ডেস্ক রির্পোট:- রংপুরে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক আবু সাঈদ। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) এই শিক্ষার্থীর শরীরে ছররা গুলির অসংখ্য চিহ্ন পাওয়া গেছে।
মৃত্যুর একদিন আগে, সোমবার (১৫ জুলাই) দুপুর ১২টা ৩৭ মিনিটে শহীদ ড. শামসুজ্জোহাকে স্মরণ করে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছিলেন আবু সাঈদ। ‘আজ আমি ছাত্রদের রক্তে রঞ্জিত। এর পর কোনো গুলি হলে তা ছাত্রকে না লেগে যেন আমার গায়ে লাগে’— শহীদ ড. শামসুজ্জোহার এই উক্তি পোস্ট করেন তিনি।
সৈয়দ মোহাম্মদ শামসুজ্জোহা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক (তৎকালীন রিডার) ছিলেন। ১৯৬৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি আইয়ুব বিরোধী আন্দোলনের সময় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর আক্রমণের মুখে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের রক্ষা করতে গিয়ে শহীদ হন তিনি।
শহীদ শামসুজ্জোহার উক্তি নিয়ে করা কোটা সংস্কার আন্দোলনের সংগঠক আবু সাঈদের ফেসবুক পোস্ট মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) তার মৃত্যুর পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
ওই পোস্টে তিনি লেখেন, “স্যার! এই মুহূর্তে আপনাকে ভীষণ দরকার স্যার! আপনার সমসাময়িক সময়ে যারা ছিল সবাই তো মরে গেছে, কিন্তু আপনি মরেও অমর। আপনার সমাধি, আমাদের প্রেরণা। আপনার চেতনায় আমরা উদ্ভাসিত। ”
“এই প্রজন্মে যারা আছেন, আপনারাও প্রকৃতির নিয়মে একসময় মারা যাবেন। কিন্তু যতদিন বেঁচে আছেন মেরুদণ্ড নিয়ে বাঁচুন। নায্য দাবিকে সমর্থন জানান, রাস্তায় নামুন, শিক্ষার্থীদের ঢাল হয়ে দাড়াঁন। প্রকৃত সম্মান এবং শ্রদ্ধা পাবেন। মৃত্যুর সাথে সাথেই কালের গর্ভে হারিয়ে যাবেন না। আজন্ম বেঁচে থাকবেন শামসুজ্জোহা হয়ে। ”
পোস্টের শেষ প্যারায় আবু সাঈদ লেখেন, “অন্তত একজন ‘শামসুজ্জোহা’ হয়ে মরে যাওয়াটা অনেক বেশি আনন্দের, সম্মানের আর গর্বের”।
এর আগে সোমবার সকাল ৯টা ৫ মিনিটে আরেকটি পোস্ট দিয়েছিলেন আবু সাঈদ। তার ফেসবুক প্রোফাইলে গিয়ে দেখা যায়, ওই পোস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আদনান আবিরকে উদ্ধৃত করে তিনি লিখেছেন, “যদি আজ শহীদ হই, তবে আমার নিথর দেহটা রাজপথে ফেলে রাখবেন। ছাত্রসমাজ যখন বিজয় মিছিল নিয়ে ঘরে ফিরবে, তখন আমাকেও বিজয়ী ঘোষণা করে দাফন করবেন। একজন পরাজিতের লাশ কখনও তার মা-বাবা গ্রহণ করবে না। ”