পার্বত্য চট্টগ্রামের বনে দেখা মিলেছে চিতা বাঘের

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন, ২০২৫
  • ৭৩ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রিপোর্ট:- পার্বত্য চট্টগ্রামের বনে চিতা বাঘের দেখা মিলেছে বলে জানিয়েছে ক্রিয়েটিভ কনজারভেশন অ্যালায়েন্স (সিসিএ) নামের বন্য প্রাণী বিষয়ক একটি সংস্থা। এই সংস্থার বসানো ক্যামেরা ফাঁদে এই ল্যাপার্ড বা চিতা বাঘের ছবি ধরা পড়ে। পার্বত্য চট্টগ্রামের একটি দুর্গম সংরক্ষিত বনে এই মাসে চিতা বাঘটি দেখা গেছে বলে নিশ্চিত করেছেন সংস্থাটির কর্মকর্তারা।

এত দিন পার্বত্য চট্টগ্রামের বনে চিতা বাঘ আছে, সেটা বিভিন্নভাবে গবেষকেরা বলে আসছিলেন। সিসিএর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাহরিয়ার সিজার বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের একটি বনে (নাম প্রকাশ করা হয়নি সংরক্ষণের স্বার্থে) এক চিতার দেখা মিলেছে। সেটা এই জুন মাসের ক্যামেরায় ধরা পড়ে। এক মাস আগে থেকে এই ক্যামেরা সেখানে ট্র্যাপ করা হয়। এখন বিষয়টা নিশ্চিত যে পার্বত্য চট্টগ্রামে চিতা বাঘ এখনো আছে।

ক্রিয়েটিভ কনজারভেশন অ্যালায়েন্সের ফেসবুক পেজে চিতা বাঘের দুটি ছবি দেওয়া হয়। বনের মধ্যে চিতা বাঘটি নিশ্চিন্তে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়। আশপাশে কিছু গাছপালাও দেখা যায়।

বন্য প্রাণীর সঠিক ঠিকানা যাতে না পায় শিকারিরা, সে কারণে এলাকার নাম প্রকাশ করেন না গবেষকেরা। পাহাড়ের বনে এখনো চিতা বাঘের অস্তিত্ব বিদ্যমান বলে নিশ্চিত করেন শাহরিয়ার সিজার। তাঁরা বিভিন্ন সময় স্বল্প সময়ের জন্য বনের ভেতর ক্যামেরা বসিয়ে বন্য প্রাণীর চলাচল পর্যবেক্ষণ করে থাকেন।

শাহরিয়ার বলেন, ‘আমরা ২০১৫ সালে ক্যামেরা ট্র্যাপিংয়ে আরেকটি চিতা বাঘ দেখেছিলাম। এখনো একটা চিতা বাঘ দেখলাম। তবে নিঃসন্দেহে বলা চলে, আগের মতো চিতা ভাগ এখন নেই।’

বাঘবিশেষজ্ঞ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এম মনিরুল এইচ খান বলেন, চিতার সাম্প্রতিক একটা ছবি সিসিএ প্রকাশ করেছে। বিষয়টা সত্যি সুখের। পার্বত্য চট্টগ্রামের বনে চিতা আছে। এটা আবার প্রমাণিত হলো। তবে শিকারিদের দৌরাত্ম্যও কম নয়। যার কারণে সহজে দেখা যায় না তাদের। তবে কতটা কী সংখ্যক রয়েছে, তা বলা কঠিন। যে এলাকায় চিতা বাঘ আছে বলে ধারণা করা হচ্ছে কিংবা চিতা দেখা যাচ্ছে, সেই অঞ্চলে শিকারিদের দৌরাত্ম্য কমিয়ে সংরক্ষণ করার ওপর জোর দিয়েছেন মনিরুল এইচ খান।

যে চিতা বাঘটির ছবি প্রকাশ করা হয়েছে, সেটিকে পূর্ণবয়স্ক মনে করছেন গবেষকেরা। তবে এটা নিয়ে আরও পর্যবেক্ষণ এবং গবেষণা তাঁরা চালিয়ে যাচ্ছেন। এটা পুরুষ না নারী, সেটাও বের করার চেষ্টা করা হচ্ছে। চিতা বাঘটি এই দেশেরই মনে করছেন শাহরিয়ার সিজার।

১৯০৬ সালে কলকাতার ‘দ্য বেঙ্গল সেক্রেটারিয়েট বুক ডিপো’ থেকে ‘অ্যান অ্যাকাউন্ট অব দ্য চিটাগাং হিল ট্র্যাক্টস’ নামে একটি বইয়ে ১৮৯০ থেকে ১৯০১ সাল পর্যন্ত পার্বত্য চট্টগ্রামের বিবরণ ছিল। বইয়ে সাঙ্গু ও মাতামুহুরী অববাহিকার বনাঞ্চলের যেসব প্রাণীর দেখা পেয়েছিলেন, তার মধ্যে চিতা বাঘও ছিল বলে উল্লেখ রয়েছে। বইটির লেখক পার্বত্য চট্টগ্রামের তখনকার ইংরেজ প্রশাসক আর এইচ স্নেইড হাচিনসন।

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com
Website Design By Kidarkar It solutions