অভিবাসনবিরোধী অভিযানে টালমাটাল লস অ্যাঞ্জেলেস

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় সোমবার, ৯ জুন, ২০২৫
  • ৪৮ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রির্পোট:- অভিবাসনবিরোধী অভিযানে টালমাটাল হয়ে উঠেছে ক্যালিফোর্নিয়ার লস অ্যাঞ্জেলেস শহর। শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া মার্কিন অভিবাসন ও কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (ICE)-এর অভিযান এবং স্থানীয়দের তীব্র প্রতিক্রিয়ার পর পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে মোতায়েন করা হয়েছে ২,০০০ ন্যাশনাল গার্ড সদস্য।

গত এক সপ্তাহে ICE-এর হাতে আটক হয়েছেন অন্তত ১১৮ জন অনিবন্ধিত অভিবাসী। শুধুমাত্র শুক্রবার ও শনিবারে গ্রেপ্তার হয়েছেন ৪৪ জনের বেশি। এসব ঘটনার জেরে Paramount, Compton এবং Downtown LA–তে ছড়িয়ে পড়ে বিক্ষোভ, যেগুলো বেশ কয়েকটি জায়গায় সহিংস রূপ নেয়। সংঘর্ষে ব্যবহৃত হয় টিয়ার গ্যাস, ফ্ল্যাশ ব্যাং, এবং রাবার বুলেট। প্রতিবাদকারীরা এই অভিযানকে “নিষ্ঠুর” এবং “ভীতিকর” আখ্যা দেন।

প্রতিবাদ এবং নিরাপত্তা পরিস্থিতি বিবেচনায় এনে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ‘ন্যাশনাল গার্ড’ মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেন। তবে ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসম এবং লস অ্যাঞ্জেলেসের মেয়র কারেন বাস দুজনই এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে বলেন, এটি “অপ্রয়োজনীয় ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নাটক।”

ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন নিয়ে গভর্নর নিউসম বলেন, “আমাদের রাজ্যে অতিরিক্ত সামরিক শক্তি প্রয়োজন নেই। এটি কেবল আতঙ্ক ছড়াবে।” মেয়র বাস একে “ভিত্তিহীন ষড়যন্ত্রমূলক পদক্ষেপ” বলে অভিহিত করেন।

এদিকে, প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ জানিয়েছেন, লস অ্যাঞ্জেলেসের নিকটবর্তী ক্যাম্প পেন্ডলটনে থাকা মেরিনদের উচ্চ সতর্কতায় রাখা হয়েছে, যদিও এখনই তাদের মোতায়েনের কোনো আনুষ্ঠানিক নির্দেশনা নেই। অনেক বিশ্লেষক আশঙ্কা করছেন, এই সিদ্ধান্ত Insurrection Act প্রয়োগের ইঙ্গিত হতে পারে — যা সাধারণত অভ্যন্তরীণ বিদ্রোহ দমনেই ব্যবহৃত হয়।

ডেমোক্র্যাট নেতারা এই পদক্ষেপের তীব্র সমালোচনা করেছেন। সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স একে “ক্ষমতার ভয়ংকর অপব্যবহার” হিসেবে বর্ণনা করে বলেন, “এটি এক ধরনের কর্তৃত্ববাদী রাষ্ট্রের ইঙ্গিত, যেখানে নাগরিকদের কণ্ঠরোধ করতে সামরিক শক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে।”

অন্যদিকে রিপাবলিকান শিবির দাবি করছে, “আইন-শৃঙ্খলা ফেরাতে ও বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে এটি একটি প্রয়োজনীয় ও সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত।”

রাজনৈতিক উত্তেজনার পাশাপাশি সাধারণ জনগণের মাঝে ছড়িয়ে পড়েছে ভয় ও উদ্বেগ। অভিবাসী সম্প্রদায়ের অনেকেই এখন নিজ নিজ বাড়ি থেকে বের হতে ভয় পাচ্ছেন। এক অভিবাসী নারী সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “আমি প্রতিদিন কাজ করি, কোনো অপরাধ করিনি। তবুও এখন আমাকে ভয় নিয়ে বাঁচতে হচ্ছে।”

এই পরিস্থিতি যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন নীতির ভবিষ্যৎ, নাগরিক অধিকার ও রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার ব্যবহারের প্রশ্নে নতুন বিতর্ক উসকে দিয়েছে। সামনের দিনগুলোতে পরিস্থিতি শান্ত হবে, না আরও উত্তাল হয়ে উঠবে — সেটাই এখন সবার দৃষ্টি কেন্দ্রে। সূত্র- রয়টার্স

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com
Website Design By Kidarkar It solutions