দেশে দুর্নীতি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ নিয়েছে-সংসদে আওয়ামী লীগের সংসদ

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ২৭ জুন, ২০২৪
  • ৫৮ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রির্পোট:- দুর্নীতির বিস্তার নিয়ে সংসদে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নড়াইল-১ আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য কবিরুল হক মুক্তি। বলেছেন, ‘দেশে দুর্নীতি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ নিয়েছে।’

বুধবার (২৬ জুন) সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে এ কথা বলেন তিনি।

আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ‘আজকে অনেকের দুর্নীতির থলের বিড়াল বের হচ্ছে।
আমার কাছে মনে হয় এ দুর্নীতির আঘাত থেকে আমরা কেউ বাইরে নই।’

দুর্নীতির জন্য জনপ্রতিনিধির দোষ হলেও আসলে সরকারি কেনাকাটায় জড়িতরা দায়ী বলে মনে করেন এই সংসদ সদস্য। তিনি বলেন, ‘সংসদের সাড়ে তিন শ এমপি, তাদের দুর্নীতি করার সুযোগ কোথায়? আমার কথায় কোনো কাজ হয় না, চাকরি হয় না। আমার কথায় সরকারের কোনো কেনাকাটা হয় না।
তাহলে দুর্নীতি কীভাবে করব? তারাই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত যারা সরকারের কেনাকাটায় জড়িত।

‘সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের পিডি আছেন, একজন পিডির কত শত শত কোটি টাকা আছে। আমার কাছে মনে হয় এরা মানসিক বিকারগ্রস্ত। এদের চিকিৎসা হওয়া প্রয়োজন।

‘সময় খুব কম’ উল্লেখ করে কবিরুল বলেন, ‘দেশটাকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে না পারি, তাহলে ৩০ লাখ শহীদ আমাদের অভিশাপ দেবে।’

বাংলাদেশের কিছু মানুষ, কিছু কর্মকর্তা, কিছু কর্মচারী বা এমপি কথায় কথায় বিদেশে চেকআপে যান মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘মাউন্ট এলিজাবেথ, ইউরোপ-আমেরিকায় যায়। এর মাধ্যমে আমাদের দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থা নিয়ে জনগণের কাছে অনাস্থা যায়। এ অবস্থা থেকে উত্তরণ না হলে আমরা যতই বড় বাজেট দিই না কেন দেশের জন্য ভালো হবে না।’

সরকারি চাকরির শুরুতে সম্পদের হিসাব নেওয়ার দাবি

বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে বিরোধী দলীয় উপনেতা আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, ‘যে অবস্থা দাঁড়িয়েছে একটি দেশ তাতে চলতে পারে না।
সময় এসেছে দুর্নীতি নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া এবং পুরো ব্যবস্থা নিয়ে একটি পর্যালোচনা করার।’

গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্বে থাকা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে হাজার হাজার কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ এসেছে উল্লেখ করে সরকারি কর্মচারীদের চাকরির শুরুতে সম্পদের হিসাব দেওয়ার বিধান করার দাবিও জানান তিনি।

জাতীয় পার্টির নেতা বলেন, ‘এখন জনগণ দেখছে কীভাবে দুর্নীতি হচ্ছে, প্রতিষ্ঠানগুলো নষ্ট হচ্ছে। সবাই দুর্নীতিবাজ নন। কিন্তু সবার ওপর দায় আসছে। এই দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে।’

কালো টাকা সাদা করার সুযোগের বিরোধিতা করে তিনি বলেন, ‘এই সুযোগ অনৈতিক। অবৈধ আয় যদি ১৫ শতাংশ কর দিয়ে বৈধ করা যায় তাহলে কেন অন্যরা কর দেবেন?’

বাজেটের সমালোচকদের উদ্দেশে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘দেশে নানান ধরনের বিশেষজ্ঞ আছে। সব বিষয়ে বিজ্ঞ বিশেষজ্ঞ। বিশেষ কারণে অজ্ঞ বিশেষজ্ঞ এবং বিশেষ উদ্দেশ্যে বিশেষজ্ঞ।

‘এ বিশেষজ্ঞরা নানা ধরনের মত দেয়। ভারত ও পাকিস্তানে বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি নিয়ে কথা হয়, তার ছিটেফোঁটাও আমাদের দেশের বিশেষজ্ঞরা করেন না। তারা শুধু সমালোচনাই করতে পারেন। কিছু বিশেষজ্ঞ আছেন তারা মনে করেন যদি ভুল ধরা না হয় তাহলে যে তারা বিজ্ঞ তা প্রমাণিত হয় না। এ জন্য তারা ভুল ধরেন।’

‘কেউ পড়ছেন রাজনীতি, তিনি অর্থনীতির বিশেষজ্ঞ। পড়েছেন আইন, তিনি পরিবেশ বিশেষজ্ঞ। পড়েছেন অর্থনীতি, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানও অর্থনীতি, তিনি আবার পরিবেশ-তেল-গ্যাস বিশেষজ্ঞ। এ ধরনের নানা বিশেষজ্ঞ আছে। যখন কোন বাজেট দেওয়া হয় তখন গৎবাঁধা সমালোচনা করে‘, বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।

বিএনপির আমলের বাজেটের সঙ্গে বর্তমান বাজেটের তুলনা করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের বাজেট যখন বাড়ে তার অর্থ দেশের অর্থনীতি মজবুত হচ্ছে, দেশ ভালো হচ্ছে, মানুষ উপকার পাচ্ছে।

‘মূল্যস্ফীতি নিয়ে অনেক কথা হয়। সমগ্র পৃথিবী মূল্যস্ফীতিতে জর্জরিত। সে তুলনায় অনেক দেশের তুলনায় আমাদের কম।’ এ সময় তিনি পাকিস্তান, রাশিয়া, তুরস্ক, মিয়ানমার, ইরানের উদাহরণ দেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এই বাজেটে মূল্যস্ফীতি কমানোর ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। বাজেট বাস্তবায়নের মাধ্যমে কমে আসবে মূল্যস্ফীতি।’

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.net
Website Design By Kidarkar It solutions