শিরোনাম
বাণিজ্য সম্ভাবনায় ‘সেভেন সিস্টার্স’ দুবাইয়ে বিপু-কাজলের ২০০ কোটির দুই ভিলা পাচারের ১৭ লাখ কোটি ফেরাবে কে,প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দিকে তাকিয়ে সবাই শিক্ষার্থীদের পরিকল্পিতভাবে বিতর্কিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে ঢাকা-দিল্লি পররাষ্ট্রসচিব বৈঠক ডিসেম্বরে, শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ নিয়ে আলোচনা হবে কি এবার মারা গেলেন পরীমণির প্রথম সিনেমার পরিচালক জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজনের পরামর্শ সরাসরি ভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সুপারিশ, বদিউল বললেন, ‘বিবেচনায় রয়েছে’ বান্দরবানে নৌকা বাইচ দিয়ে ক্রীড়া মেলা শুরু রাঙ্গামাটিতে সাফজয়ী পাহাড়ের তিন কন্যাকে উষ্ণ সংবর্ধনা

দেশে বিরল রোগ উইলসন্সের দুটি নতুন জিনগত রূপান্তর শনাক্ত

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় বুধবার, ১৫ মে, ২০২৪
  • ৮৩ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রির্পোট:- দেশে উইলসন্স্স ডিজিজের নতুন দুটি মিউটেশন (রূপান্তর) শনাক্ত হয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) নিউরোলজি বিভাগ এবং অ্যানাটমি বিভাগের যৌথ গবেষণায় মিউটেশনের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। গবেষণার ফলাফল প্রকাশ উপলক্ষে মঙ্গলবার (১৪ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ডা. মিল্টন হলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানানো হয়।

গবেষকেরা বলেন, উইলসন্স ডিজিজ একটি জেনেটিক ডিসঅর্ডার (জিনগত সমস্যা)। এতে শরীরে অতিরিক্ত কপার জমা হয়। লক্ষণগুলো সাধারণত মস্তিষ্ক এবং লিভারের (যকৃৎ) সঙ্গে সম্পর্কিত। লিভার সম্পর্কিত উপসর্গগুলোর মধ্যে রয়েছে—বমি, দুর্বলতা, পেটে তরল জমা হওয়া, পা ফুলে যাওয়া, ত্বক হলুদ হয়ে যাওয়া এবং চুলকানি। মস্তিষ্ক সম্পর্কিত লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে—কাঁপুনি, পেশি শক্ত হওয়া, কথা বলতে সমস্যা, ব্যক্তিত্বের পরিবর্তন, উদ্বেগ এবং মনোবিকার ইত্যাদি।

টার্গেট জিন থেরাপির মাধ্যমে বিএসএমএমইউতে রোগটির চিকিৎসা হয় বলে অনুষ্ঠানে জানানো হয়।

নিউরোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মনিরুজ্জামান ভূঁইয়া এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ডা. দীন মো. নূরুল হক। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. মনিরুজ্জামান খান, মেডিসিন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. আবু নাসার রিজভী, বেসিক সায়েন্স অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. আহমেদ আবু সালেহ্।

গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন করেন অ্যানাটমি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. লায়লা আনজুমান বানু ও নিউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. আহসান হাবিব হেলাল।

প্রধান গবেষক অধ্যাপক ডা. লায়লা আনজুমান বানু জানান, গবেষণায় মোট রোগীর সংখ্যা ছিল ৫০ জন, এর মধ্যে পুরুষ ২৮ জন এবং নারী ২২ জন। এর মধ্যে ৬ জন রোগীর মধ্যে ৩টি মিউটেশন পাওয়া গেছে, যার মধ্যে ২টিই বাংলাদেশে নতুন। টার্গেট জিন থেরাপির মাধ্যমে তাঁদের চিকিৎসা চলছে।

বাংলাদেশের প্রতি ৩০ হাজার জনে একজন উইলসন্স ডিজিজে আক্রান্ত। সে হিসাবে দেশে এখন এ ধরনের রোগীর সংখ্যা ৬ হাজারের মতো। বিএসএমএমইউতে এ পর্যন্ত ২০০ জনের চিকিৎসা হয়েছে। কারও মধ্যে এই রোগটি শনাক্ত হলে তাঁকে আজীবন চিকিৎসা নিতে হয়। চিকিৎসা বন্ধ করলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। পরিবারের একজনের রোগটি শনাক্ত হলে অন্যদেরও দ্রুত পরীক্ষা করার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।

নিউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. আহসান হাবিব হেলাল বলেন, এই গবেষণায় নিউরোলজি বিভাগের মুভমেন্ট ডিসঅর্ডার ক্লিনিক এবং অন্তঃবিভাগ থেকে রোগীদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। রোগী থেকে ৩ মিলি লিটার রক্ত সংগ্রহ করে অ্যানাটমি বিভাগের জেনেটিক ল্যাবে পাঠানো হয়। রোগীদের বয়সসীমা ছিল ৯ থেকে ৬০ বছরের ভেতরে। অধিকাংশ রোগী পাওয়া গেছে ৯ থেকে ৩০ বছরের ভেতর এবং এর সংখ্যা ছিল ৪৩ জন। গবেষণায় অংশ নেওয়া প্রথম প্রজন্মের আত্মীয়দের মধ্যে আক্রান্ত ছিলেন ৭ জন।

দেখা গেছে, এই রোগের কারণে স্কুল ছাড়তে হয়েছে ২৬টি শিশুকে। ডা. আহসান হাবিব বলেন, ‘আমরা যেই রোগীগুলো পেয়েছি, তাঁদের ঢোক গিলতে সমস্যা ছিল ২৭ জনের, হাত পায়ের কম্পন ছিল ২৮ জনের, হাত–পা শক্ত হয়ে যাওয়া ছিল ২১ জনের, অনিয়ন্ত্রিত ঘাড় মোচড়ানো সমস্যা ছিল ১৪ জনের, অনিয়ন্ত্রিত হাত পা মোচড়ানোর সমস্যা ছিল ১১ জনের, নৃত্যের মতো অনিয়ন্ত্রিত নড়াচড়া ছিল ৪ জনের।’

এই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বলেন, ‘বাবা–মা দুজনেরই যদি এই রোগের জিন থাকে, তাহলে সন্তানও এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকে।’

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ডা. দীন মো. নূরুল হক বলেন, মানবদেহের জন্য কপারের যেমন গুরুত্ব রয়েছে আবার অতিরিক্ত কপার শরীরের জন্য ক্ষতিকর। উইলসন্স্স ডিজিজের মতো রোগ এড়াতে রক্তের সম্পর্কের আত্মীয়দের মধ্যে বিয়ে না করাই উত্তম। উইলসন্স ডিজিজটি মূলত উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত। এটি নির্দিষ্ট জিনের পরিবর্তনের ফলে ঘটে যা একটি প্রোটিন তৈরির মাধ্যমে শরীর থেকে অতিরিক্ত তামা অপসারণ করে। এর ফলে শরীরে বিশেষত মস্তিষ্ক, যকৃৎ এবং চোখে তামা জমা হয়। অতিরিক্ত তামা দ্বারা সৃষ্ট ক্ষতিই উইলসন্স ডিজিজের উপসর্গগুলো তৈরি করে।

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com
Website Design By Kidarkar It solutions