রাঙ্গামাটি:- বঙ্গোপসারে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে পাহাড়ি জেলা রাঙ্গামাটিতে চলছে ভারী বর্ষণ। টানা বর্ষণে বেড়েছে পাহাড়ধসের ঝুঁকি। শুক্রবার সকালে রাঙ্গামাটি শহরের যুব উন্নয়ন এলাকায় পাহাড়ের মাটি ধসে পড়েছে ঘরের ওপর। অধিকতর ধস এড়াতে ত্রিপল দিয়ে ঢেকে দেয়া হয়েছে স্থানটি। এদিকে বৈরী আবহাওয়ার কারণে মানুষের জানমাল রক্ষায় জেলা প্রশাসন কাপ্তাই হ্রদে নৌ চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন।
শুধু যুব উন্নয়ন এলাকাই নয়; ছোট ছোট ধস হয়েছে লোকনাথ মন্দির সংলগ্ন, মোনাদাম এলাকায়। মাটি রক্ষার জন্য দেয়া বস্তা ধসে ঢুকে গেছে ঘরের ভিতর। রাঙ্গামাটি-চট্টগ্রাম সড়কে উপজেলা পরিষদের সামনে আর্মি ক্যাম্পে সৌন্দর্যবর্ধনকারী কৃষ্ণচূড়া গাছটি ভেঙ্গে পড়েছে। এতে সাময়িক সময় যান চলাচলে সমস্যা সৃষ্টি হলেও ফায়ার সার্ভিসের দ্রুত পদক্ষেপে দ্রুতই যান চলাচল স্বাভাবিক হযে আসে। রাত থেকে টানা বৃষ্টি থাকলে তবুও অধিকাংশ আশ্রয়কেন্দ্র পড়ে আছে ফাঁকা। আশ্রয়কেন্দ্রে আসা লোকজনদের খাবারসহ সকল ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। শুধুমাত্র লোকনাথ মন্দির আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছেন ১৪ পরিবারে ৬২ জন মানুষ। রাতে আশ্রয়কেন্দ্রে আসলেও দুপুর পর্যন্ত খাবার না পাওয়ার অভিযোগ তাদের।
লোকনাথ মন্দির আশ্রয় কেন্দ্র অবস্থান করা মনোয়ারা বেগম জানান, রাতে বাসা থেকে খেয়ে আশ্রয় কেন্দ্রে আসি। সকাল গড়িয়ে দুপুর হলো এখানো কোন খাবার দেয়নি। বাচ্চাদের নিয়ে আছি। সারা রাত অনেক বৃষ্টি হয়েছে। আমাদের বাড়ির আশপাশের কিছু মাটি সরে গেছে। বাসায় চলে গেলে আবার ভয়ও করে।
একই আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান করা আইয়ুব খান একই অভিযোগ করে বলেন, রাতে আসার পরও বিভিন্ন লোকজন খোঁজ নিচ্ছে, তবে কেউ খাবার দেয়নি এখানো। জেলা প্রশাসন থেকে সব ব্যবস্থা করবে বলা হলেও কিছুই পাচ্ছি না।
রাঙ্গামাটি সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার রিফাত আসমা বলেন, রাঙ্গামাটি সদর ২৫টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হলেও শুধু লোকনাথ মন্দির আশ্রয় কেন্দ্রে ১৪ পরিবারে ৬২ জন মানুষ অবস্থান করছেন। তালিকা অনুযায়ী আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থানকারীদের দুপুর ও রাতের খাবারের পাশাপাশি শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক মো. হাবিব উল্লাহ বলেন, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত মোতাবেক রাঙ্গামাটিতেও মানুষের জান মালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নৌপথে সকল নৌযান চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বন্ধের এই সিদ্ধান্ত ইতোমধ্যে সকলকে অবহিত করা হয়েছে।
স্থানীয় আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের তথ্য বলছে, শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত রাঙ্গামাটিতে গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল ৪৮ মিলিমিটার।পাহাড়২৪