শিরোনাম
খাগড়াছড়ি থমথমে,এলাকাজুড়ে আগুনের ক্ষত,তিনজনের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর ভারতের মদদে পাহাড়ে ইউপিডিএফের তাণ্ডব ইসলামী ব্যাংকের ৪৯৭১ কর্মী ওএসডি, পরে চাকরিচ্যুত ২০০ গাজায় যুদ্ধ বন্ধে সম্মত নেতানিয়াহু ট্রাম্পের ‘হামাসবিহীন গাজা’ প্রস্তাবে যুদ্ধ বন্ধে সম্মত ইসরাইল ৫ আগস্টই মুছে ফেলা হয় শেখ হাসিনার ১ হাজার কল রেকর্ড জুলাই অভ্যুত্থানে ৩ লাখ গুলি ছোড়ে পুলিশ, ঢাকায় ৯৫ হাজার রাউন্ড মাদাগাস্কারে জেন জি বিক্ষোভের মুখে সরকার ভেঙে দিলেন প্রেসিডেন্ট থমথমে খাগড়াছড়ি চলছে ১৪৪ ধারা,সতর্ক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে চেকপোস্ট গাজায় জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ধ্বংস সবকিছুই,বাদ যাচ্ছে না হাসপাতাল আশ্রয় কেন্দ্র

যুদ্ধোত্তর গাজায় টনি ব্লেয়ারের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী প্রশাসন?

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় শনিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
  • ১৭৯ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রির্পোট:- ফিলিস্তিনের যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা ভূখণ্ডে যুদ্ধোত্তর পরিস্থিতি সামাল দিতে একটি অন্তর্বর্তীকালীন কর্তৃপক্ষ গঠনের বিষয়ে আলোচনা চলছে। যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার, যিনি ২০০৩ সালে নিজের দেশকে ইরাক যুদ্ধে জড়িয়েছিলেন, তাকে এ কর্তৃপক্ষের নেতৃত্বের ভূমিকায় দেখা যেতে পারে—এমন আলোচনাও চলছে। বিষয়টি এখনো চূড়ান্ত না হলেও এ ধরনের একটি পরিকল্পনায় যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন রয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হচ্ছে, যদি এ পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়, তবে গাজা ইন্টারন্যাশনাল ট্রানজিশনাল অথরিটি (জিআইটিএ) নামক একটি সংস্থা পাঁচ বছরের জন্য গাজার ‘সর্বোচ্চ রাজনৈতিক ও আইনি কর্তৃপক্ষ’ হিসেবে কাজ করতে পারে, যার প্রধানের ভূমিকায় দেখা যেতে পারে ব্লেয়ারকে।

বিবিসির এক প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, যুদ্ধ-পরবর্তী গাজায় অন্তর্বর্তী প্রশাসন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের একটি পরিকল্পনা নিয়ে চলমান আলোচনায় সম্পৃক্ত রয়েছেন টনি ব্লেয়ার। এর অংশ হিসেবে গত আগস্টে টনি ব্লেয়ার হোয়াইট হাউসে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে গাজার ভবিষ্যৎ নিয়ে এক বৈঠকে অংশ নিয়েছিলেন। বলা হচ্ছে, প্রস্তাবিত এ কর্তৃপক্ষের প্রতি জাতিসংঘ এবং উপসাগরীয় দেশগুলোর সমর্থন থাকবে এবং একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর এর নিয়ন্ত্রণ ফিলিস্তিনিদের হাতে ফিরিয়ে দেওয়া হবে। মার্কিন মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফ সে সময় এ পরিকল্পনাকে ‘খুবই বিস্তৃত’ বলে উল্লেখ করেছিলেন। তবে বৈঠকের বিস্তারিত তথ্য জানানো হয়নি।

‘দি ইকোনমিস্ট’ এবং ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে, জিআইটিএ গঠিত হলে তা জাতিসংঘের ম্যান্ডেট চাইবে এবং এর লক্ষ্য হবে পাঁচ বছরের জন্য গাজায় স্থিতিশীলতা আনা। এ পরিকল্পনাটি পূর্ব তিমুর এবং কসোভোকে রাষ্ট্রে রূপান্তরে তত্ত্বাবধানকারী আন্তর্জাতিক প্রশাসনের মডেলের ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হবে। প্রাথমিকভাবে কর্তৃপক্ষটি গাজার দক্ষিণ সীমান্তের কাছাকাছি মিশরের আল-আরিশে স্থাপন করা হবে এবং পরিস্থিতি স্থিতিশীল হলে একটি বহুজাতিক বাহিনীর সঙ্গে গাজায় প্রবেশ করবে।

আলোচনায় টনি ব্লেয়ার: যুদ্ধ-পরবর্তী গাজার অন্তর্বর্তী প্রশাসনের নেতৃত্ব ঘিরে টনি ব্লেয়ারের নাম আসার পর বিষয়টি আলোচনার জন্ম দিয়েছে। বিশেষ করে ২০০৩ সালের ইরাক যুদ্ধে টনি ব্লেয়ারের ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ত্রুটিপূর্ণ গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ব্রিটিশ সৈন্যদের ইরাকে পাঠানোর সিদ্ধান্তের জন্য তাকে সমালোচিত হতে হয়েছিল। গণবিধ্বংসী অস্ত্রের বিষয়ে নিশ্চিত না হয়েই তিনি যুদ্ধে জড়িয়েছিলেন বলে পরবর্তী সময়ে তদন্তে উঠে আসে।

তবে প্রধানমন্ত্রিত্ব ছাড়ার পর ২০০৭ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত তিনি মধ্যপ্রাচ্যে চতুর্পক্ষীয় (যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, রাশিয়া ও জাতিসংঘ) দূত হিসেবে কাজ করেন, যেখানে তার মূল লক্ষ্য ছিল ফিলিস্তিনে অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং দ্বিরাষ্ট্র সমাধানের পরিবেশ তৈরি করা।

ব্লেয়ারের কার্যালয় থেকে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, তিনি এমন কোনো পরিকল্পনা সমর্থন করবেন না, যা গাজার মানুষকে বাস্তুচ্যুত করবে। যদিও বাতিল হয়ে যাওয়া ট্রাম্প-সমর্থিত একটি পরিকল্পনার খসড়ায় ফিলিস্তিনিদের স্বেচ্ছামূলকভাবে এলাকা ছেড়ে যাওয়ার জন্য অর্থের প্রস্তাব ছিল, যা মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলোর উদ্বেগ বাড়িয়েছিল।

হামাস ও ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের অবস্থান: গাজার ভবিষ্যৎ নিয়ে এ আলোচনা এমন এক সময়ে হচ্ছে, যখন ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস স্পষ্ট করে বলে দিয়েছেন যে, গাজার ভবিষ্যতের সরকারে হামাসের কোনো ভূমিকা থাকা উচিত নয় এবং তিনি হামাসকে নিরস্ত্র করার দাবি জানিয়েছেন। এ ছাড়া ট্রাম্প এবং অন্য বিশ্বনেতাদের সঙ্গে দ্বিরাষ্ট্র শান্তি পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কাজ করতে প্রস্তুত বলেও ঘোষণা দিয়েছেন মাহমুদ আব্বাস। যদিও ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, প্রস্তাবিত জিআইটিএর কাঠামোতে প্রাথমিকভাবে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের (পিএ) কোনো ভূমিকা থাকবে না।

অন্যদিকে, হামাস এ প্রস্তাবের তীব্র বিরোধিতা করেছে। হামাস কর্মকর্তারা ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমে দি ইনডিপেনডেন্টকে জানিয়েছেন, কোনো পক্ষেরই ফিলিস্তিনের কোনো দলকে ভেঙে দেওয়ার অধিকার নেই এবং ফিলিস্তিনিরা তাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া কোনো চুক্তি মেনে নেবে না। তাদের মতে, ‘যাকে ভেঙে দিতে হবে, তা হলো দখলদারিত্ব।’

জোরালো কূটনৈতিক পদক্ষেপ: গাজার ভবিষ্যৎ নিয়ে বিভিন্ন পক্ষ থেকে নানা পরিকল্পনা পেশ করা হয়েছে। এর আগে ফেব্রুয়ারিতে ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজাকে ‘রিভেরা’ বানানোর প্রস্তাব দিয়েছিলেন, যদিও পরে তা বাতিল হয়। গত মার্চে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল ফিলিস্তিনিদের গাজায় থাকার সুযোগ দিয়ে আরব দেশগুলোর একটি যুদ্ধোত্তর পুনর্গঠন পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করেছিল। চলতি মাসের শুরুতে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ফ্রান্স ও সৌদি আরবের নেতৃত্বে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে গাজায় ‘ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের ছাতার নিচে’ একটি ‘অন্তর্বর্তী প্রশাসনিক কমিটি’ গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হয়, যা অধিকাংশ সদস্য দেশের সমর্থন পেয়েছিল। চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে যুক্তরাজ্য আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়েছে। ফ্রান্স, কানাডা, অস্ট্রেলিয়াসহ আরও কয়েকটি দেশও একই পদক্ষেপ নিয়েছে। এ দেশগুলো আবার দ্বিরাষ্ট্র সমাধানের আহ্বান জানিয়েছে, যেখানে পশ্চিম তীর ও গাজাকে নিয়ে একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠিত হবে, যার রাজধানী হবে পূর্ব জেরুজালেম। তবে, ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র এ পদক্ষেপের সমালোচনা করে এটিকে ‘হামাসের জন্য পুরস্কার’ বলে অভিহিত করেছে।

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com
Website Design By Kidarkar It solutions