শিরোনাম
গণমাধ্যমকর্মীরা স্বাধীন ও স্বচ্ছ হতে হবে- ওয়াদুদ ভূইয়া আগামীকাল সংবর্ধিত হচ্ছে সাফজয়ী পাহাড়ের ৫নারী ফুটবলার যুক্তরাষ্ট্রে আদানির বিরুদ্ধে মামলা, বিদ্যুৎ চুক্তিতে সুবিধা পেতে পারে বাংলাদেশ সিইসি ও নির্বাচন কমিশনারদের শপথ রোববার দুর্নীতি প্রতিরোধে সাবেক লে. জেনারেল মতিউর রহমানের মত কর্মকর্তার প্রয়োজন,আ’লীগ সরকারের দুর্নীতিবাজদের রক্ষায় মরিয়া একাধিক চক্র গুমের সঙ্গে জড়িতরা রাজনীতিতে ফিরতে পারবে না : প্রেস সচিব খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাবের নবগঠিত কমিটি’র সভাপতি তরুণ কুমার ভট্টাচার্য, সম্পাদক এইচ এম প্রফুল্ল ও সাংগঠনিক দিদারুল আলম নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে আইসিসির গ্রেফতারি পরোয়ানা ৫ দেশে গমনেচ্ছু বাংলাদেশিদের জন্য সতর্কতা সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা নিয়ে ড. ইউনূসের বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছে আরএসএফ

রাঙ্গামাটিতে করাতকলের বর্জ্যে কাপ্তাই হ্রদে বাড়ছে ভরাট-দূষণ

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় রবিবার, ২৬ মে, ২০২৪
  • ৯২ দেখা হয়েছে

রাঙ্গামাটি:- রাঙ্গামাটির কাপ্তাই হ্রদ ঘেঁষে গড়ে উঠেছে অর্ধশতাধিক করাতকল। বিশেষ করে নানিয়ারচর, সদর উপজেলা, লংগদু, বাঘাইছড়ি, জুরাছড়ি, বিলাইছড়ি, বরকল ও কাপ্তাই উপজেলার করাতকলগুলো হ্রদ ঘেঁষে। এসব করাতকলে গাছের অংশ বিশেষ ছাঁটাই করে মসৃণ করার ফলে যেসব বর্জ্য তৈরি হয় সেগুলো ফেলে রাখা হচ্ছে পাশেই। এতে একদিকে বর্জ্যে কাপ্তাই হ্রদ ভরাট হচ্ছে; আরেক দিকে গাছের বাকল পানিতে মিশে দূষণ বাড়ছে।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রায় এক দশক আগেও রান্নার কাজে এসব কাঠ জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হতো। এখন সিলিন্ডার গ্যাসে রান্নার ফলে কাঠের ব্যবহার কমে আসছে। বর্জ্য জাতীয় গাছ ব্যবস্থাপনায় সংশ্লিষ্টদের কোনো নির্দেশনা না থাকায় যত্রতত্র সেটা ফেলা হচ্ছে কাপ্তাই হ্রদে। হ্রদ ভরাট ও পানির দূষণ বাড়লেও এ ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি।

পরিবেশকর্মীরা বলছেন, পাহাড়ের অর্থনীতিকে চাঙ্গা রেখেছে গাছ ও পর্যটন শিল্প। গাছকেন্দ্রিক এসব করাতকল গড়ে উঠলেও বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কোনো উদ্যোগ নেই। গাছের বর্জ্য ও কষ পানিতে মিশে হ্রদের পানি দূষণ করছে। পানি বাড়লে করাতকলের আশপাশে হ্রদের পানি কালচে রঙ ধারণ করছে। এটা হ্রদের মাছের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। এ ব্যাপারে বন বিভাগ ও প্রশাসনের পদক্ষেপ নেয়া জরুরি।

রাঙ্গামাটি জেলায় কয়টি করাতকল রয়েছে; সেটির সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে পুরো জেলায় এক থেকে দেড় শতাধিক করাতকল রয়েছে। এর মধ্যে অর্ধশতাধিক কাপ্তাই হ্রদ ঘেঁষে। বিশেষ করে নানিয়ারচর, সদর উপজেলা, লংগদু, বাঘাইছড়ি, জুরাছড়ি, বিলাইছড়ি, বরকল, কাপ্তাই উপজেলার করাতকলগুলো হ্রদঘেঁষে। শহরের রিজার্ভ বাজারে চারটি, তবলছড়িতে পাঁচটি, বনরূপায় সাতটিসহ আসামবস্তি ছাড়াও শহরের মধ্যেই ২০-২২টি করাতকল রয়েছে; সেগুলোর সবই কাপ্তাই হ্রদের পাশে। করাতকলগুলোর বর্জ্য প্রভাব ফেলছে সরাসরি কাপ্তাই হ্রদে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন করাতকল মালিক জানিয়েছেন, বন বিভাগ ও প্রশাসনের অনুমতি নিয়েই তারা করাতকল স্থাপন করেছেন কিন্তু গাছ চিরাইয়ের অংশ ফেলা বা ব্যবস্থাপনা নিয়ে কোনো কর্তৃপক্ষের নির্দেশনার বিষয়টি তাদেরও জানা নেই। আগে রান্নার কাজে জ্বালানি হিসেবে চিরাই গাছের বর্জ্য ব্যবহৃত হলেও এখন কমে গেছে। এ কারণে গাছের বর্জ্য করাতকলের আশপাশের অংশেই ফেলা হচ্ছে। গাছ পরিবহনের সুবিধার্থে কাপ্তাই হ্রদ ঘেঁষে এসব করাতকল গড়ে উঠেছে। এতে হ্রদের কিছু অংশ ভরাট ও পানির দূষণ ঘটাচ্ছে।

দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি (দুপ্রক) রাঙ্গামাটি জেলা কমিটির সভাপতি মো. ওমর ফারুক বলেন, ‘পরিবহন ও বাজার ব্যবস্থাপনার সুবিধার জন্য করাতকলগুলো কাপ্তাই হ্রদ ঘেঁষেই করা হয়ে থাকে। কাপ্তাই হ্রদে যখন পানি থাকে, তখন নৌপথে ইঞ্জিনচালিত নৌকা বা বোট দিয়ে এসব গাছ করাতকলে আনা হয়। গাছের ব্যবসা রাঙ্গামাটির গুরুত্বপূর্ণ একটি অর্থনৈতিক দিক। দীর্ঘদিন করাতকলের বর্জ্যগুলো ফেলা হচ্ছে হ্রদের মধ্যে। এতে হ্রদ ভরাটের পাশাশাশি পানির দূষণ বেড়ে যাচ্ছে। গাছের কষ পানি দূষিত করে আসছে। এ ব্যাপারে প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন।’

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর রাঙ্গামাটির নির্বাহী প্রকৌশলী পরাগ বড়ুয়া বলেন, ‘কাপ্তাই হ্রদ রাঙ্গামাটির একটা বড় সম্পদ। কিন্তু ক্রমাগত হ্রদের পানির দূষণ বাড়ার ফলে মৎস্যসম্পদ ও ব্যবহার্য পানির ক্ষেত্রে বিরূপ প্রভাব ফেলছে। হ্রদ এলাকার ঘরবাড়ি ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা ভালো নয়। সেফটিক ট্যাংকের ময়লা যাচ্ছে সরাসরি কাপ্তাই হ্রদে; এসব কারণে হ্রদের পানির মান কমছে। এর মধ্যে গাছের বর্জ্য ব্যবস্থাপনাও বিরূপ প্রভাব ফেলছে।’

এ বিষয়ে জানতে পার্বত্য চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) ড. জাহিদুর রহমান মিয়ার মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক গঙ্গা প্রসাদ চাকমা বলেন, ‘রাঙ্গামাটি শহর এলাকায় যে করাতকলগুলো রয়েছে, সেগুলো দক্ষিণ বন বিভাগের অধীন। করাতকল চালুর ক্ষেত্রে বন বিভাগ ও প্রশাসনের অনুমতি নিতে হয়। তবে করাতকলগুলোর বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বিষয়ে আমাদের কোনো নির্দেশনা নেই।’

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান বলেন, ‘করাতকলের এসব বর্জ্য তো রান্নার কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে। এ বিষয় নিয়ে কী করা যায় বিষয়টি আমরা ভেবে দেখব।’বণিক বার্তা

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com
Website Design By Kidarkar It solutions