতের রায় পর্যন্ত অপেক্ষা করুন’

—ওবায়দুল কাদের, সাধারণ সম্পাদক, আওয়ামী লীগ, সংবাদ সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্য

# ‘সরকারি চাকরিতে সব গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে শুধু সংবিধান অনুযায়ী অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জন্য ন্যূনতম কোটা রেখে সংসদে আইন পাস করতে হবে। এটা করার দায়িত্ব কেবল নির্বাহী বিভাগ ও সরকারের। এখন আর আদালত দেখিয়ে কোনো লাভ নেই।’

—নাহিদ ইসলাম, সমন্বয়ক, শাহবাগ মোড়ে অবরোধ শেষে দেওয়া বক্তব্য

১০ জুলাই, বুধবার

# ‘আমি প্রথম দিনই বলেছিলাম, রাস্তায় স্লোগান দিয়ে রায় পরিবর্তন হয় না। এটা আজকে না, আমি যখন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ছিলাম, তখন একটি মামলায় বলেছিলাম, রাস্তায় স্লোগান দিয়ে রায় পরিবর্তন করা যায় না। এটি সঠিক পদক্ষেপ না।’

—ওবায়দুল হাসান, প্রধান বিচারপতি, হাইকোর্টের রায় চার সপ্তাহের জন্য স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে নির্দেশ দেওয়ার আগে শুনানিতে দেওয়া বক্তব্য

১১ জুলাই, বৃহস্পতিবার

# ‘কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীরা সর্বোচ্চ আদালতের বিরুদ্ধে শক্তি প্রদর্শন করছেন। এটি অনভিপ্রেত ও সম্পূর্ণ বেআইনি।’ —ওবায়দুল কাদের, ধানমন্ডিতে এক সংবাদ সম্মেলনে

# ‘শিক্ষার্থীরা লিমিট ক্রস করে যাচ্ছেন’

—আসাদুজ্জামান খান, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে

১৪ জুলাই, রোববার

# ‘কোটা বিষয়ে আমার কিছু করার নেই। মামলার পর আদালত যে রায় দেন, এতে নির্বাহী বিভাগের কিছু করার নেই। আদালতেই সমাধান করতে হবে।’

‘তারা তো আইন মানবে না, আদালত মানবে না, সংবিধান কি তারা চিনবে না বা একটা কাজ করতে হলে কার্যনির্বাহীর কাজ কী, বিধিমালা বা ধারা থাকে, একটা সরকার কীভাবে চলে, সে সম্পর্কে কোনো ধারণা এদের নাই।’

‘মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-পুতিরা পাবে না? তাহলে কি রাজাকারের নাতি-পুতিরা চাকরি পাবে?’

—শেখ হাসিনা, প্রধানমন্ত্রী, গণভবনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে

আন্দোলন যখন প্রাণঘাতি হয়

১৫ জুলাই, সোমবার

# ‘শান্তিপূর্ণভাবে কোটাব্যবস্থার সংস্কার নিয়ে অনেকেই পক্ষে–বিপক্ষে আলোচনা করেছে, আন্দোলন করেছে। এটি অবশ্যই নাগরিক অধিকার। এ ব্যাপারে কারও কোনো দ্বিমত নেই। কিন্তু যারা প্রকাশ্যে নিজের আত্মপরিচয়, জন্মপরিচয়, ব্যক্তিত্ব বিসর্জন দিয়ে ‘‘তুমি কে, আমি কে রাজাকার! রাজাকার!’’ স্লোগান দিয়েছে, এরা সবাই এই যুগের রাজাকার।…এ যুগের রাজাকারদের পরিণতি ওই যুগের রাজাকারদের মতোই হবে! ঘৃণা, ধিক্কার আর ক্রোধ এদের প্রতি! রাজাকারের দল তোরা, এই মুহূর্তে বাংলাদেশ ছাড়!’

—মহিবুল হাসান চৌধুরী, শিক্ষামন্ত্রী, ফেসবুক স্ট্যাটাস

# ‘কোটা সংস্কার আন্দোলনে যাঁরা ‘‘আমি রাজাকার’’ স্লোগান দিচ্ছেন, তাঁদের শেষ দেখিয়ে ছাড়ব’

—সাদ্দাম হোসেন, কেন্দ্রীয় সভাপতি, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ

# ‘কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের ‘‘রাজাকার’’ স্লোগানের জবাব ছাত্রলীগই দেবে’

—ওবায়দুল কাদের, ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে

১৭ জুলাই, বুধবার

# ‘আইনি প্রক্রিয়ায় সমাধানের সুযোগ থাকা সত্ত্বেও রাস্তায় আন্দোলনে নেমে দুষ্কৃতকারীদের সংঘাতের সুযোগ করে দেবেন না। সর্বোচ্চ আদালতের রায় আসা পর্যন্ত ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করার জন্য আমি সকলকে বিশেষভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি। আমার বিশ্বাস, আমাদের ছাত্রসমাজ উচ্চ আদালত থেকে ন্যায়বিচারই পাবে, তাদের হতাশ হতে হবে না।’

—শেখ হাসিনা, প্রধানমন্ত্রী, জাতির উদ্দেশে ভাষণ

# ‘আওয়ামী লীগের অস্তিত্বের প্রতি হামলা এসেছে, হুমকি এসেছে। এ পরিস্থিতি মোকাবিলা আমাদের করতেই হবে। কাজেই আপনারা ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে প্রস্তুত হয়ে যান। আমাদের সারা দেশের প্রত্যেক নেতা-কর্মীকে আমাদের নেত্রীর পক্ষ থেকে নির্দেশ দিচ্ছি, সারা দেশে সতর্ক হয়ে শক্ত অবস্থান নিয়ে এ অশুভ অপশক্তিকে প্রতিহত করতে হবে। কোনো অপশক্তির সঙ্গে আপস করা যাবে না।’

—ওবায়দুল কাদের, ঢাকা জেলা ও মহানগর (উত্তর ও দক্ষিণ) আওয়ামী লীগ, দুই সিটি করপোরেশনের নির্বাচিত কাউন্সিলর, ঢাকার দলীয় সংসদ সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে

# ‘কোটা সংস্কার আন্দোলন এখন স্বাধীনতার বিরোধীদের হাতে চলে গেছে। কাজেই আর বসে থাকার সময় নেই।’

—আ ক ম মোজাম্মেল হক, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী, প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে

# ‘কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে যে সহিংসতা হচ্ছে, তার পেছনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়ানো গুজব দায়ী। তিনি বলেন, ফেসবুক, ইউটিউব, টিকটক, এক্সের মতো প্ল্যাটফর্মগুলোর অফিস ও ডেটা সেন্টার যদি ঢাকায় থাকত, তাহলে যেকোনো ধরনের কনটেন্ট ও গুজবকে প্রতিহত করা বা ফ্ল্যাগ দিয়ে দেওয়া অথবা ব্লক করে দেওয়া সহজ হতো।’

—জুনাইদ আহ্‌মেদ পলক, প্রতিমন্ত্রী, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি, এক সেমিনারে দেওয়া বক্তব্য

# ‘শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ করা মৌলিক মানবাধিকার। বাংলাদেশ সরকারের উচিত মানুষের এ অধিকার নিশ্চিত করা।’

—স্টিফেন ডুজারিক, নিউইয়র্কে, জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র

# ‘কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে বিএনপি সরাসরি জড়িত নয়। তবে এ আন্দোলনে বিএনপির নৈতিক সমর্থন রয়েছে।’

—মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মহাসচিব, বিএনপি, বায়তুল মোকাররম মসজিদে গায়েবানা জানাজার পর দেওয়া বক্তব্য

১৮ জুলাই, বৃহস্পতিবার

# ‘রাজপথ থেকে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে।’

—ওবায়দুল কাদের, ধানমন্ডি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে
সমাধান নিয়ে যত কথা

# ‘এ আগুন থামান। এ আগুন নেভানোর দায়িত্ব সরকারের। কালবিলম্ব না করে সম্ভব হলে আজ-কালকের মধ্যেই স্পেশাল কোর্ট বসিয়ে সমস্যার সমাধান করুন। সময় খুব কম। আমরাও সরকারে (এরশাদের আমলে) ছিলাম। আমরাও এভাবে আন্দোলনকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করেছিলাম। নূর হোসেন মারা যাওয়ার পর অনেকে বলেছিলেন, টোকাই মারা গেছে, কী হবে? কিন্তু আমি বলেছিলাম, না, এই নূর হোসেন একক কোনো ব্যক্তি নয়।’

—কাজী ফিরোজ রশীদ, নির্বাহী চেয়ারম্যান, জাতীয় পার্টি (রওশন এরশাদপন্থী)

# ‘সব ধরনের সহিংসতা ও বলপ্রয়োগ, বিশেষ করে প্রাণহানির ঘটনার অবশ্যই তদন্ত করতে হবে এবং দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশ মানুষের মৌলিক মানবাধিকার।’

—ফলকার টুর্ক, জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার, এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে

# ‘আমরা অবশ্যই (কোটা) সংস্কারের ব্যাপারে নীতিগতভাবে ঐকমত্য পোষণ করেছি। আমরা কোটা সংস্কারের পক্ষে। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সরকার আজই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বসতে রাজি আছে। প্রধানমন্ত্রী তাঁদের (শিক্ষার্থী) এ প্রস্তাবকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।’

—আনিসুল হক, আইনমন্ত্রী, জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায় এক প্রেস ব্রিফিংয়ে

# ‘এতগুলো লাশের ওপর দিয়ে আমরা আলোচনায় যাব কি না; গেলে কীভাবে যাব, কী নিয়ে যাব, তা নিয়ে বিন্দুমাত্র সিদ্ধান্ত আমরা এখনো নিইনি। এগুলো নিয়ে আমরা কথা বলছি।’

—সারজিস আলম, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক, প্রথম আলোকে বলেন
মৃত্যু, ইন্টারনেট বন্ধ, কারফিউ ও অন্যান্য

# ‘ইন্টারনেট বন্ধের জন্য পূর্বে কোনো ঘোষণা দেওয়া হয়নি। পরিস্থিতি বুঝে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্বার্থান্বেষী মহলের নানা গুজব আর অস্থিতিশীল পরিস্থিতির জন্য সাময়িকভাবে মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ করা হয়েছে।’

‘মহাখালীতে দুর্বৃত্তদের আগুনে ডেটা সেন্টার পুড়ে গেছে। সেটা ঠিক করার কাজ চলছে। কবে নাগাদ ইন্টারনেট সেবা চালু হবে, তা নির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব নয়।’

—জুনাইদ আহ্‌মেদ পলক, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী, সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে

# ‘সরকার শিক্ষার্থীদের সব দাবি মেনে নিয়েছে। আদালতের কাছে সরকারি চাকরিতে মেধার ভিত্তিতে ৮০ শতাংশ কোটার প্রস্তাব দেবে সরকার।’

—ওবায়দুল কাদের, গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে আওয়ামী লীগের ধানমন্ডি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে

# ‘বাংলাদেশে ছাত্রছাত্রীদের রক্ত ঝরছে।’ —মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, মুখ্যমন্ত্রী, পশ্চিমবঙ্গ, কলকাতায় এক দলীয় সমাবেশে

২০ জুলাই, শনিবার

# ‘এটা অবশ্যই কারফিউ। এটা নিয়ম অনুযায়ীই হবে এবং সেটা শুট অ্যাট সাইট হবে।’

—ওবায়দুল কাদের, গণভবনে ১৪ দলের বৈঠকের পর কারফিউ জারি ও সেনাবাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্তের বিষয়ে সাংবাদিকদের দেওয়া বক্তব্য

২২ জুলাই, সোমবার

# ‘জনগণের স্বার্থে এবং রাষ্ট্রের যেকোনো প্রয়োজনে সেনাবাহিনীর সদস্যরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দেশব্যাপী কাজ করে যাচ্ছে।’

—জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, সেনাপ্রধান, যাত্রাবাড়ী এলাকা পরিদর্শনের সময় দেওয়া বক্তব্যে

# ‘প্রতিটি অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য পাই পাই করে হিসাব দিতে হবে।’

—চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি), যাত্রাবাড়ী এলাকা পরিদর্শনের সময় দেওয়া বক্তব্যে

# ‘কিছুদিন আগে থেকেই অপতৎপরতা চালানোর জন্য ঢাকার বাইরের বিভিন্ন এলাকা থেকে সন্ত্রাসীরা এখানে এসে ঘাঁটি গেড়েছে। পুলিশ সদস্যদের হত্যা করার জন্য টাকা দিয়ে মানুষ নিয়োগ করা হয়েছে।’

—হাবিবুর রহমান, ডিএমপি কমিশনার, যাত্রাবাড়ী এলাকা পরিদর্শনের সময় দেওয়া বক্তব্যে

২৩ জুলাই, মঙ্গলবার

# ‘গুজব প্রতিরোধে কাজ করছে বিদেশের মিশনগুলো’

—হাছান মাহমুদ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের কাছে দেওয়া বক্তব্য

# ‘এমন নির্বিচার হত্যাকাণ্ড ব্রিটিশ, পাকিস্তান আমলেও হয়নি।’

—মির্জা ফখরুল ইসলাম, মহাসচিব, বিএনপি, বিবৃতি

২৪ জুলাই, বুধবার

# ‘কোটা আন্দোলনকারীদের একদিন জাতির কাছে জবাব দিতে হবে, কেন তারা তাদের দেশে এই ধ্বংসযজ্ঞের সুযোগ দিল।’

—শেখ হাসিনা, প্রধানমন্ত্রী, গণভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায়

# ‘জাতিসংঘের লোগো ভুলে মোছা হয়নি।’

—হাছান মাহমুদ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, আন্দোলন দমনে জাতিসংঘের লোগো–সংবলিত যান ব্যবহার নিয়ে জাতিসংঘের উদ্বেগের বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের কাছে দেওয়া বক্তব্য

# ‘ত্রাণ ও পুনর্বাসন অধিদপ্তরের নিচতলার পুরোটা পুড়িয়ে দিয়েছে। তার পার্শ্ববর্তী আরেকটি ডেটা সেন্টার আংশিক পুড়িয়ে দিয়েছে এবং তিনটি ডেটা সেন্টারের ফাইবার অপটিক্যাল কেব্‌লের রিডানডেন্সিসহ পুড়িয়ে দিয়েছে। ফলে আইএসপির ৭০ শতাংশ সার্ভার সেখানে ডাউন হয়ে গেছে। আমরা বেলা ৩টা থেকে ধাপে ধাপে এই পরিস্থিতির কারণে রাত ৯টায় ইন্টারনেট বন্ধ করিনি, ইন্টারনেট বন্ধ হয়ে গেছে।’

—জুনাইদ আহ্‌মেদ পলক, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী, ডাক ভবনে বক্তব্য

# ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর দুর্বৃত্তরা পুলিশ ও অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনীর পোশাক পরে হামলা চালিয়েছে।’

—খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে

২৬ জুলাই, শুক্রবার

# ‘নিরীহ মানুষ হত্যার দায় বিএনপি ও জামায়াতের।’

—ওবায়দুল কাদের, ধানমন্ডিতে সংবাদ সম্মেলনে ২৭ জুলাই, শনিবার

# ‘আজ আমরা খাজা ভবন পরিদর্শন করে এবং ভবনের অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারি, এখানে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। একটি বিষয় পরিষ্কার করে বলা দরকার, ডেটা সেন্টার হলো কেবল সার্ভার সংরক্ষণাগার, অর্থাৎ একপ্রকার লকার।’

—বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন, এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে

# ‘সরকার দেশে ইন্টারনেট বন্ধ করেনি, ইন্টারনেট একা একা বন্ধ হয়ে গেছে।’ —জুনাইদ আহ্‌মেদ পলক, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী, ‘শান্তির জন্য বৃক্ষ’ কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে।

২৮ জুলাই, রোববার

# ‘শ্রীলঙ্কা স্টাইলে গণভবন দখলের ষড়যন্ত্র ছিল’ —ওবায়দুল কাদের, ধানমন্ডিতে সংবাদ সম্মেলনে
এবংমশকরা

# ‘নিরাপত্তার স্বার্থে আমরা সমন্বয়কদের ডিবি হেফাজতে নিয়েছি।’

—হারুন অর রশীদ, ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার, হাসপাতাল থেকে রাতে ৫ সমন্বয়ককে তুলে আনা প্রসঙ্গে।

# ‘ডিবি বলছে, নিরাপত্তার কারণে তাদের কাছে রেখেছে। সন্তান মা-বাবার কাছে নিরাপদ। ডিবি অফিসে কিসের নিরাপত্তা?’

—ডিবি কার্যালয়ের পাশে দাঁড়িয়ে সমন্বয়ক নাহিদ ইসলামের মা মমতাজ নাহার সাংবাদিকদের কাছে

২৯ জুলাই, সোমবার

‘প্রাণের মূল্য কোটি কোটি টাকার চেয়ে অনেক বেশি।’

—তানজিম আহমেদ, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী, ৬ সমন্বয়ককে দেখতে গিয়ে ডিবি অফিসের সামনে

# ‘কোটা সংস্কার আন্দোলন বন্ধে জোর করে ছয় সমন্বয়কদের দিয়ে বিবৃতি দেওয়ার অভিযোগটি গুজব। যাঁরা এই গুজব ছড়িয়েছেন, তাঁদের প্রতি অনুরোধ—গুজব ছড়াবেন না। ডিবি একটি আস্থার জায়গা। সেখানে কাউকে আটকে রাখা হয় না। জোর করে বিবৃতি নেওয়া হয় না।’

—হারুন অর রশীদ, ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার, আন্দোলন প্রত্যাহার করা প্রসঙ্গে ডিবি হেফাজতে থাকা ৬ সমন্বয়কের ঘোষণা প্রসঙ্গে

# ‘জাতিকে নিয়ে মশকরা কইরেন না, যাকে ধরেন, খাবার টেবিলে বসিয়ে দেন।’ —বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ককে অবিলম্বে মুক্তি প্রসঙ্গে করা রিটের শুনানিতে হাইকোর্টের এ মন্তব্য। সুত্র প্রথমআলো

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.net
Website Design By Kidarkar It solutions