ডেস্ক রির্পোট:- পাকিস্তানি অভিনেত্রী আলিজেহ শাহ প্রকাশ্যে অভিযোগ তুলেছেন যে, তিনি দেশের বিনোদন অঙ্গনে হয়রানি, মিডিয়ায় অপমান ও শোষণের শিকার হয়েছেন। সোমবার ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে দেয়া একাধিক বার্তায় ২৫ বছর বয়সী এই অভিনেত্রী দাবি করেছেন, এসব কারণে তাকে সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রল করা হচ্ছে, উপহাস করা হচ্ছে, এমনকি ব্ল্যাকলিস্টও করা হয়েছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন জিও নিউজ। আলিজেহ লিখেছেন, ‘যারা আমাকে নিয়ে অন্যায় করেছে, আমি প্রত্যেককে প্রকাশ্যে আনবো। মানুষ আমাকে নিয়ে ট্রল করছে, উপহাস করছে, মিম বানাচ্ছে। অথচ অভিনেতার জীবন কতোটা কঠিন, তা কারও ধারণা নেই।
শাহ তার বক্তব্যে ২০২১ সালের ব্রাইডাল কৌচার উইক-এ ঘটে যাওয়া ভাইরাল ঘটনার প্রসঙ্গ তোলেন। ওই ইভেন্টে গায়িকা শাজিয়া মানজুরের সঙ্গে র্যাম্পে হাঁটার সময় আলিজেহ হোঁচট খান। কিন্তু এবার তিনি দাবি করেছেন, ঘটনাটি ইচ্ছাকৃতভাবে ঘটানো হয়েছিল। শাহের ভাষায়, আমাদের ডানে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ওই মহিলা আমাকে টেনে মাটিতে ফেলে দেন। পুরো শো জুড়েই তার হাত আমার কোমরে ছিল, বারবার চেষ্টা করছিলেন যাতে আমি পড়ে যাই। তিনি আরও অভিযোগ করেন, শাজিয়া মানজুর পরবর্তীতে টিকটক তারকা জান্নাত মির্জা ও সঞ্চালক জুগন কাজিমের সঙ্গে বসে বিষয়টি নিয়ে উপহাস করেছেন। আগে যদিও আলিজেহ এ ঘটনাকে ‘সাধারণ ভুল; বলে মানজুরকে ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন, এবার তিনি জানান, ‘ওই আন্টি অন্য শোতেও গিয়ে অন্য সেলিব্রিটিদের হোঁচট খাওয়াতেন, শুধু আমাকে বিদ্রূপ করার জন্য।’
অভিনেত্রী অভিযোগ করেন, পাকিস্তানের টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রিতে অভিনয়ের পারিশ্রমিক পেতে শিল্পীদের মাসের পর মাস অপেক্ষা করতে হয়। তার ভাষায়- আমাদের চেক তিন মাস পর আসে। তাও নিজের পাওনা পেতে মানুষের কাছে ভিক্ষার মতো চাইতে হয়। যখন অবশেষে টাকা হাতে পাই, তখনো মনে করিয়ে দেয়া হয় যেন আমরা কোনো বড় উপকার পাচ্ছি। এ কারণেই আমি কাজ বন্ধ করে দিয়েছি।
তার দাবি, সময়মতো পেমেন্ট দাবি করায় এবং সম্মানী চাইতে গিয়ে তিনি ব্ল্যাকলিস্ট হয়েছেন। ‘আমাকে ট্রল করার জন্য পেজগুলোকে টাকা দেয়া হয়। পরিচালকরা মিটিংয়ে আমার ‘খারাপ ইমেজ’ নিয়ে প্রশ্ন করেন, অথচ কাস্ট করার কোনো পরিকল্পনাই থাকে না। তাহলে ডেকে এনে আমার ইমেজ নিয়ে প্রশ্ন করার মানে কী?’
গত বছরের এক ঘটনায় আলিজেহর বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে যে, তিনি এক সহ-অভিনেত্রীর দিকে সিগারেট ছুড়ে মেরেছেন। এ বিষয়ে আলিজেহ বলেন, ঘটনাটি বিকৃত করা হয়েছে। তিনি বলেন, ও আমাকে ধাক্কা দেয়, আমি পড়িনি। তারপর ও আমাকে থাপ্পড় মারে। আমি হতবাক হয়ে যাই। এরপর ও সবার কাছে বলে, আমি সিগারেট ছুড়ে মেরেছি। ক্যামেরায় তখন দৃশ্য ধারণ হচ্ছিল, আমি ক্যামেরাম্যানকে বলি ফুটেজ চালাতে। এমন কিছু হয়নি। তবে তিনি স্বীকার করেন, পরে ওই সহ-অভিনেত্রীর রুমে গিয়ে স্যান্ডেল ছুড়ে মেরেছিলেন। ‘হ্যাঁ, আমি স্যান্ডেল ছুড়েছিলাম। আমি তোমাকে ছুঁতেও চাই না। তুমি ঘৃণ্য।’
ইনস্টাগ্রামে আলিজেহ আরও লিখেছেন, ‘আমি কাউকে আমাকে স্পর্শ করতে দিই না যদি তা দৃশ্যের অংশ না হয়। আগে অনুমতি নিতে হবে। আমি কারও সম্পত্তি নই। তার দাবি, এমন ব্যক্তিগত সীমারেখা রক্ষার জন্যই প্রযোজকরা তাকে কাজ থেকে দূরে সরাতে চান। শেষে তিনি দর্শক ও সহকর্মীদের অনুরোধ করেন, বিশেষ করে নারীদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করতে, যারা পিতৃতান্ত্রিক কর্মক্ষেত্রে লড়াই করছেন।