খাগড়াছড়ি:- আসন্ন ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে খাগড়াছড়ির ২৬টি কোরবানির হাটে জমে উঠেছে কেনাবেচা। তবে বড় গরুর প্রতি ক্রেতাদের আগ্রহ কম থাকায় দুশ্চিন্তায় রয়েছেন স্থানীয় খামারি ও কৃষকরা। তুলনামূলক ছোট ও মাঝারি গরুর চাহিদা বেশি থাকায় বড় গরুর দাম প্রত্যাশিত পর্যায়ে উঠছে না।
জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে কৃষক ও খামারিরা গরু নিয়ে হাটে আসছেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জমজমাট হয়ে উঠছে হাট। ক্রেতারা বাজেটের মধ্যে পছন্দের গরু খুঁজতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা হাটে সময় কাটাচ্ছেন।
জেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা যায়, ৯টি উপজেলায় এবার কোরবানির জন্য প্রস্তুত পশুর সংখ্যা ১৯ হাজার ১৬০টি। এর মধ্যে গরু ১২,৮১০টি, ছাগল ৬,১১০টি, ভেড়া ৮০টি ও মহিষ ১৫টি।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. ওমর ফারুক জানান, জেলার চাহিদা পূরণ করে অতিরিক্ত ১,১৬০টি পশু উদ্বৃত্ত থাকবে। সুস্থ ও নিরাপদ পশু ক্রয়ের নিশ্চয়তা দিতে প্রতিটি হাটে ভেটেরিনারি টিম মোতায়েন করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘খাগড়াছড়িতে কৃত্রিম ওষুধ ছাড়া প্রাকৃতিক উপায়ে পশু মোটাতাজাকরণ হয়, যা সমতলের ক্রেতাদের আকৃষ্ট করে।’
গঞ্জপাড়া এলাকার কৃষক নুরুল আলম বলেন, ‘১২টি গরু লালনপালন করেছি। খড় ও অন্যান্য খরচ বেশি হওয়ায় দামে কুলাচ্ছে না, বিক্রিও হচ্ছে না—চিন্তায় আছি।’
কমলছড়ি এলাকার খামারি সুমন চাকমা বলেন, ‘বড় গরুর চাহিদা কম, ফলে দামও কম। লোকসানের আশঙ্কা করছি।’
সাতভাইয়া পাড়ার খামারি মংগ্রী মারমা বলেন, ‘২০টি বড় গরুর মধ্যে মাত্র দুটি বিক্রি করেছি, সেটাও প্রত্যাশার চেয়ে কম দামে।’
তাইন্দং থেকে আসা ক্রেতা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বাজারে পশুর সরবরাহ পর্যাপ্ত। ছোট আকারের গরু ৭০-৮০ হাজার, মাঝারি ৯০ হাজার থেকে দেড় লাখ, বড় গরু ১ লাখ ২০ হাজার থেকে আড়াই লাখ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।’
খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আরেফিন জুয়েল বলেন, ‘পশুবাহী ট্রাক ও বিক্রেতারা যেন চাঁদাবাজি ও হয়রানির শিকার না হন এবং জাল টাকা রোধে পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।’