শিরোনাম
যে পর্যবেক্ষণে দেশত্যাগে বাধ্য করা হয় বিচারপতি সিনহাকে ‘কোনো একজন ব্যক্তি দ্বারা কোনো একটি দেশ বা জাতি তৈরি হয়নি’ ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের আলটিমেটাম পদ ছাড়তে রাষ্ট্রপতিকে ২৪ ঘণ্টা সময় দিলেন আন্দোলনকারীরা সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান এখন লন্ডনে, আমিরাতে আরও ৩০০ বাড়ির সন্ধান শাহবাগে না, সভা-সমাবেশ করতে হবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বান্দরবানে ভিক্টরী টাইগার্সের ৫৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন পাহাড়ে ফসলের নায্যমূল্য পাচ্ছেন না প্রান্তিক চাষীরা, কমেছে মিষ্টি কুমড়ার ফলন রাঙ্গামাটিতে সহিংসতার ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের ক্ষতিপূরণ প্রদান রাঙ্গামাটিতে পর্যটক ভ্রমণে নিরুৎসাহিত সময় বৃদ্ধি না করতে প্রদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে — জেলা প্রশাসক বিদায় রাঙ্গামাটি ও রাঙ্গামাটি সরকারী মহিলা কলেজ

ফারাক্কার বিরূপ প্রভাবে মরুভূমিতে পরিণত হচ্ছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল,বিপন্ন শতাধিক নদ-নদী

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় রবিবার, ২৬ মে, ২০২৪
  • ৬৩ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রির্পোট:- মরণ বাঁধ ফারাক্কাসহ আরও অন্যান্য বাঁধ বা ড্যামের মাধ্যমে ভারতের একতরফা পানি প্রত্যাহারের ফলে দেশের প্রায় সব নদ-নদীরই এখন মরণদশা। বিশেষ করে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের নদ-নদী শুকিয়ে মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে। যশোর, খুলনা, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা, মাগুরা, ফরিদপুর, রাজশাহী ও পাবনার ওপর দিয়ে প্রবাহিত অর্ধশতাধিক নদী, হাজার হাজার পুকুর, অসংখ্য খাল বিল বাঁওড় গ্রীষ্মকাল আসার আগেই শুকিয়ে খা খা করে। কপোতাক্ষ, গড়াই, চিত্রা, মাতামহুরি, মধুমতিসহ ওই অঞ্চলের শতাধিক নদ-নদীর বুকে ধু-ধু বালুচর।

আর এসব চর এখন ফসলের বিস্তীর্ণ মাঠ। কোথাও বা নদীর বুকে শিশুরা ক্রিকেট খেলে। নদী মরে যাওয়ায় নদীকেন্দ্রিক জীবন-জীবিকাও মারাত্মক হুমকির মুখে। নদী শুকিয়ে যাওয়ায় হুমকিতে মৎস্য সম্পদ। সেই সাথে এর বিরূপ প্রভাব পড়ছে কৃষি, পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের ওপর। নদী মাতৃক বাংলাদেশে নদী মৃত্যুর সঙ্গে মরছে নদীর ওপর নির্ভরশীল বাংলাদেশও। কৃষিপ্রধান দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে মরুকরণ দেখা দিয়েছে, সেচ চাহিদা মেটাতে হচ্ছে মাটির নিচের পানি তুলে। পদ্মায় পানি না থাকায় কুষ্টিয়ায় দেশের বৃহৎ গঙ্গা-কপোতাক্ষ (জিকে) সেচ প্রকল্প বন্ধ। এতে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ৪ জেলার প্রায় ১ লাখ হেক্টর জমি ফসল উৎপাদন থেকে বঞ্চিত। তাতে বিপদ আরো বাড়ছে। ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নামছে, মাটির গুণাগুণ নষ্ট হচ্ছে। ঘটছে পরিবেশগত বিপর্যয়। নদীভিত্তিক যোগাযোগ ব্যবস্থা হারিয়ে যাচ্ছে। নদীর মাছ হয়ে উঠছে অমূল্য পণ্য। নদীতে মাছ ধরা, নৌকায় নদী পারাপার করা জেলে-মাঝিদের জীবনধারা বাস্তব থেকে হারিয়ে যাচ্ছে।

ফারাক্কার বিরূপ প্রভাবে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। বৃহত্তর যশোরের জেলাগুলো, খুলনার তিনটা জেলা, মেহেরপুর, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, এমনকি ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ এগুলোর ভাগ্য সরাসরি গঙ্গার ওপর নির্ভরশীল। এ ছাড়া বরগুনা, পিরোজপুর, বরিশাল, রাজবাড়ী, মানিকগঞ্জ, এসব জেলার নদীর পানি কমে যাওয়ার কারণে সমুদ্রের পানি ভেতরে ঢুকছে। এতে লবণাক্ত হচ্ছে বিপুল এলাকা। বদলে যাচ্ছে ইকোসিস্টেম। বিশেষজ্ঞদের অভিমত, ৫০ বছর পর সুন্দরবনে একটা সুন্দরীগাছও থাকবে না। সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট ও বরগুনা থেকে মানুষ অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য হবে। কৃষি মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

পানি সম্পদ ও ক্লাইমেট পরিবর্তন বিশেষজ্ঞ ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আইনুন নিশাত বলেন, ফারাক্কা বাঁধসহ অন্যান্য বাঁধ চালুর মাধ্যমে ভারত পানি সম্পদকে মারণ অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করছে। এ বাঁধের মাধ্যমে বাংলাদেশের উত্তর, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ৬ কোটিরও বেশি মানুষকে ধুঁকে ধুঁকে মারছে। বর্ষা মওসুমে ফারাক্কা বাঁধ খুলে দিয়ে বাংলাদেশকে ভাসিয়ে দেয়। আর শুষ্ক মৌসুমে পানি আটকে দিয়ে পানিশূন্য করে এদেশকে মরুভূমিতে পরিণত করে। ফারাক্কা বাঁধের কারণেই দেশের উত্তর, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সকল নদী ধ্বংসের মুখে। ভারতের সাথে পানির এ সমস্যা বললেই সমাধান করা সম্ভব নয়। এটা সমাধান করতে হলে রাজনৈতিকভাবে করতে হবে।

দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের নদীর মরণদশা নিয়ে আমাদের সংবাদদাতাদের পাঠানো রিপোর্ট নিম্নে তুলে ধরা হলো।
কুষ্টিয়া থেকে বিশেষ সংবাদদাতা এস এম আলী আহসান পান্না জানান, ভারতের ফারাক্কা বাঁধের কারণে কুষ্টিয়ায় পদ্মা-গড়াইসহ পাঁচ নদী পানিশূন্য হয়ে পড়েছে। পানি না পেয়ে শুকিয়ে গেছে পদ্মাসহ এর চারটি শাখা নদী। ফলে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কৃষি, জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশের ওপর। পানি সঙ্কটে কৃষিকাজ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। বন্ধ হয়ে গেছে দেশের বৃহত্তম গঙ্গা-কপোতাক্ষ সেচ প্রকল্প।

পদ্মায় পানি না থাকায় শত কোটি টাকা ব্যয়ে কয়েক দফা গড়াই নদী খনন করা হলেও তেমন কোনও সুফল আসেনি। বর্ষা গেলেই চরের বালি আবার নদীতে নেমে গিয়ে ভরাট হচ্ছে নদী। সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, রুগ্ন পদ্মা নদীর হার্ডিঞ্জ ব্রিজের পূর্ব ও পশ্চিম পাড়সহ গড়াই নদীতে জেগে উঠেছে অসংখ্য ডুবোচর। শুষ্ক মৌসুমের শুরুতেই এসব চরে কৃষকরা ধানসহ বিভিন্ন ফসল আবাদ করছেন।

এক সময়ের প্রমত্তা পদ্মার তীরবর্তী বেশির ভাগ অঞ্চল একেবারেই শুকিয়ে গেছে। শুষ্ক মৌসুমে গঙ্গা নদীর পানি ভাগাভাগির লক্ষ্যে ১৯৯৬ সালের ১২ ডিসেম্বর দিল্লিতে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে গঙ্গা নদীর পানি ভাগাভাগি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ভারতের প্রধানমন্ত্রী এইচ ডি দেবেগৗড়া ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওই ঐতিহাসিক চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, চুক্তির ২৮ বছর পার হলেও কখনই হিস্যা অনুযায়ী পানি পায়নি বাংলাদেশ। খটখটে পদ্মায় হার্ডিঞ্জ ব্রিজের ১৫টি গার্ডারের প্রায় অর্ধেকই এখন দাঁড়িয়ে আছে ধু-ধু বালুচরে।

এদিকে শুষ্ক মৌসুমে পানির অভাবে বন্ধ হয়ে যায় দেশের বৃহত্তম গঙ্গা-কপোতাক্ষ সেচ প্রকল্প। প্রকল্পের আওতায় প্রায় ১ লাখ একর জমিতে সেচ সরবরাহ করার কথা থাকলেও পানির অভাবে তা সম্ভব হচ্ছে না। জেলে-কৃষকসহ এ অঞ্চলের লাখ লাখ মানুষের জীবন-জীবিকা এবং উত্তর-দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলের লাখো মানুষের ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে পড়েছে। বিস্তীর্ণ এ এলাকায় মরুকরণ প্রক্রিয়াও তীব্রতর হচ্ছে।

বিঘা প্রতি কৃষকেরা মাত্র ২০০ টাকার বিনিময়ে সেচ প্রকল্পের (জিকে) মাধ্যমে তারা পানি পেতেন। সেচ প্রকল্পের (জিকে) মাধ্যমে পানি না পাওয়ায় বর্তমানে শ্যালো মেশিনের সাহায্যে সেচ বাবদ প্রতি বিঘায় খরচ পড়ছে প্রায় ৭ হাজার টাকা। স্বল্প খরচের সেচব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এখন ৩৫ গুণ বেশি খরচ করে শ্যালো মেশিনের সাহায্যে ধানের জমিতে সেচ দিচ্ছেন কৃষকরা। কতদিন পর থেকে আবার ধানের জমিতে সেচ প্রকল্পের পানি পাবেন তার কোনো সঠিক তথ্য দিতে পারছে না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

ভেড়ামারায় গঙ্গা-কপোতাক্ষ (জিকে) প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, দুটি পাম্প আগে থেকেই নষ্ট ছিল। ৩য় পাম্পটি দিয়ে ৩১ জানুয়ারিতে ক্যানেলে পানি সরবরাহ শুরু হয়। কিন্তু কারিগরি ত্রুটির কারণে ১৯ ফেব্রুয়ারি ওই পাম্পটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর জাপানের ইবারা করপোরেশনের সাথে যোগাযোগ করে পাম্পটি সচল করা হয়েছে কিন্তু ইনটেক চ্যানেলে স্বাভাবিক পানির স্তর না থাকায় সেচ কার্যক্রম চালু করা যাচ্ছে না।

কুষ্টিয়া-৩ (ভেড়ামারা-মিরপুর) আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব কামারুল আরেফিন বলেন, গঙ্গা-কপোতাক্ষ (জিকে) সেচ প্রকল্পের পানি সংকট নিয়ে জাতীয় সংসদে কথা বলেছি। সেচ প্রকল্পের জন্য ১২শ কোটি ও জিকে প্রকল্পের সার্বিক উন্নয়নের জন্য ১২শ কোটি মোট ২৪শ কোটি টাকার একটি প্রকল্প পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে যাচাই বাছাই-এর কাজ চলছে। খুব তাড়াতাড়ি এ প্রকল্প একনেকে পাস হবে বলে আমি আশাবাদী।

যশোর, ‘বহু দেশ দেখিয়াছি বহু নদ দলে / কিন্তু এ স্নেহের তৃষ্ণা মেটে কার জলে / দুগ্ধস্রোতরূপী তুমি মাতৃভূমি স্তনে।’ কবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের শৈশবের সেই প্রিয় নদ কপোতাক্ষ এখন এক মরা খাল। শুধু কপোতাক্ষ নদ নয় যশোরের বিল-ঝিল, পুকুর-নদী সব শুকিয়ে এখন খা খা করে। এর ফলে পানির স্তর অনেক নিচে নেমে গেছে। পানি উঠছে না এলাকার বেশির ভাগ নলকূপেও। উঠলেও ফোঁটা ফোঁটা পানিতে কলসি ভরতে সময় লাগছে। শুষ্ক মৌসুমের আগেই পানির জন্য হাহাকার শুরু হয়ে যায়।

এই দুর্বিষহ সময়ে কপোতাক্ষ নদের খনন শুরু হলেও এ নিয়ে চলছে নানান অনিয়ম। যশোরের কপোতাক্ষ নদের নেই কোন সীমানা পিলার। ফলে প্রায় শত কোটি টাকা ব্যয়ে খনন কাজ করলেও দখল মুক্ত হয়নি নদের শতশত একর জমি। সীমানা পিলার না থাকায় খননকৃত মাটি-কাঁদা ফেলা হয়েছে নদের মধ্যেই। ফলে নদের প্লাবনভূমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কপোতাক্ষ নদ খনন কার্যক্রম দীর্ঘদিন পর শুরু হলেও দেখতে মনে হচ্ছে খাল খনন কাজ চলছে। নদ খননের পূর্বে নদের পানি নিষ্কাশনের কথা থাকলেও তা করা হচ্ছে না। খননস্থলে কার্যাদেশের নোটিশ বোর্ড টানানো না থাকায় জনমনে সন্দেহ দেখা দিয়েছে। তবে নদ খননে কপোতাক্ষের পাড়ের মানুষের মাঝে স্বস্তি ফিরেছে।

সরেজমিন চৌগাছা পৌর শহরের চৌগাছা-মহেশপুর সড়কে ব্রীজঘাট এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে গেলে এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, নদের জমির সীমানা পিলার না থাকায় কপোতাক্ষ খননে নানা অনিয়ম হয়েছে। নদ খনন করে সরু খাল কাটায় এক শ্রেণির অসাধু ব্যক্তি নদের জমি দখল করে বসতবাড়ী ও মার্কেট নির্মাণ করে চলেছেন বলে কপোতাক্ষ পাড়ের অসংখ্য মানুষের অভিযোগ। চৌগাছা এলাকায় নদের জমিতে বিভিন্ন স্থাপনা রেখেই নদ খনন করা হয়েছে।

খুলনা, ভারতের একতরফা পানি প্রত্যাহার, নদীর তীর অবৈধ দখল, নাব্যতা কমে যাওয়া এবং ক্লাইমেট পরিবর্তনের কারণে এ অঞ্চলের প্রায় ৭৮টি নদী এখন মৃতপ্রায়। ফলে এ অঞ্চলের নদীকেন্দ্রিক অর্থনীতি অনেকটা থমকে গেছে। খুলনার ৫ নং লঞ্চঘাট। দিনে বা রাতে, সব সময় সেখানে জনাকীর্ণ থাকতো। মানুষের হাঁক-ডাক আর লঞ্চের সাইরেন যেন এ এলাকার মানুষের ছিল নিত্য সঙ্গী। এঘাট থেকে ২০টির বেশি রুটে যাত্রীবাহী লঞ্চ, পণ্যবাহী জাহাজ ও কার্গোসহ বিভিন্ন ধরনের নৌযান চলাচল করত। এখান থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যেত রকেট সার্ভিসও। এ ঘাটে কমেছে হাঁকডাক। নেই মানুষের কোলাহল। এখান থেকে বর্তমানে মাত্র ৪-৫ রুটে নৌযান চলাচল করছে।

সরেজমিন দেখা যায়, খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার শোলমারি নদীতে চর পড়ে এখন মৃতপ্রায়। অথচ বছর পাঁচেক আগেও এই নদী দিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থান বড় নৌযানে পাট, সার, সবজিসহ বিভিন্ন পণ্য খুলনা শহরে আসত। আবার খুলনা থেকেও বিভিন্ন স্থানে যেত। শুধু এই নদী নয়, নাব্যতা হারিয়ে অস্তিত্ব সংকটের মুখে পড়েছে খুলনার অধিকাংশ নদ-নদী।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) খুলনার সূত্রে জানাযায়, চলাচলের উপযোগী না হওয়ায় খুলনা থেকে এমন অন্তত ১৫টি রুটে বাণিজ্যিক নৌ-যান চলছে না। খুলনা বিভাগের ৭৮টি নদীর মধ্যে খুলনার হাড়িয়া, ময়ূর, হামকুড়া, কচা, শেলা ও বাগেরহাটের ভোলা, হাওড়া, সড়া, যমুনা, রামসাগর, সাতক্ষীরার সোনাই, কপোতাক্ষ, বেতনা, কাকশিয়ালী, মরিচ্চাপ, যমুনা, বলুয়া, গলঘেষিয়া, গুতিয়াখালী, সাপমারা নদী, কুষ্টিয়ার টেকাসহ ২৫টি নদী এরই মধ্যে মরে গেছে। এ ছাড়াও ১০টি নদী শুকিয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে।

নড়াইল, ফারাক্কার মরণ ছোবলে নদীর তলদেশে পলি জমে ভরাট হওয়ায় নাব্যতা ও পানির গভীরতা কমে ঝুঁকিতে পড়েছে নড়াইল শহর চিত্রা ও নবগঙ্গা নদী। এক সময়ের খরস্রোতা নদী এখন নাব্য হারিয়ে খালের মতো রূপ ধারণ করেছে। একসময় নদীতে লঞ্চ, স্টিমার, জাহাজ, ট্রলার ও বড় বড় নৌকা চলতো। এখন শুকিয়ে সেই নদী সরু খাল হয়ে গেছে। নড়াইল শহরের মধ্যে দিয়ে বয়ে যাওয়া মধুমতি নদীটির ঐতিহ্য শত শত বছরের। কালের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে। তাছাড়া নবগঙ্গা নদীটিরও বেহাল দশা। এটি মিঠাপুর, নলদি হয়ে লোহাগড়ার উপর দিয়ে বহমান। ৪০ বছর আগে এই নদীতে লঞ্চ, স্টিমার, জাহাজ, ট্রলার ও বড় বড় নৌকা চলতো। এখন তা ইতিহাস। নাব্যতা হারিয়ে শুকিয়ে তা সরু হয়ে গেছে। বিভিন্ন স্থানে পলি জমে ভরাট হয়ে গেছে। নদী খনন না করা হলে মানচিত্র থেকে হারিয়ে যেতে পারে এই নদী। প্রভাবশালীদের দখল আর খননের কোনো উদ্যোগ না থাকায় মরা নদীতে পরিণত হচ্ছে চিত্রা নদী। বিভিন্ন স্থানে বালুচরে পরিণত হয়েছে।ইনকিলাব

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.net
Website Design By Kidarkar It solutions