রাঙ্গামাটি:- সপ্তাহ জুড়ে বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় রাঙ্গামাটির কাপ্তাই হ্রদে পানি উচ্চতা ১০৬এমএসএল(মিনস সি লেভেল) এর কাছাকাছি পৌঁছেছে। যার ফলে রাঙামাটির সিম্বল হিসাবে খ্যাত রাঙামাটি ঝুলন্ত সেতু ইতিমধ্যে ডুবে গেছে। এছাড়া কাপ্তাই লেকের তীরবর্তী উপজেলা বরকল, লংগদু, বাঘাইছড়ি, বিলাইছড়ি উপজেলার কিছু কিছু নিম্নাঞ্চল ডুবে গেছে।
এদিকে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে নয়টায় কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মাহমুদ হাসানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বৃহস্পতিবার সকাল নয়টা পর্যন্ত কাপ্তাই হ্রদে পানির উচ্চতা ছিল ১০৫.৭৭ এমএসএল। এর আগেরদিন বুধবার একই সময়ে কাপ্তাই হ্রদে পানির উচ্চতা ছিল ১০৫.৫৩ এমএসএল। তিনি আরোও জানান, চলতি বছরের মধ্যে গত ২২ জুলাই প্রথমবারের মতো কাপ্তাই হ্রদে পানির উচ্চতা ১০০ এমএসএল অতিক্রম করেছে। যে হারে বৃষ্টি হচ্ছে মুহূর্তে মুহূর্তে লেকের পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। কাপ্তাই লেকে পানির ধারণ ক্ষমতা ১০৯ এমএসএল, যদি লেকের পানি ১০৮ এমএসএল অতিক্রম করে তাহলে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের ১৬টি জলকপাট পর্যায়ক্রমে খুলে দিয়ে আমরা লেক হতে কর্ণফুলি নদীতে পানি নির্গমন করবো। তবে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে সভা করে নোটিশ আকারে সর্ব সাধারণকে জানিয়ে দেওয়া হবে।
এদিকে পানির ওপর নির্ভরশীল কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের পাঁচটি ইউনিট চালু রয়েছে বলে জানান কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান। তিনি জানান, বৃহস্পতিবার সকাল নয়টা পর্যন্ত এই কেন্দ্রের পাঁচটি ইউনিট হতে সর্বমোট ২১৯ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে। তৎমধ্যে ১ ও ২ ইউনিট হতে প্রতিটিতে ৪৬ মেগাওয়াট করে ৯২ মেগাওয়াট, ৩নং ইউনিট হতে ৪৭ মেগাওয়াট এবং ৪ ও ৫নং ইউনিট হতে প্রতিটিতে ৪০ মেগাওয়াট করে ৮০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে।
প্রসঙ্গত: ২৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন এই কেন্দ্রে পাঁচটি ইউনিট পানির জন্য একসাথে চালু করা সম্ভব হতো না। চলতি বছরের মে মাসের শেষের দিকে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বেশি হওয়ায় কাপ্তাই হ্রদে ধীরে ধীরে পানি বাড়ার ফলে গত ২ জুন হতে এই কেন্দ্রের চারটি ইউনিট চালু করা হলেও গত ৯ জুলাই রাত ৮টায় একযোগে চালু করা হয়েছিল ৫ টি ইউনিট, সেদিন বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছিল ২ শত ১২ মেগাওয়াট। আবার গত ১৪ জুলাই পাঁচটি ইউনিট হতে বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে ২ শত ১৮ মেগাওয়াট, ২০ জুলাই ৫ টি ইউনিট হতে বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে ২ শত ২০ মেগাওয়াট, ২২ জুলাই হতে ৩১ জুলাই পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন কখনো ২ শত ২১ আবার কখনো ২ শত ২০ আবার কখনো ২ শত ১৯ মেগাওয়াট উৎপাদন হয়েছে বলে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের কন্ট্রোল রুম সূত্রে জানা যায়।
তবে উৎপাদিত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সঞ্চালন করা হচ্ছে বলে জানান বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দায়িত্বরত প্রকৌশলীরা।