
রাঙ্গামাটি:- আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে যে কোনও অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ চোরাচালান বন্ধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে বিজিবি। দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা, সীমান্ত রক্ষা, চোরাচালান প্রতিরোধসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করছে বিজিবি। স্বাধীনতার পর এই পর্যন্ত পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ১১০ বিজিবি সদস্য শহীদ হয়েছেন। এছাড়া বিভিন্ন অভিযানে বিপুল মাদকসহ আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করেছে বিজিবি। রবিবার সকালে রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কাপ্তাই ব্যাটালিয়ন (৪১ বিজিবি) এর ওয়াগ্গাছড়া ব্যাটালিয়নের সদর দপ্তরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে কাপ্তাই ব্যাটালিয়ন(৪১ বিজিবি) এর অধিনায়ক লে. কর্নেল কাওসার মেহেদী সিগন্যালস এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, দক্ষিণ-পূর্ব রিজিয়নের ১৩টি ব্যাটালিয়নের মাধ্যমে ইতোমধ্যে চলতি বছরে বিভিন্ন অভিযানে দুইটি দেশীয় রাইফেল, দুইটি ১২ বোর পিস্তল, একটি ১২ বোর শর্ট গান, একটি ৯ এম এম পিস্তল (যুক্তরাষ্ট্র), একটি ৮ এম এম পিস্তল (ভারতীয়), ৫০০ গ্রাম গান পাউডার, একটি ১ নলা দেশীয় বন্দুক, একটি এসএমজি (এম-৪, এ-১), দুটি ম্যাগাজিন এবং ৫০০ দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, এছাড়া অভিযানে ২৯ জন আসামিসহ মদ, ফেনসিডিল, ইয়াবাসহ বিভিন্ন চোরাচালানির প্রায় ২৯ কোটি টাকার মালামাল উদ্ধার করেছে বিজিবি। দুর্গম সীমান্ত অঞ্চলে বসবাসরত সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা, জীবনমান উন্নয়ন এবং সামাজিক কল্যাণে বিজিবি সবসময়ই অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী হয়েও বিজিবি দেশের সীমান্ত সুরক্ষার পাশাপাশি দেশের যে কোনো দুর্যোগ মোকাবেলায় অসহায় ও বিপদাপন্ন জনগোষ্ঠীর পাশে দাঁড়িয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, সীমান্তের দক্ষিণ-পূর্ব রিজিয়নের দায়িত্বপূর্ণ এলাকা ৫৪০ কিলোমিটার নিয়ে বেষ্টিত যা, চট্টগ্রাম জেলার মীরসরাই উপজেলার অন্তর্গত আমতলী হতে রাঙামাটি জেলার জুরাছড়ি উপজেলার কচুতলী পর্যন্ত বিস্তৃত। পার্বত্য চট্টগ্রামে নিজস্ব সীমান্ত রক্ষার দায়িত্ব ছাড়াও অত্র অঞ্চলে সক্রিয় দুষ্কৃতকারীদের যেকোনো অপরাধমূলক ও সম্প্রীতি বিনষ্টকারী কর্মকা- প্রতিরোধে সবসময় তৎপর রয়েছে। জুলাই অভ্যুত্থানের পর দেশের সার্বভৌমত্ব ও সীমান্তের নিরাপত্তা রক্ষায় সীমান্ত উত্তেজনা ও পুশ-ইন রোধসহ বিভিন্ন নিরাপত্তা ঝুঁকি মোকাবেলায় বিজিবি নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, বিজিবি’র তত্ত্বাধানে পরিচালিত বরকল সীমান্ত কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি ২০১২ সালে প্রতিষ্ঠা করার পর ২৭১৮ জনকে প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে তাদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে।
জোন কমান্ডার বলেন, আসন্ন নির্বাচনকে ঘিরে বিজিবি তার নিজস্ব প্রস্তুতি নিয়ে যাচ্ছে। একটি অবাধ, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য বিজিবি’র বদ্ধপরিকর। নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্নের লক্ষ্যে নিজস্ব দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় প্রতিটি বিওপি/ক্যাম্পের উদ্যোগে নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয়ে জনসচেতনামূলক সভা আয়োজনের মাধ্যমে নির্বাচন কেন্দ্রিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়সমূহ জনসাধারণকে অবহিত করছে। এছাড়া নির্বাচন স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে নিয়োজিত থেকে নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনে বিজিবি কাজ করবে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন কাপ্তাই ৪১ বিজিবির উপ অধিনায়ক মেজর ফারহাত, ক্যাপ্টেন আশরাফ, সহকারী পরিচালক উপেন্দ্র নাথ হালদার উপস্থিত ছিলেন।