আলহাজ্ব এ, কে,এম, মকছুদ আহমেদ:- কাপ্তাই হ্রদকে বাঁচাতে, মাছের বংশ বিস্তার বাড়াতে এবং বিদ্যুৎ উৎপাদন স্বাভাবিক রাখতে জরুরি ভিত্তিতে হ্রদের পুরো এলাকা ড্রেজিং করা অত্যান্ত জরুরী হয়ে পড়ে পড়েছে। সড়ক যোগাযোগ এবং অতি প্রয়োজনীয় ছাড়া অন্য আজেবাজে প্রকল্প বাদ দিয়ে কাপ্তাই হ্রদে ড্রেজিং করতে হবে। ড্রেজিং এর কোন বিকল্প নেই। বর্তমানে মাইনীমুখ এলাকায় যে ড্রেজিং করছে তাতে কোন ফল হচ্ছেনা। দুর্নীতি হচ্ছে। বর্তমানে হ্রদের পানির সীমা ১০ এম এস এল এর নীচে নেমে গিয়ে সকল উপজেলার সাথে নৌ যোগাযোগ বন্ধ হয়েছে। মাছ শিকার ২৫ এপ্রিল থেকে বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে। কাপ্তাই এ জলবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে সর্বনি¤œ পর্যায়ে নেমে এসেছে। বর্তমানে এই গরমের মধ্যে দিনে রাতে অস্বাভাবিকভাবে লোডশেডিং দিয়ে জনজীবন বিপর্যস্ত করে তোলা হয়েছে।
যখন পূর্ণ বিদ্যুৎ উৎপাদন হয় তখনতো রাঙ্গামাটির জন্য ১৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ দেওয়া হতো বাকীগুলো জাতীয় গ্রীডে দেওয়া হতো।বর্তমানে রাঙ্গামাটির জন্য ১৫ মেগাওয়াট দেওয়া হচ্ছে না কেন? এখানে কেন এত লোডশেডিং দেয়া হচ্ছে জনগণ জানতে চায়।
বর্তমানে সবগুলো নদী উপনদী খাল বরাট হয়ে যাওয়ায় সকল উপজেলার সাথে নৌযোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় জনগণ অত্যন্ত মানবেতর জীবনযাপন করছে। বিশেষ করে রাঙ্গামাটি লংগদু বাঘাইছড়ি রুটে যাত্রীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। লংগদু বাঘাইছড়ি নৌপথ সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে। লংগদু পর্যন্ত হ্রদ এলাকায় অনেক স্থানে ছোট ছোট চর সৃষ্টি হচ্ছে বোট পর্যন্ত আটকে যাচ্ছে। কেউ আটকে গিয়ে ৫/৬ ঘন্টা পর্যন্ত অতিরিক্ত সময় ব্যয় করা হচ্ছে।বাঘাইছড়ি থেকে আগে রাঙ্গামাটি বাস সার্ভিস চালু ছিল বর্তমানে পিকআপ সার্ভিস চালু করেছে তা বিপদজনক ও অপ্রতুল।বাস সার্ভিস চালু করা জরুরী। নানিয়ারচর রাঙ্গামাটি নৌপথ অচল।তবে সড়ক যোগাযোগ থাকায় তেমন অসুবিধা হচ্ছে না। লংগদু নানিয়ারচর সড়ক নির্মাণ কাজ এগিয়ে চলছে। তবে আরও দ্রুত গতিতে সড়ক নির্মাণ কাজ লংগদুর যাত্রীদের অনেক সুবিধা হবে।
এছাড়া লংগদু বাঘাইছড়ি সড়কের সুয়ারিপাতাছড়া ব্রীজটির কাজ দ্রুত শুরু করা গেলে বাঘাইছড়ি যাত্রীদের অনেক উপকারে আসবে।রাঙ্গামাটি জুরাছড়ি কাপ্তাই জুরাছড়ি নৌপথ অনেকদিন যাবত ভরাট হয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। রাঙ্গামাটি বরকল ছোট হরিনা রুটে বরকল পর্যন্ত লঞ্চ চলাচল করলে মাঝে মাঝে আটকে যায়। রাঙ্গামাটি বরকল ঠেগামুখ পর্যন্ত দ্রুত ড্রেজিং করা না গেলে ঠেগামুখ স্থলবন্দর মুখ দেখবে না।স্থলবন্দর চালু না করা গেলে ভারত বাংলাদেশের বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হবে।বিদ্যুৎ উৎপাদন স্বাভাবিক রাখতে হ্রদে পর্যাপ্ত পানি প্রয়োজন।
ড্রেজিং করে পানি ব্যবস্থা নিতে হবে।নতুবা কৃত্রিম বৃষ্টির ব্যবস্থা করে পানি স্বাভাবিক করতে হবে।১০/১৫ বছর পূর্বে কৃত্রিম বৃষ্টিপাতের ব্যবস্থা করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে পরবর্তীতে স্থগিত করা হয়েছে। এশিয়ার সর্ববৃহৎ কাপ্তাই হ্রদে হাজার হাজার কোটি আমার মাছ উৎপাদন হয়ে থাকে এবং ৪০/৫০ হাজার জনবলের কর্মসংস্থান হয়ে থাকে। এছাড়া নৌচলাচলের সাথে জড়িত কয়েক হাজার শ্রমিকের জীবন জীবিকা এ হ্রদের উপর নির্ভর করে।নৌচলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে ব্যবসা বাণিজ্যে হাজার হাজার কোটি টাকা লোকসান নিতে হচ্ছে। সবদিক বিবেচনায় দক্ষিণ এশিয়ার সবচাইতে বড় কাপ্তাই হ্রদকে বাঁচিয়ে রাখতে দ্রুত ড্রেজিং করা অত্যন্ত জরুরী। পার্বত্যচট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় অথবা সরকারের যেকোন তহবিল থেকে বরাদ্দ দিয়ে ড্রেজিং করা অত্যন্ত জরুরী হয়ে পড়েছে।
গত ২০ বছরের অধিক কাল থেকে ড্রেজিং করার পরিকল্পনা করা হচ্ছিল। পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে কিছু ছোটখাট ড্রেজিং করা হলেও নদীর কিনারায় মাটি ফেলার ফলে বর্ষার সময়ে আবারো নদী ভরাট হয়ে যায়। ফলে ঐসব ড্রেজিং কোন কাজে আসেনা। ছোটখাট ড্রেজিং না করে বড় ড্রেজিং এর ব্যবস্থা নিন। জনগণের দুর্ভোগ লাগবে আন্তরিকতার সাথে এগিয়ে আসুন।