ডেস্ক রিপোট:- ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার ভাগ্নি এবং বহুল আলোচিত-সমালোচিত ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিকী নাকি তার রাজনৈতিক কূটচালের মাধ্যমে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস ও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের মধ্যকার বৈঠক ঠেকাতে সক্ষম হয়েছে- বিভিন্ন মহলে এরকম গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে। লেবার নেতা ও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার এমপি টিউলিপ সিদ্দিকের কথায় কান দিয়ে বেকায়দায় পড়তে যাচ্ছেন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বিষয়টি যদি সত্যি হয়, তাহলে এটি হবে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন আওয়ামী লীগের জন্যও অশনিসংকেত- এমনটাই ধারণা রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুস গত ৯ জুন লন্ডনে এসে পৌঁছান। তিনি ব্রিটিশ রাজার আমন্ত্রণে লন্ডনে আসেন এবং ব্রিটিশ রাজার হারমনি অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
লন্ডন আসার আগে তার পক্ষ থেকে জানানো হয়, তিনি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমারের সাথে সাক্ষাৎ করবেন। এদিকে টিউলিপ সিদ্দিক বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুসকে চিঠি পাঠিয়ে হাউজ অফ কমন্সে তার সাথে চা চক্র অথবা ডিনার পার্টির আমন্ত্রণ জানান। কিন্তু বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ডক্টর মোহাম্মদ ইউনুস তা সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেন। এতে অনেকটা হতাশ ও লজ্জায় পড়েন টিউলিপ।
এদিকে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমারের সাথে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ডক্টর মোহাম্মদ ইউনূসের সাক্ষাতের বিষয়টি অনেকটা নিশ্চিত থাকলেও প্রধান উপদেষ্টা লন্ডন পৌঁছার পর সেটা নিয়ে দেখা দেয় অনিশ্চয়তা।
রাজনৈতিক বিভিন্ন মহল থেকে জানা গেছে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূস ও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর মধ্যকার বৈঠক অনুষ্ঠিত হলে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তাদের দোসরদের অর্থপাচারসহ তার ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগের প্রমাণ তুলে ধরা হতো।
এছাড়াও ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুস লন্ডন আসার আগে তার সাথে দেখা করতে টিউলিপ সিদ্দিক এমপি যে পত্র দিয়েছেন, তার বিষয়েও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন এবং তার সাথে দেখা করতে ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূসের অনাগ্রহের কথা ও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন।
নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, টিউলিপ সিদ্দিকীর সাথে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমারের সু-সম্পর্ক থাকায় তিনি কূটচালের মাধ্যমে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীকে ডক্টর মুহাম্মদ ইউনুসের সাথে বৈঠক না করার জন্য বিভিন্ন ধরণের অপকৌশল অবলম্বণ করেন।
ইতোমধ্যে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বৃহস্পতিবার লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টারে যুক্তরাজ্যের হাউস অফ কমন্সের স্পিকার স্যার লিন্ডসে হোয়েলের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন। এর আগে বাকিংহাম প্যালেসে ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে একান্ত বৈঠকে মিলিত হয়েছেন। এছাড়াও যুক্তরাজ্যে সফররত প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন দেশটির বেশ কয়েকজন সংসদ সদস্য।
ফলে টিউলিপ সিদ্দিকীর কূটচালের কারণেই ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সাথে বৈঠক না হলে বেকায়দায় পড়তে পারেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। এতেও বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেলজয়ী ডক্টর মোহাম্মদ ইউনুসের কূটনৈতিক জয় হবে।
এছাড়াও টিউলিপের এই কূটকৌশল এই নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন আওয়ামী লীগের জন্যও অশনিসংকেত হবে বলে ধারণা করছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
একাধিক সূত্র জানিয়েছে, অল্প সময়ের জন্য হলেও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী সাথে বৈঠক করতে এখনও আগ্রহী ড. ইউনূস।