শিরোনাম
রাঙ্গামাটিতে ফার্মেসির মালিক পাপ্পু ঘোষের আত্মহত্যা রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে কলেজছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ ট্রাইব্যুনাল আছে, বিচারক নেই বিচার প্রক্রিয়ায় ধীরগতি,ত্রয়োদশ নির্বাচন বিলম্বের কৌশল? চার্জশিট নেই জুলাই-আগস্ট হত্যা মামলার :: গায়েবি মামলার হাজিরা অব্যাহত যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন, দুই দিনে হাজার ফিলিস্তিনিকে হত্যা করল ইসরাইল ধর্ষণের গোলাপ ফুলের নাম… বান্দরবানে কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার ৪ রাউজানে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ইফতার মাহফিল পণ্ড,গুলিবিদ্ধ-১,কিরিচের কোপে ভুঁড়ি বের হল একজনের,অগ্নিসংযোগ রাঙ্গামাটিতে চার সন্তানের জননীকে ধর্ষণ চেষ্টায় যুবক গ্রেফতার রাঙ্গামাটিতে সেনা জোনের পক্ষ থেকে ইফতার সামগ্রী বিতরণ

বিচার প্রক্রিয়ায় ধীরগতি,ত্রয়োদশ নির্বাচন বিলম্বের কৌশল? চার্জশিট নেই জুলাই-আগস্ট হত্যা মামলার :: গায়েবি মামলার হাজিরা অব্যাহত

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ, ২০২৫
  • ২৪ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রির্পোট;- ডিসেম্বরেই নির্বাচন। প্রধান উপদেষ্টার মুখনিঃসৃত এমন স্পষ্ট টাইমলাইন ঘোষিত হয়েছে সম্প্রতি। কিন্তু এখনো স্পষ্ট হয়নি নির্বাচনের কার্যকর কোনো লক্ষণ বা আলামত। ঘোষিত সময়ে নির্বাচন দেয়ার তেমন কোনো নমুনাও দৃশ্যমান নয়। উৎখাত হওয়া হাসিনা আমলের চেয়ে বিদ্যমান অবস্থা কতটা ‘উন্নত’ এমন প্রশ্ন উঠছে এখন। বিশেষত মামলা পরিস্থিতি। হাসিনা আমলে দেয়া মামলায় এখনো কোর্টের বারান্দায় নিয়মিত হাজিরা দিতে হচ্ছে রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের। হুলিয়া মাথায় নিয়ে এখনো এ আদালত থেকে অন্য আদালতে ছুটছেন হাজার হাজার নেতাকর্মী। এসব মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি কিংবা প্রত্যাহারের বিশেষ উদ্যোগ নেই। পক্ষান্তরে ৫ আগস্ট হাসিনা উৎখাতের পর ছাত্র-জনতাকে হত্যা, হাসিনা আমলে গুম-খুন ও দুর্নীতির অভিযোগে দায়েরকৃত কোনো মামলার বাস্তবিক বিচার শুরু হয়নি। খুনি ও লুটেরাদের কারো শাস্তি নিশ্চিত করা যায়নি। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আসামিদের হাজির করা হচ্ছে। দীর্ঘ সময় পর দেয়া একেকটি তারিখে গণহত্যার আসামি ও হাসিনার দোসরদের আনা-নেয়া হচ্ছে। কারাগার থেকে ট্রাইব্যুনালে ওঠানো-নামানোর সময় আসামিদের আচার-আচরণ, বক্তব্য, ইঙ্গিতপূর্ণ সংলাপ নানা মাত্রায় প্রচারের বিষয়বস্তু হচ্ছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। ট্রাইব্যুনালের কাজে সহযোগিতা করতে গত ডিসেম্বরে বিতর্কিত অ্যাডভোকেট এহসানুল হক সমাজীকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় স্পেশাল প্রসিকিউটোরিয়াল অ্যাডভাইজার নিয়োগ দিয়েছে। তিনি কী করছেন-মানুষ জানে না। অথচ জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতা হত্যাকারীদের দ্রুত বিচার করা ছিল অন্তর্বর্তী সরকারের অগ্রাধিকারভিত্তিক প্রতিশ্রুতি। এ বিচারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আগামী নির্বাচন। বিচার ছাড়া নির্বাচন হলে দেখা যাবে ছাত্র-জনতা হত্যাকারীরাই কারাগারে থেকে নির্বাচনে অংশ নেবে। দলীয় না হোক স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশ নিতে আইনগত কোনো বাঁধা থাকবে না। ফ্যাসিস্ট-খুনিরাই যদি নির্বাচনে অংশ নেয়-তাহলে কেন এই অভ্যুত্থান? কেনই বা এত রক্তপাত?

প্রাপ্ত তথ্য বলছে, হাসিনার মাফিয়াতন্ত্রে অকারণেই মামলা হতো। রাজনৈতিক প্রতিক্ষপ বিএনপি-জামায়াতকে দমন করার প্রধান কৌশলই ছিল মামলা করা। গ্রেফতার করে কারাবন্দি রাখা। আয়নাঘরে বন্দি, গুম-খুন তো আছেই। সে সময় গুনে-বেছে মামলা দেয়া হয়নি। এসি সিলিন্ডার বার্স্ট হলেও মামলা হতো বোমা হামলার। টায়ার ফাটার বিকট শব্দকে কাজে লাগানো হতো ‘বোমা বিস্ফোরণ মামলা’ দায়েরে। কোনো ঘটনাই ঘটেনি-তার পরও দায়ের করা হয় হাজার হাজার গায়েবি মামলা। এমনও দিন গেছে, হাসিনাবিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে এক দিনেই দায়ের হয়েছে সাত-আটশ’ মামলা। এসব মামলায় আসামি করা হয়েছিল ৪০ লাখেরও বেশি মানুষকে। দায়েরকৃত অনেক ‘গায়েবি’ মামলাই পরে আর ‘গায়েবি’ থাকেনি। সেগুলোর ‘তদন্ত’ হয়েছে। বহু রাজনৈতিক নেতাকর্মী, এমনকি নিরীহ মানুষকে চার্জশিটভুক্ত আসামি করা হয়েছে। মামলা রুজুর সময় ‘অজ্ঞাতনামা’ আসামি রাখা হলেও অনেক ব্যক্তিকে মামলায় ঢুকিয়ে দেয়া হতো। সেই মামলাগুলোর এখন কী অবস্থা?

গত ১১ ফেব্রুয়ারি আইন, বিচার ও সংসদ-বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল জানিয়েছিলেন, হাসিনা আমলে নিপীড়নের উদ্দেশ্যে দায়েরকৃত ১৬ হাজার ৪২৯টি ‘গায়েবি মামলা’ প্রত্যাহার করা হবে। এর মধ্যে পরবর্তী সপ্তাহের মধ্যে প্রত্যাহার করা হবে এক হাজার ২১৪টি মামলা। গায়েবি মামলা দায়েরে এক মুহূর্ত বিলম্ব না হলেও সেগুলো প্রত্যাহারে কেন সময় লাগছে, এর উত্তরও তিনি দিয়েছিলেন সেদিন। বলেছিলেন, ‘গায়েবি মামলা’র তালিকা করার পর প্রত্যেকটি মামলার রেকর্ড ঘেঁটে আমাদের দেখতে হচ্ছে, মামলাটি জেনুইনলি রাজনৈতিক হয়রানিমূলক, গায়েবি মামলা কি-না। নাকি এটি কোনোরকম অনিয়ম বা কারচুপি করে ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যক্তির মামলা ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে। ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যক্তির হত্যা মামলা তো প্রত্যাহার করতে পারি না। প্রতিটি মামলা রেকর্ড দেখে নিশ্চিত হয়ে প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে।

হত্যা মামলাগুলোর দ্রুত নিষ্পত্তি হওয়া জরুরি। কারণ, এসব মামলা আগামী জাতীয় নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। একদিকে হাসিনা সরকার আমলের সকল হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা সাত মাসেও প্রত্যাহার না হওয়া। অন্য দিকে জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতা হত্যা, দেড় দশকের গুম-খুন ও দুর্নীতির মামলার অদ্যাবধি শাস্তি না হওয়া আগামী জাতীয় নির্বাচনকে অসম্ভব করে তুলবে। উভয় ধরনের মামলা নিষ্পত্তিতে কালবিলম্ব আগামী নির্বাচনকেই বিলম্বিত করার কৌশল কি-না, এমন সন্দেহ করছেন বিশ্লেষকরা।

অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র জেলা জজ ও আইনজ্ঞ মো. মঈদুল ইসলাম বলেন, যে পরিস্থিতি দাঁড়িয়েছে তাতে দুই ধরনের মামলাই আগামী জাতীয় নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে। সাত মাসে গায়েবি মামলা এবং ৫ আগস্টের পর দায়ের হওয়া হত্যা মামলার কাজগুলো ত্বরান্বিত করা যুক্তিসঙ্গত ছিল। গায়েবি মামলা চিহ্নিত করে সেগুলো প্রত্যাহারে সাত মাস যথেষ্ট সময়। একইভাবে ৫ আগস্টের পর দায়ের হওয়া মামলাগুলোর তদন্ত সম্পন্ন করার জন্যও এ সময় যথেষ্ট। এখন পর্যন্ত যে অবস্থা, তাতে কবে এসবের বিচার হবে?

প্রসিকিউটোরিয়াল পরামর্শ দেয়ার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একজন সিনিয়র আইনজীবীকে নিয়োগ দিয়েছে। কি জন্য তাকে নিয়োগ দেয়া হলো? তার কী কাজ? নিয়োগ দানের পর গত কয়েক মাসে তিনি কী কাজ করেছেনÑ মানুষ জানে না। আমরা বরং দেখছি, একজন আসামিকে এক মামলা থেকে আরেক মামলায় শ্যোন আরেস্ট করা হচ্ছে। মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে যে ট্রাইব্যুনাল করা হয়েছে সেখানে একটি চার্জশিটও দাখিল হয়নি। তাহলে বিচারের যে বিষয় সেটি তো দূরকি বাত। বিচার না করলে আগামী নির্বাচনে গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে যারা প্রার্থী হতে চান তাদের আটকানোর আইনগত কোনো পথ থাকবে না। এ কারণে উভয় ধরনের মামলা এবং বিচার আগামী নির্বাচনের সঙ্গে সম্পর্কিত।

উভয় ধরনের মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি না হওয়াকে আগামী নির্বাচনের ‘অন্তরায়’ বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির আইন-বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। তিনি বলেন, প্রথম যে বিষয়টি অ্যাড্রেস করা দরকার, ফ্যাসিস্ট রেজিমবিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের গণতান্ত্রিক আন্দোলন করতে গিয়ে যেসব রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলার আসামি হলেন, কষ্টের এবং দুঃখের জায়গাটা হলোÑ আজকে যারা রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে, তারা কিন্তু গত ১৫-১৬ বছরে কোনো মামলা মুখোমুখি হননি। এ সময় রাজপথে যারা ছিলেন তারা বিরামহীন মামলা-হামলার শিকার হয়েছেন। ছাত্র-জনতা নেতৃত্ব দিয়েছে। এটি ঠিক আছে। কিন্তু এটি এক দিনে হয়নি। এ প্রেক্ষাপটে হাসিনাকে পালাতে বাধ্য করেছে। এ বিষয়টির সম্মান দেয়া দরকার। যাদের ত্যাগের বিনিময়ে, যাদের রক্তের বিনিময়ে আজকে যারা আইনমন্ত্রণালয়ে-স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বসে আছেন। আমরা কমবেশি প্রত্যেকের ব্যাকগ্রাউন্ড আমরা জানি। তাদের প্রতি সম্মান রেখেই একটি অনুরোধ জানাতে চাই অনতিবিলম্বে যারা ফ্যাসিস্টবিরোধী আন্দোলন করতে গিয়ে হয়রানিমূলক মামলার শিকার হয়েছেন তাদের মামলা প্রত্যাহার করুন। ‘আনুমানিক কতগুলো হয়রানি মূলক মামলা রয়েছে?’ প্রশ্নে কায়সার কামাল বলেন, শেখ হাসিনা তো গুনেবেছে মামলা দায়ের করেননি। আপনারা যেটিকে ‘গায়েবি মামলা’ বলছেন, এ মামলাগুলো পরে আর ‘গায়েবি’ থাকেনি। তারা ‘অজ্ঞাতনামা আসামি’দের জায়গা রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের নাম বসিয়ে চার্জশিট দিয়েছেন। বিচারও শুরু হয়েছে। যদ্দূর মনে পড়ে, ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে এক দিনে ১০০ মামলা করেছেন। ২১ অক্টোবর এক দিনে ৬০০ মামলা দায়ের হয়েছিল। যারা ভুক্তভোগী তারাই বোঝেন মামলার কী যন্ত্রণা। বর্তমানে যারা রাষ্ট্রক্ষমতায় আছেন তাদের বিষয়ে কিছু বলতে চাই না। শুধু অনুরোধ করব যারা মামলা-হামলার শিকার হয়েছেন তাদের কষ্টগুলো হৃদয়াঙ্গম করা উচিত। এই যে কষ্টটা, তারা যে নিপীড়নের শিকার হয়েছেন তাদের অনতিবিলম্বে মামলাগুলো প্রত্যাহার করুন।

আমরা অত্যন্ত উদ্বিগ্ন আরেকটি বিষয়ে। বিগত ফ্যাসিস্ট আমলে দায়ের করা মামলাগুলো যেমন প্রত্যাহার বা নিষ্পত্তি হচ্ছে না, একইভাবে ৫ আগস্টের পর যেসব মামলা দায়ের করা হয়েছে সেগুলোর আইনগত তেমন উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি দেখছি না; বরং সেই মামলাগুলো একটি ভেস্টেট কোয়ার্টার, বিতর্কিত করার জন্য অনেকগুলো উপাদান নিয়ে আসছে। ট্রায়াল শুরু তো দূরে থাক সেগুলো মামলাগুলো চলবে কি চলবে নাÑ এটি যাচাইয়ের জন্য স্পেশাল টিম গঠন করা হয়েছে। একজন স্পেশাল পিপি নিয়োগ করা হয়েছিল। যে পিপিকে আইনজীবী সমাজ গ্রহণ করতে পারেনি। আইন মন্ত্রণালয় তার নিয়োগ প্রত্যাহার করেছে। পরবর্তীতে তাকেই আবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মামলা দেখাশোনার জন্য সেল গঠন করে সেখানে তাকে বসানো হয়েছে।

আইনজীবী হিসেবে এবং সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমরা আরো উদ্বিগ যে, গত ৫ আগস্টের পর দায়ের হওয়া হত্যা মামলাগুলোর প্রকৃত অর্থে বিচার বা আলোর মুখ দেখবে কি-না। কারণ মামলা দায়েরের দিন থেকেই মামলাগুলো নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করা হচ্ছে সুপরিকল্পিতভাবে। যারা এ সমালোচনাগুলো করছে তারা কিন্তু হাসিনার আমলে দায়ের করা হাজার হাজার গায়েবি মামলা নিয়ে কোনো দিন একটি কথাও বলেনি। এ প্রেক্ষিতে আমরা উদ্বিগ্ন যে, মামলাগুলো সহসাই একটি যৌক্তিক পরিণতির দিকে যায় কি-না।

এটি নিশ্চিত যে, বাংলাদেশের মানুষ একটি সুশাসন চায়। আইনের শাসন চায়। এটি প্রতিষ্ঠার একমাত্র সোপান হচ্ছে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন। অনেকে তুলনা করেন, বিরোধী দল বা রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচন চায়। তারা বলছেন, নির্বাচিত সরকার কেমন হয় আমরা সেটি অতীতে দেখেছি। তাদের প্রতি সম্মান রেখে বলব, আপনারা কোনো নির্বাচিত সরকার দেখেননি। আপনারা হাসিনার শাসন দেখেছেন। হাসিনার সরকার কখনো নির্বাচিত সরকার ছিল না। আগামী নির্বাচনের সঙ্গে যারা হাসিনার কথিত নির্বাচনের তুলনা দেন আমি বলব, তারাও হাসিনার দোসর। কারণ হাসিনার আমলে কোনো নির্বাচন হয়নি। ২০১৪ সালে ১৫৪ জন ব্যক্তিকে শপথ পড়ানো হয়েছে গেজেটের মাধ্যমে। ২০১৮ সালে কি হয়েছে আমরা সবাই জানি। অতএব, যারা বলেন যে, নির্বাচিত সংসদের রূপ-বৈশিষ্ট্য কেমন হয় আমরা সেটি দেখেছি, আমি বলবÑ দেশের গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার জন্য এটি আরেকটি ষড়যন্ত্র। আরেকটি চক্রান্ত। আমরা বারবার একটি কথা বলি। বর্তমান সরকার রাজনৈতিক দলের মনোনীত সরকার। গ্রহণযোগ্য সরকার। কিন্তু জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার নয়। বাংলাদেশের মানুষ চায় জনগণ দ্বারা নির্বাচিত সরকার। যে নির্বাচিত হবেন তিনিই দায়িত্ব পালন করবেন। আমরা তো বলছি না অমুক দল তমুক দল সরকার গঠন করবে। মানুষকে সিদ্ধান্ত নিতে দেয়া উচিত যে, তারা কাকে সরকার গঠনের জন্য নির্বাচিত করে। অনেক কষ্ট লাগে যখন দেখি শত সহ মানুষ জীবন দিয়েছে। রক্ত দিয়েছে। আজকে তুলনা করা হয় যে, শেখ হাসিনার নির্বাচনের সঙ্গে তুলনা করা হয়। শেখ হাসিনার আমলে তো নির্বাচন হয়নি। প্রহসন হয়েছে। আমরা আগামী নির্বাচন দেখতে চাইছি সব দলের অংশগ্রহণে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত পার্লামেন্ট।

৫ আগস্টের পর দায়েরকৃত মামলাগুলোর প্রক্রিয়া নিয়েও আমরা উদ্বিগ্ন। লক্ষ করুন, ৫ আগস্টের পর দায়ের হওয়া কোনো একটি মামলার চার্জশিট হয়নি। স্পষ্টত কোনো অগ্রগতি নেই। এখন দেখাচ্ছেন অমুককে ধরেছি, তমুককে কোর্টে হাজির হতে বলেছি। এগুলো দেখে হয়তো অনেকে অনেক কিছু মনে করতে পারেন। কিন্তু এমনও হতে পারে, এসব আইওয়াশও। সাক মাস হয়ে গেলো, কোনো একটি মামলার চার্জশিট কিন্তু দেয়নি! পুলিশের দায়িত্বটা কি? চার্জশিট দেয়া। চার্জশিট দিচ্ছে না কেন কোনো মামলার? কেমন করে দেবে? মামলাগুলো পরিচালনার জন্য একটি স্পেশাল কমিটি গঠন করা হয়েছে শুনলাম। স্পেশাল কমিটিতে যারা নেতৃত্বে আছেন, দায়িত্বে আছেন তাদের নিয়েই তো জনমনে প্রশ্ন রয়েছে। তাদের পিতা আ.লীগের এমপি ছিলেন। এমন অনেক প্রশ্ন আছে তো। এ বিষয়গুলো অ্যাড্রেস করতে হবে। আমরা মনে করছি, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা এবং আগামী নির্বাচন প্রশ্নে এ বিষয়গুলো অন্তরায়।ইনকিলাব

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com
Website Design By Kidarkar It solutions