ডেস্ক রির্পোট:- ‘একবার পরীক্ষায় কয়েকটা বিষয়ে আমি ফেল করেছিলাম; কিন্তু আমার বন্ধু সব বিষয়েই পাস করে। এখন সে মাইক্রোসফটের একজন ইঞ্জিনিয়ার আর আমি মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা (বিল গেটস)।’ মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতার এই উক্তিই প্রমাণ দেয় পরীক্ষার খারাপ ফল মানেই সব শেষ নয়। ক্লাসের ব্যাক বেঞ্চারারা কর্মজীবনে ভাল সাফল্য দেখায় এমন অসংখ্য প্রমাণ রয়েছে। এসএসসি, দাখিল ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ হয়েছে। রেজাল্ট প্রকাশের পর একদিকে ভাল রেজাল্ট করা শিক্ষার্থীদের মধ্যে আনন্দ, উল্লাস, পত্রিকার পাতায় জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীদের উল্লাসের ছবি ছাপা হয়েছে।
অন্যদিকে বেদনার চিত্র। পরীক্ষায় যারা পাস করতে পারেননি তারা ‘সব শেষ’ মানসিকতায় হতাশ। ফেল করা ছাত্রছাত্রীদের চেয়ে বেশি হতাশ তাদের বাবা-মা-ভাই-বোন পরিবার পরিজন। পরিবারের গালমন্দ এবং নানা কটূক্তির কারণে এই ফেল করা ছাত্রছাত্রীদের কেউ কেউ হতাশা, গ্লানি, ক্ষোভে আত্মহত্যা করছেন। সংবাদমাধ্যমে খবর এসেছে এখন পর্যন্ত ৮ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন। এদের মধ্যে ৬ জন ছাত্রী ও ২ জন ছাত্র। পাবলিক পরীক্ষায় সাফল্য পেতে ব্যর্থ হয়ে শিক্ষার্থীদের এই আত্মহত্যার ট্র্যাজেডির দায় কার? শিক্ষার্থীরাই কি শুধু দায়ী? সমাজ, শিক্ষা ব্যবস্থা কি এর দায় এড়াতে পারে? পরীক্ষায় ফেল করা শিক্ষার্থীদের পিছনে কেউ দাঁড়ায় না। পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পর সাফল্য পাওয়া শিক্ষার্থীদের নিয়ে যত হইহুল্লোড় করা হচ্ছে; খারাপ ফলাফল করা ছাত্রছাত্রীরা কেন ফেল করলো তা নিয়ে কি কোনো গবেষণা হয়েছে?
শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার কারণ হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর মোহাম্মদ মাহবুব কাইসার বলেন, এখানে একজন শিক্ষার্থী যতই জানুক না কেন সে যদি জিপিএ ফাইভ না পায় তবে তার কোন মূল্য থাকেনা। পিতা মাতা সন্তানদের একটা প্রতিযোগিতার মধ্যে ঠেলে দেয়, এবং সন্তানরা সেই প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে না পারলে ভাবে মা-বাবাকে মুখ দেখাবো কীভাবে! এই যে পারিবারিক সলিডারিটি বা ইন্টিগ্রেশন- এটার অভাবে শিক্ষার্থীরা এই পথ বেছে নেয়। এছাড়াও আমাদের সমাজে এক ধরনের মনস্তাত্ত্বিক পরিবর্তন ঘটে গেছে। পড়াশুনা রেজাল্ট, এর বাইরে অনেক তুচ্ছ কারণে এ যুগের বাচ্চারা আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। শিক্ষার্থীদের বুঝাতে হবে যে তুমি যদি মোটামুটি ভাবে সততার সাথে জীবন যাপন করো তাহলে তুমি আজ না হয় কাল সফল হবেই। একজন সাধারণ শ্রমজীবী মানুষও কিন্তু সফল। সফলতা কি সেটা নিয়ে আমাদেরকে চিন্তা করতে হবে। মানুষ তার নিজের কাজ নিয়ে কতটা এনজয় করতে পারছে, সেখানেই তার সফলতার পরিচয়। এছাড়া কারো নিজের অবস্থানের চেয়ে খারাপ অবস্থানে থাকা মানুষটার দিকে তাকিয়ে তার মাঝে এই উপলব্ধিটা যদি জাগ্রত করা যায় যে, সে আসলে তাঁর চেয়ে সফল, তবেই আত্মহত্যা প্রতিরোধ করা সম্ভব। মূলকথা কারো মাঝে যদি বাবা মা ও এই সমাজের প্রতি ভালোবাসা জাগ্রত করা যায় তবেই তাকে এই পথ থেকে ফেরানো সম্ভব।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলান লিখেছেন, ‘চিরদিন কাহার ও সমান নাহি যায়’। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছেন, ‘তেরো-চৌদ্দ বৎসরের ছেলের মতো পৃথিবীতে এমন বালাই আর নাই’। সত্যিই তাই। কৈশোর-তারুণ্যে ছেলেমেয়েদের মন থাকে উর্বর। উর্বর মস্তিষ্কে যেন রঙিন চশমা চোখে দিয়ে আকাশ পাতাল স্বপ্ন দেখেন; তেমনি যখন তখন যে কোনো অপ্রীতিকর, ভয়ঙ্কর সিদ্ধান্ত নিয়ে পারেন। পরীক্ষায় প্রত্যাশিত রেজাল্ট করতে না পারার ব্যর্থতার হতাশা, গ্লানি, ক্ষোভ থেকে তারা আত্মহত্যাকে জীবনের সমস্যার তাৎক্ষণিক সমাধান হিসেবে বেছে নিচ্ছেন। ফলে অভিভাবক, শিক্ষক এবং সমাজের বড়দের অনেক দায়িত্ব হতাশাগ্রস্ত ওই কিশোর কিশোরীদের পাশে দাঁড়ানো। বাবা-মা ও পরিবারকে আমার ছেলে মেয়ে ক্লাসে ফাস্ট হবে এবং পরীক্ষায় ভাল রেজাল্ট করবে এমন মানসিকতার পাশাপাশি সন্তানরা যাতে মানুষ হয় সে চিন্তা করা উচিত। একই সঙ্গে সন্তান পরীক্ষায় প্রত্যাশিত রেজাল্ট করতে ব্যর্থ হলে তাকে সান্ত¦না দেয়া উচিত। কেন সে প্রত্যাশিত রেজাল্ট করতে পারলো তা তা অনুসন্ধান করে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত। এবং তাৎক্ষণিক ভাবে সন্তানকে মানসিকভাবে সান্ত¦না দেয়া উচিত ‘একবার না পারিলে দেখো শত বার’ কবিতার মতো উদাহরণ তুলে ধরা উচিত। এতে করে শিক্ষার্থীরা মনোবল ফিরে পাবে এবং নতুন উদ্যমে পড়াশোনায় মনোনিবেশ করতে উৎসাহী হবে।
চলতি বছরের এসএসসি, দাখিল ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পর সারাদেশে ৮ শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার খবর পাওয়া গেছে। নোয়াখালী, নীলফামারি, ঠাকুরগাঁও, ময়মনসিংহ, ঝিনাইদহ, গোপালগঞ্জ, হবিগঞ্জ ও মাগুরা জেলায় এসব ঘটনা ঘটেছে। একই ঘটনায় আরও ৩ শিক্ষার্থী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। মনীষীদের ছাত্রজীবনের দিকে তাকালে কি দেখি? ব্রিটেনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিল, বিজ্ঞানী চার্লস ডারউইন, স্টিভ জবস, বিল গেটস, আইনস্টাইন, ভারতের সাবেক প্রেসিডেন্ট এপিজে আবদুল কালামের মতো বরেণ্য ব্যক্তিরা পরীক্ষায় খারাপ করেছেন। পরে আবার পরীক্ষায় ভাল করেছেন এবং কর্মময় জীবনে সফলতাও পেয়েছেন। পৃথিবীর অনেক সফল, বিখ্যাত ব্যক্তি পড়াশোনায় তেমন ভালো করতে পারেননি। তার মানে এই নয় যে একটি পরীক্ষায় সাফল্য না ফেলে জীবন শেষ হয়ে গেল? জীবন হচ্ছে সফলতা-ব্যর্থতার পালাবদলের এক অবিরাম ধারা। কোনো একটি কাজে ব্যর্থ হওয়া মানে শেষ হয়ে যাওয়া নয়। এ জন্য আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়া বোকামি। পরীক্ষায় ব্যর্থতা বা যেকোনো ব্যর্থতার পর কেউ ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে, কেউ তীব্র নেতিবাচক আবেগে বিস্ফারিত হয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে; আবার কেউ সাময়িক আপসেট থাকে মাত্র। কে কোন ধরনের আবেগীয় প্রতিক্রিয়া দেখাবে, তা অনেক দেহ-মনো-সামাজিক কারণের ওপর নির্ভর করে। ফলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা নিয়ে যারা কাজ করেন তাদের এসব নিয়ে গবেষণা করা উচিত। ক্লাসে সবাই পড়েন কিন্তু সব শিক্ষার্থীর মেধা সমান হয় না। যারা পরীক্ষায় খারাপ ফলাফল করছেন তাদের মধ্যেও সুপ্ত মেধা লুকিয়ে রয়েছে। সেই মেধাকে বের করে আনাই শিক্ষক ও শিক্ষা বিশারদদের কাজ। শিক্ষার্থীরা কেন রেজাল্ট খারাপ করছেন, এর পিছনে তাদের পড়াশোনা করার টেকনিক দায়ী নাকি তাদের অপরিপক্ব মস্তিষ্ক দায়ী? নাকি পরীক্ষার পদ্ধতি ও ব্যবস্থা দায়ী। এগুলো খুঁজে বের করা উচিত।
এ বছর ৯টি সাধারণ, মাদরাসা ও কারিগরি বোর্ডে গড় পরীক্ষার রেজাল্ট পর্যালোচনা করে দেখা যায় এবার ৫১ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে একজনও পাস করেনি। এর মধ্যে ৪২টিই মাদরাসা। গত বছর এমন প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছিল ৪৮টি। এবার এই তালিকায় যোগ হয়েছে আরো ৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। দেখা যায়, শূন্য পাস অবস্থানে থাকা ৫১টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ৪২টি মাদরাসা রয়েছে। এছাড়া দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডে ৪টি, ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে ৩টি ও রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে ২টি প্রতিষ্ঠান থেকে কেউ পাস করেনি। গত বছর যে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কেউ পাস করেনি সে সব প্রতিষ্ঠানের ভৌগলিক অবস্থান, পারিপার্শ্বিকতা, শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের অবস্থা জানতে কোনো গবেষণা হয়েছে বলে শোনা যায়নি। যদি ওই সব প্রতিষ্ঠানের সংকট, অব্যবস্থা ইত্যাদি নিয়ে গবেষণা করে সংকট সুরাহার উদ্যোগ নেয়া হতো তাহলে এবার এতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শূন্য পাসের অবস্থায় থাকতো না।
গত ১২ মে এসএসসি, দাখিল ও সমমানের পরীক্ষার রেজাল্ট ঘোষণা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘যারা ফেল করেছে তাদের মন খারাপ করার কিছু নেই। যারা যদি ভালোভাবে পড়াশোনা করে, তাহলে আগামীতে পাস করবে। অভিভাবকদের বলবো, যে ফেল করেছে তার মনেই তো কষ্ট। বাবা-মা তাকে কেনো আরো কষ্ট দেবে। মনের কষ্টে অনেক সময় তারা দুর্ঘটনা ঘটিয়ে ফেলে। কেনো ফেল করলো, সেটা খুঁজে বের করে পড়াশোনা করতে হবে। শিক্ষার্থীদের জন্য অনুপ্রেরণাদায়ক পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। কবি কালীপ্রসন্ন ঘোষ কবিতায় লিখেছেন, ‘পারিব না এ কথাটি বলিও না আর/ কেন পারিবে না তাহা ভাব একবার/ পাঁচ জনে পারে যাহা/ তুমিও পারিবে তাহা/ পার কি না পার কর যতন আবার/ এক বারে না পারিলে দেখ শত বার’। যারা পাবলিক পরীক্ষায় প্রত্যাশিত ফলাফল করতে ব্যর্থ হয়েছেন তাদের বুঝতে হবে একটি পরীক্ষায় ফেল করা মানে জীবন শেষ নয়। সামনে আরো সময় আছে পাড়শোনা করলে অবশ্যই কবির কবিতার মতো সাফল্য আসবে।
জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর ড. এ কে এম রেজাউল করিম বলেন, এখনকার অনেক ছেলেমেয়ের সাথে পরিবারের সম্পর্ক ভালো না। পারিবারিক বন্ধনের অভাবে ছেলেমেয়েরা তাদের সমস্যা শেয়ার করে বাইরের বন্ধুদের সাথে। ফলে খুব স্বাভাবিকভাবেই তাদের অনেক সেনসেটিভ সমস্যার কথা বাইরে ছড়িয়ে পড়ে এবং শেষ পর্যন্ত তা তাদেরকে আত্মহত্যার দিকে ধাবিত করে। কারণ মানসিক এমন পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা সবকিছু থেকে মুক্তি চায়। আর এ পথকেই তারা মুক্তি হিসেবে দেখে। সুতরাং আত্মহত্যার হার হ্রাসের জন্য অবশ্যই পারিবারিক সম্পর্কে জোর দিতে হবে। এছাড়া নৈতিক ও ধর্মীয় শিক্ষার অভাবকেও তিনি আত্মহত্যার কারণ বলে মনে করেন।
নোয়াখালী : জেলার সদর উপজেলায় এসএসসি পরীক্ষায় ফেল করায় তানজিনা আক্তার ঝুমি (১৬) আত্মহত্যা করেছে। উপজেলার নোয়াখালী পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সল্যা ঘটাইয়া গ্রামের কালিতারা বাজার-সংলগ্ন আলী আজম বেপারী বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। একই দিন রাতে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। নিহত নোয়াখালী পৌরসভার সল্যা ঘটাইয়া গ্রামের মো. আব্দুল করিমের মেয়ে। তিনি স্থানীয় কালিতারা মুসলিম গার্লস একাডেমি থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন।
নীলফামারী : জেলার সৈয়দপুরে রাফসান জানি এমিল (১৬) নামের এক এসএসসি পরীক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে উপজেলার বাঙালিপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। রাফসান একই এলাকার আবদুর রহিমের ছেলে। পুলিশ ও পরিবার জানায়, এ বছর স্থানীয় লায়ন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয় রাফসান। পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পাওয়ার আশা করেছিল সে। কিন্তু প্রকাশিত ফলাফলে জিপিএ ৪ দশমিক ৮৯ পয়েন্ট আসায় ঘরে গিয়ে গলায় ফাঁস দেয়।
ঠাকুরগাঁও : জেলার হরিপুরে এসএসসি পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ায় মিতু (১৫) নামের এক স্কুল ছাত্রী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। তিনি উপজেলার কামারপুকুর গ্রামের মুসা আলীর মেয়ে ও কামারপুকুর মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী। মিতুর পিতা মুসা জানান, ৩ ছেলে মেয়ে মধ্যে মিতু তাদের দ্বিতীয় সন্তান। পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর সে আত্মহত্যা করে।
ঝিনাইদহ : জেলার হরিণাকুন্ডু উপজেলার সাবেক বিন্নী গ্রামে এসএসসি পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ায় নুপুর আকতার (১৬) নামের এক কিশোরী আত্মহত্যা করেছেন। তিনি ওই গ্রামের আসাদুল ইসলামের মেয়ে। এবার উপজেলার দুর্লভপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছিল।
ময়মনসিংহ : জেলার ধোবাউড়া উপজেলায় এসএসসি পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়ে শোহেদা আক্তার (১৭) নামের এক শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন। উপজেলার পুরাকান্দলিয়া ইউনিয়নের বতিহালা গ্রামে এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। শোহেদা আক্তার স্থানীয় বতিহালা গ্রামের ছমেদ আলীর মেয়ে। তিনি বতিহালা উচ্চবিদ্যালয়ের ২০২৪ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন।
গোপালগঞ্জ : এসএসসি পরীক্ষায় এক বিষয়ে ফেল করায় প্রিন্স হাসান মাহাতী নামে এক শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন। গোপালগঞ্জ শহরের মোহাম্মদ পাড়ায় বোনের বৈশাখী বেগমের ভাড়া বাসায় ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি। প্রিন্স সদর উপজেলার মেরী গোপিনাথপুর গ্রামের শরীফ মহসিন আলী বেল্টুর ছেলে। তিনি এ বছর মেরী গোপিনাথপুর খন্দকার শামসুদ্দিন স্মৃতি উচ্চবিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন।
হবিগঞ্জ : জেলায় এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ায় এক কিশোরী বিষ পান করে আত্মহত্যা করেছেন। একই কারণে পৃথক ঘটনায় বিষ পান করে হবিগঞ্জ জেলা সদর আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি আছেন আরও দুই কিশোর। এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণার পর বিষ পান করার ঘটনায় তিন কিশোর-কিশোরীকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন পরিবারের সদস্যরা। এর মধ্যে মাইশা আক্তার (১৭) নামে এক কিশোরীকে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে। আর অপর দুই কিশোরকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদেরকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। মাইশা আক্তার কিশোরগঞ্জ জেলার অষ্টগ্রাম থানার আদমপুর গ্রামের মজিদ মিয়ার মেয়ে। স্থানীয় দেওয়ান আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের এই শিক্ষার্থী দুই বিষয়ে ফেল করেছেন।
মাগুরা : এসএসসি পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ায় কথা সাহা (১৬) নামের এক শিক্ষার্থী চতুর্থতলা থেকে লাফিয়ে আত্মহত্যা করেছে। মাগুরা জেলা শহরে রিমপি সাহা নামে এক আত্মীয়ের বাসায় বসবাসরত চতুর্থতলার ছাদ থেকে সে লাফিয়ে পড়ে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে মাগুরা সদর হাসপাতালে, পরে ফরিদপুর মেডিকেলে ভর্তি করানো হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়।ইনকিলাব