ডেস্ক রির্পোট:- বিজেপিশাসিত বিভিন্ন রাজ্যে বাংলায় কথা বললে পশ্চিমবঙ্গের একাধিক শ্রমিককে বাংলাদেশি বলে দাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে এমন অভিযোগ। শুধু তাই নয়, একাধিক জেলার শ্রমিককে বাংলাদেশে পুশব্যাক করার ঘটনাও ঘটেছে। পরে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের হস্তক্ষেপে সেসব শ্রমিকরা নিজেদের বাড়িতে ফেরেন। বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলোতে বাংলাভাষার বিরুদ্ধে ‘সন্ত্রাসে’র অভিযোগ তুলেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সেই আবহে এবার মালদার পরিযায়ী শ্রমিককে বাংলাদেশে পুশব্যাকের ঘটনা সামনে এল। মাত্র ২১ বছরের এক তরুণ মালদা জেলার কালিয়াচক থানার জালালপুর গ্রামের বাসিন্দা আমির শেখ, আজ দেশছাড়া হয়ে বাংলাদেশে। প্রায় তিন মাস আগে জীবিকার সন্ধানে রাজস্থানে পাড়ি দেন আমির। তার সঙ্গে ছিল ভোটার কার্ড, আধার কার্ড, ঠিকানার প্রমাণ-সহ ভারতের সমস্ত বৈধ পরিচয়পত্র। তা সত্ত্বেও, কোনও রকম পূর্ব সতর্কতা ছাড়াই রাজস্থান পুলিশ তাকে “বাংলাদেশি নাগরিক” সন্দেহে গ্রেফতার করে।
দীর্ঘ দুই মাস জেল হেফাজতে থাকার পর, রাজস্থান পুলিশ আমির শেখকে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট সীমান্তে পাঠিয়েছিল। বিএসএফের মাধ্যমে তাকে বাংলাদেশের সাতক্ষীরা জেলায় পুশব্যাক করা হয়েছে বলে অভিযোগ। আরও মারাত্মক অভিযোগ, তাকে পে লোডার মেশিনের সাহায্যে সীমান্তের কাঁটাতারের ওপারে ছুঁড়ে দেওয়া হয়েছে। ওই ব্যক্তি বাংলাদেশ থেকে সোশাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও প্রকাশ করেছেন বলে খবর। সেই ভিডিও তাঁর পরিবারের লোকজন দেখে বিচলিত, তাঁরা আতঙ্কে আছেন। কান্না জড়ানো কণ্ঠে আমির ফোনে বলেছেন , “আমি ভারতীয়, আমাকে আমার ঘরে ফিরিয়ে নিন!” এই ঘটনার পর গোটা জালালপুর শোকস্তব্ধ। পরিবারের মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়েছে। মা কাঁদছেন, বাবা নির্বাক। পরিবারের প্রশ্ন— “যদি ভারতের বৈধ পরিচয়পত্র থাকা সত্ত্বেও কেউ নিজের নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে না পারেন, তবে সাধারণ মানুষ যাবে কোথায়?ঘটনার পর আমির শেখের পরিবার রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের হস্তক্ষেপ চেয়ে আবেদন করেছেন। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে আবেদন— “আমাদের ছেলেকে নিজের দেশে ফিরিয়ে আনুন।মানবজমিন