ডেস্ক রির্পোট:- রাউজানে ইফতার মাহফিলকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। মাহফিলে একজন গুলিবিদ্ধসহ উভয় পক্ষের ১১জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া অগ্নিসংযোগ করে পাঁচটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়া হয়। স্থানীয়রা জানান, বিএনপির বিবদমান দুটি গ্রুপের বিরোধের ধারাবাহিকতায় এই ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে নোয়াজিষপুর ইউনিয়নে। গতকাল বুধবার নোয়াজিশপুর ইউনিয়ন বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল ও অঙ্গ সংগঠনের ব্যানারে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করেছিল বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য গোলাম আকবর খন্দকারের অনুসারীরা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হামলায় যুবদল কর্মী মো. কাইয়ুম (২৮) নামে গোলাম আকবর খন্দকারের এক অনুসারীর কপালে গুলি লাগে এবং প্রতিপক্ষের কিরিচের কোপে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারী গাজী মোরশেদের ভুঁড়ি বের হয়ে যায়। আহতরা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাদের অবস্থা বেশ আশংকাজনক বলে জানা গেছে। এছাড়া গেলাম আকবর খন্দকারের নেতাকর্মীদের মধ্যে আহতরা হলেন, অর্জুন কুমার নাথ (৪৮), ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. নুরুল হুমায়ুন (২৮), যুবদলের সদস্য মো. রিফাত (২৭), যুবদলের সদস্য সচিব মো. সোহেল, বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফোরকান সিকদার (৪৪), বিএনপি নেতা জাহাঙ্গীর আলম। অপরদিকে গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারী নেতাকর্মীদের মধ্যে আহত হন সেকান্দর, বাদশা, ফোরকান।
বিএনপি উপজেলা আহ্বায়ক জসিম উদ্দিন (গোলাম আকবর খন্দকার গ্রুপ) বলেন, নোয়াজিশপুর ইউনিয়ন বিএনপির পূর্বনির্ধারিত সময়সূচিতে তাদের ইফতার মাহফিল ছিল স্থানীয় আবদুল অদুদ চৌধুরী ঈদগাহ মাঠে। মাহফিল চলাকালে একদল সন্ত্রাসী অর্তকিতে লাঠিসোটা ও অস্ত্র নিয়ে ইফতার মাহফিলে হামলা চালায়। তারা ইফতার আয়োজন পণ্ড করে দেয়। এসময় স্থানীয় যুবদলকর্মী আবদুল কাইয়ুমের মাথায় গুলি লাগে। অনুষ্ঠান থেকে আতংকিত নেতাকর্মীরা ফিরে যাওয়ার সময় গহিরা চৌমুহনী এলাকায় সন্ত্রাসীরা চেকপোস্ট বসিয়ে আবার তাদের ওপর হামলা করে। সেখানে গোলাম আকবর খন্দকারের ব্যক্তিগত সহকারী অঞ্জুন নাথকে ধরে নিয়ে বেধড়ক পিটুনি দেয়। গুলিবিদ্ধ কাইয়ুম ও অঞ্জুন নাথকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এই হামলার ঘটনার জন্য তিনি বিএনপির গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর গ্রুপকে দায়ী করে বলেন, এই ঘটনায় তারা মামলা করবেন।
অন্যদিকে গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর অনুসারীর মধ্যে দিাদারুল আলম ও সেলিম উদ্দিন বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আমরা চিকদাইর ইউনিয়নে দলীয় ইফতার মাহফিলে যাওয়ার সময় গোলাম আকবর খান্দকারের চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা গুলি চালায়। আমরা পালিয়ে রক্ষা পাই। পরে ইফতার মাহফিল শেষ করে নোয়াজিশপুর আসার পথে আবারও হামলা চালানো হয়। তারা ধারালো কিরিচ দিয়ে আমাদের এক কর্মীকে কুপিয়ে জখম এবং আরও তিনজনকে আহত করা হয়। আমাদের ৫টি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়া হয়। বেশ কয়েকজনের স্মার্টফোন ছিনিয়ে নেওয়া হয়।
রাউজান থানার ওসি মনিরুল ইসলাম ভুইয়া নোয়াজিশপুরের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, পুলিশ এ বিষয়ে কাজ করছে। ঘটনাস্থলে যাওয়া পুলিশ সদস্যরা মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়ার আলামত পেয়েছে।