শিরোনাম
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজনের পরামর্শ সরাসরি ভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সুপারিশ, বদিউল বললেন, ‘বিবেচনায় রয়েছে’ বান্দরবানে নৌকা বাইচ দিয়ে ক্রীড়া মেলা শুরু রাঙ্গামাটিতে সাফজয়ী পাহাড়ের তিন কন্যাকে উষ্ণ সংবর্ধনা পলাতক পুলিশ সদস্যদের বেতন বন্ধ, মামলার প্রস্তুতি শেখ মুজিব দেশে ফ্যাসিবাদের জনক : মির্জা ফখরুল অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে ডাক্তার দেখাতে গিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীর হাতে পিটুনি নেতাদের বাঁচার উপায় বাতলে দিলেন তারেক রহমান দেশে মাদক ঢুকছে নতুন রুটে, পাচার হচ্ছে ট্রেনেও নামে-বেনামে দেওয়া হয় গায়েবি মামলা,দণ্ডিত বিএনপি নেতাদের নির্বাচনী দুয়ার খুলছে

নীতি সহায়তার ফাঁদে পড়ে ঝুঁকিতে বিপুল বিনিয়োগ

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১৩ জুন, ২০২৪
  • ৭৩ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রির্পোট:- নীতি সহায়তার ফাঁদে পড়ে ঝুঁকিতে পড়েছে বেসরকারি হাই-টেক পার্ক অনুমোদনপ্রাপ্ত পুরনো প্রতিষ্ঠানগুলো। কর অব্যাহতির নীতি সুবিধা পাওয়ায় এরই মধ্যে বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ করেছে তারা। কিন্তু চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে বেসরকারি হাই-টেক পার্ক অনুমোদনপ্রাপ্ত পুরনো প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য কর অব্যাহতির সুবিধা রহিত করার প্রস্তাব করা হয়েছে, যা ইলেকট্রনিকস, সফটওয়্যার, হার্ডওয়্যারসহ বিভিন্ন হাই-টেক পণ্য ও সেবা খাতের ভবিষ্যেক শঙ্কায় ফেলে দিয়েছে।

গত ২৯ মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক জারি করা আয়কর প্রজ্ঞাপন (এসআরও নং-১৫৮ ও ১৬০) অনুযায়ী বেসরকারি হাই-টেক পার্ক ঘোষিত পুরনো কম্পানির জন্য প্রদেয় করহার দাঁড়িয়েছে ২৭.৫ শতাংশ।

এই খাতের যেকোনো নতুন শিল্পপ্রতিষ্ঠানের জন্য যা মাত্র ৫ শতাংশ। আর সরকারি হাই-টেক পার্কে বিনিয়োগ করা প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য সম্পূর্ণ কর অব্যাহতি সুবিধা রয়েছে। হঠাৎ করে বেসরকারি হাই-টেক পার্ক ঘোষিত পুরনো প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য কর অব্যাহতির সুবিধা রহিত করাকে এ খাতের জন্য অশনি সংকেত বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদ ও বিশেষজ্ঞরা। এতে ঝুঁকিতে পড়েছে এই খাতের বিশাল বিনিয়োগ ও বিপুল কর্মসংস্থান।
তাঁদের মতে, এটা গাছে উঠিয়ে টান দিয়ে মই সরিয়ে নেওয়ার মতো।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. ওমর ফারুক বলেন, এটি নীতি ও কর বৈষম্য। একটি সেক্টর মাথা তুলে দাঁড়াতে সময় লাগে। যারা এই সেক্টরকে টিকিয়ে রাখল, পুরনো প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য কর অব্যাহতির সুবিধা রহিত করার মাধ্যমে তাদের অনুৎসাহিত করা হলো।

অবশ্যই এর প্রভাব বিদ্যমান প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর পড়বে, এমনকি পরোক্ষভাবে অন্য সব খাতে ভবিষ্যৎ বিনিয়োগেও এর প্রভাব পড়বে। তিনি বলেন, এই সেক্টরের আরো বিকাশে নীতিসহায়তা খুব জরুরি, যাতে তারা আরো ভালো করতে পারে। একটি সেক্টরকে সরকার চাইলে শক্তিশালী ও বাইরের বিনিয়োগ আনার মাধ্যম হিসেবে দাঁড় করাতে পারে। কয়েক বছরের ব্যবধানে নীতির পরিবর্তন হলে সেই বিষয়গুলো বাধাগ্রস্ত হয়। নীতিসহয়তা আয়করসংক্রান্ত নতুন এই বিধি পুনর্মূল্যায়নের সুযোগ রয়েছে এবং পুনর্মূল্যায়ন প্রয়োজনও।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, বেসরকারি হাই-টেক পার্ক ঘোষিত পুরনো প্রতিষ্ঠানগুলোকে কর অব্যাহতিসহ নানান নীতিসহায়তা দেওয়ার ফলে গত এক দশকে হাই-টেক শিল্প খাতে বাংলাদেশ অভূতপূর্ব সাফল্য দেখিয়েছে। এই খাতে বিপুল বিনিয়োগ হয়েছে। দেশেই গড়ে উঠেছে আন্তর্জাতিকমানের অত্যাধুনিক বিশাল কারখানা, যেখানে কর্মসংস্থান হয়েছে লাখ লাখ মানুষের। বৃহৎ শিল্পপ্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি গড়ে উঠেছে ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ ইন্ডাস্ট্রি। হাই-টেক খাত ঘিরে তৈরি হয়েছে অর্থনৈতিক ইকো-সিস্টেম। এর ফলে একসময়ের পুরোপুরি আমদানিনির্ভর খাতটি সম্পূর্ণ উৎপাদননির্ভর ও রপ্তানিমুখী হয়ে উঠেছে। স্থানীয়ভাবে উৎপাদন করা পণ্য ও সেবা দিয়ে দেশের চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানিও শুরু হয়েছে, যা বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়ের পাশাপাশি রপ্তানি আয়ে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে শুরু করেছে।

অর্থনীতিবিদদের মতে, এমন সময় কর অব্যাহতিসহ বেসরকারি হাই-টেক পার্ক ঘোষিত পুরনো প্রতিষ্ঠানগুলোকে দেওয়া সুবিধা রহিত করলে দেশ আবার উৎপাদননির্ভরতা থেকে আমদানিনির্ভরতায় চলে যেতে পারে। কারণ এর ফলে বেসরকারি হাই-টেক পার্ক ঘোষিত পুরনো বৃহৎ শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর বিপুল বিনিয়োগ ঝুঁকির মুখে পড়বে। তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে ইলেকট্রনিকস খাত। কারণ এই খাতে দেশের মোট বিনিয়োগের প্রায় ৮০ শতাংশ হয়েছে বেসরকারি হাই-টেক পার্কে। পাশাপাশি এই খাতের ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ ইন্ডাস্ট্রিও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান ও অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, হাই-টেক পার্কে দুই ধরনের করহার বৈষম্য সৃষ্টি করেছে। বৈষম্যের কারণে ব্যবসা-বাণিজ্য পরিস্থিতিতে প্রভাব পড়বে। নতুন-পুরনো সবার জন্য করহার যেন যুক্তিসংগত হয়, সেটা দেখা প্রয়োজন। তিনি বলেন, একটি দেশের রিজার্ভ, ট্যাক্স পলিসি দেখেই সেই দেশে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ করেন। দীর্ঘমেয়াদি নীতিসহায়তা দেওয়ার মাধ্যমে সরকার বিনিয়োগকারীদের একটা প্রতিশ্রুতি দেয়। সেই প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী শিল্পোদ্যাক্তারা দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের ঝুঁকি নেন।

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com
Website Design By Kidarkar It solutions