ডেস্ক রির্পোট:- গত ১৫ই মে রাত আনুমানিক আড়াইটার দিকে ডাকাতির উদ্দেশ্যে নারায়ণগঞ্জের আড়াই হাজারে একটি বাড়ির জানালা ভেঙে ঘরের ভেতরে প্রবেশ করে আব্দুল্লাহ ও মতিন। এ সময় বাড়িটির মালিক মা ও তার মেয়ের ঘুম ভেঙে গেলে তারা ভয়ে চিৎকার শুরু করেন। ওই সময় ডাকাত আব্দুল্লাহ ও মতিন অস্ত্রের মুখে তাদেরকে জিম্মি করে ফেলে। এরপর তারা ঘরের দরজা খুলে দিলে চাঁন মিয়া ও আয়নালসহ ডাকাতদলের অন্যান্য সহযোগীরা দেশীয় অস্ত্রসহ ঘরে প্রবেশ করে। সেখানে ভয়ভীতি দেখিয়ে মা-মেয়েসহ ঘরে উপস্থিত সবার হাত, পা ও মুখ বেঁধে ফেলে তারা। তখন ঘরের ভেতর মূল্যবান জিনিসপত্র না পেয়ে ক্ষোভে মেয়েটির হাত-পা বাঁধা অবস্থায় বাড়ির একটি ফাঁকা ঘরে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে তার মুখ ওড়না দিয়ে পেঁচিয়ে আব্দুল্লাহ, মতিন, চাঁন মিয়া ও আয়নাল তাকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। ওই ঘটনা কাউকে জানালে ভুক্তভোগী ও তার পরিবারকে হত্যার হুমকি দিয়ে পালিয়ে যায় তারা। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবার থানায় মামলা দায়ের করলে আত্মগোপনে চলে যায় ওই ডাকাতদলের সদস্যরা। পরে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
এ সময় তাদের কাছ থেকে ভুক্তভোগীর মোবাইলসহ ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত একটি দেশীয় তৈরি ওয়ান শুটার গান, একটি শাবল, একটি দা, দু’টি রামদা ও ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত সিএনজি জব্দ করা হয়েছে। গতকাল দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন র্যাব’র লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার আরাফাত ইসলাম। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তাররা দলবেঁধে ধর্ষণের সঙ্গে সম্পৃক্ততার বিষয়ে তথ্য দিয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছে র্যাব। র্যাব’র কমান্ডার আরাফাত ইসলাম বলেন, গ্রেপ্তারকৃতরা সংঘবদ্ধ একটি ডাকাত চক্র, এ চক্রে ১০/১২ জন সদস্য রয়েছে। গ্রেপ্তার আব্দুল্লাহর নেতৃত্বে তারা ১/২ বছর ধরে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় ডাকাতি করে আসছিল। আব্দুল্লাহ এই ডাকাত চক্রের মূলহোতা। সে আগে একটি স্পিনিং মিলে চাকরি করতো। সে সময়ই ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে সে। পরবর্তীতে চাকরি ছেড়ে ডাকাত চক্র গড়ে তুলেছে। সে ডাকাতি পেশাকে আড়াল করার জন্য ছদ্মবেশে বিভিন্ন সময় নারায়ণগঞ্জের ভূলতা-গাউসিয়া এলাকার বাসের হেলপার ও রিকশা চালাতো। আর আব্দুল্লাহর অন্যতম সহযোগী মতিন। সেও ডাকাতি পেশাকে আড়াল করার জন্য ছদ্মবেশে সিএনজি চালাতো। সিএনজি চালিয়ে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় ডাকাতির জন্য টার্গেট নির্ধারণ করে ডাকাতির পরিকল্পনা আব্দুল্লাহকে জানাতো। এছাড়াও সে তার সিএনজি দিয়ে ডাকাতির আগে চক্রের অন্যান্য সদস্যদেরকে ডাকাতির জন্য নির্ধারিত স্থানে নিয়ে যেতো এবং ডাকাতি শেষে চক্রের সদস্যদের সুবিধাজনক স্থানে দ্রুত পৌঁছে দিতো। তার বিরুদ্ধে নরসিংদীর মাধবদী থানায় অস্ত্র, ডাকাতি ও বিস্ফোরক দ্রব্য সংক্রান্ত ৩টি মামলা রয়েছে। র্যাব মুখপাত্র বলেছেন, গ্রেপ্তার চাঁন মিয়া ও আয়নাল ডাকাত চক্রের অন্যতম সদস্য। তারা ডাকাতি পেশাকে আড়াল করার জন্য ছদ্মবেশে বাস ও সিএনজি চালাতো। তারা গ্রেপ্তার আব্দুল্লাহর নেতৃত্বে ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করতো।