শিরোনাম
রাঙ্গামাটির কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের দ্বিতীয় বারের মতো বন্ধ করে দেওয়া হলো ১৬ টি জলকপাট রাঙ্গামাটিতে সাবেক রেড ক্রিসেন্ট কর্মকর্তা রাসেল রানাকে ফুলেল শুভেচ্ছায় রাঙ্গামাটির ভেদভেদী নতুনপাড়ার রাস্তা ও মসজিদের গার্ডওয়ালের কাজ ১৭ বছরেও হয়নি চরম দুর্ভোগে এলাকাবাসী উইন স্টার ক্লাবের নেতৃত্বে শাহিন -দিদার- সুমন হাসিনার উসকানিমূলক বক্তব্য প্রচার করলে তাৎক্ষণিক আইনি ব্যবস্থা খাগড়াছড়িতে নৃশংস হত্যাকান্ড: নিজ ঘরে মা-মেয়ের গলা কেটে হত্যা বান্দরবানে ৫ বন্ধু মিলে পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণ, আটক-৩ ১৬ বছর পর হারানো ক্ষমতা ফিরে পাচ্ছে সশস্ত্র বাহিনী নাইজেরিয়ায় ফজরের নামাজের সময় ভয়াবহ হামলায় নিহত অন্তত ২৭ দিল্লিতে শেখ হাসিনার জন্য রাজনৈতিক কার্যালয়

বিডিআর ম্যাসাকার, অন্যতম সন্দেহভাজন কর্নেল শামস

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
  • ১৪৩ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রির্পোট:- বিডিআর সদর দপ্তর রাজধানীর পিলখানায় ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি সকালে অস্ত্রাগার খুলে দিয়ে বিডিআরের বিপথগামী সদস্যদের হাতে অস্ত্র ও গোলাবারুদ তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন তৎকালীন ৪৪ রাইফেলস ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল শামসুল আলম চৌধুরী। তিনি কর্নেল শামস নামে পরিচিত। এই সেনা কর্মকর্তা বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল।

পিলখানায় দুদিনের (২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০০৯) হত্যাকাণ্ড ও বিদ্রোহে জড়িতদের অন্যতম সন্দেহভাজন এই কর্মকর্তা ওইদিন বিডিআর অস্ত্রাগারের দায়িত্বে ছিলেন। বিদ্রোহের জন্য এর আগে যে লিফলেট ছাড়া হয়, সেটির খসড়া তিনি তৈরি করেন এবং সুকৌশলে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ছড়িয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। নৃশংস হত্যাকাণ্ডে তার ব্যাটালিয়নই মুখ্য ভূমিকা পালন করেছে।

২৫ ফেব্রুয়ারি বিডিআর দরবার শুরু হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যে ৪৪ ব্যাটালিয়নের সদস্য সিপাহি মঈন একটি অস্ত্র নিয়ে মঞ্চে উঠে বিডিআরের ডিরেক্টর জেনারেল (ডিজি) মেজর জেনারেল শাকিলের মাথায় তাক করেছিলেন। একজন অফিসার তাকে নিরস্ত্র করেন। সিপাহি মঈনের হাতে থাকা অস্ত্রটি দেখে বিডিআর ডিজি তখন কর্নেল শামসকে লক্ষ্য করে বলেছিলেন, ‘শামস, এই অস্ত্র তোমার ব্যাটালিয়নের।’

অনুসন্ধানে এই তথ্য বেরিয়ে এসেছে। অনুসন্ধানে জানা যায়, নৃশংস বিডিআর হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড ছিলেন স্বয়ং তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’-এর সরাসরি তত্ত্বাবধানে এই ম্যাসাকার সংঘটিত হয়। আর এই ষড়যন্ত্রমূলক পরিকল্পনা বাস্তবায়নে তাদের সঙ্গে জড়িত ছিলেন কর্নেল শামস। পরিকল্পনা বাস্তবায়নের বিষয়ে তিনি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর ইশারায় কাজ করেছেন এবং তার সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করেছেন।

আওয়ামী লীগ নেতা শেখ সেলিম, ফজলে নূর তাপস, জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং মির্জা আজমের সঙ্গেও তার যোগাযোগ ছিল এবং ৪৪ ব্যাটালিয়নের আস্থাভাজন বিডিআর সদস্যদের তিনি তাদের সঙ্গে বৈঠক করান। কর্নেল শামসের দেওয়া তথ্যের প্রেক্ষিতেই প্রধানমন্ত্রী পিলখানায় তার পরবর্তী কর্মসূচি বাতিল করেন। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী এর আগে ২৪ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় রাইফেলস সপ্তাহ উদ্বোধন করেন।

উল্লেখ্য, ২০০৯ সালের চাঞ্চল্যকর বিডিআর হত্যাকাণ্ডটি ছিল একটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। সংশ্লিষ্ট নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের দেওয়া তথ্যমতে, ওয়ান ইলেভেন ছিল এই ষড়যন্ত্রেরই প্রথম ধাপ। শেখ হাসিনা ও প্রতিবেশী ভারতের যৌথ ষড়যন্ত্রেই এই ঘটনাগুলো ঘটে। ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি এবং সাবেক পররাষ্ট্র সচিব সুজাতা সিংয়ের প্রকাশ্য ভূমিকাই এর প্রমাণ।

প্রণব মুখার্জি তার আত্মজীবনীমূলক বইয়েও ওয়ান-ইলেভেনে এবং শেখ হাসিনার ক্ষমতায় আসা নিয়ে লিখেছেন। অতীতে দেখা গেছে, এ ধরনের দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রগুলো বাস্তবায়নের পথে সব সময় প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়ায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও বিডিআর। তারা নানা পদক্ষেপ নিয়ে ষড়যন্ত্র ভণ্ডুল করে দিয়েছে। এজন্য ভারতের পক্ষ থেকে পরিকল্পিতভাবেই সেনাবাহিনী ও বিডিআরকে দুর্বল বাহিনী করে রাখার জন্য ষড়যন্ত্র করা হয়।

বিডিআর হত্যাকাণ্ডের আগে ডানপন্থি ও দেশপ্রেমিক চৌকস অফিসারদের বিডিআর-এ বদলি করে জড়ো করা হয়। এরপর পরিকল্পিত ওই ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে তাদের হত্যা করা হয়। বিডিআর হত্যাকাণ্ডে ৫৭ সেনা কর্মকর্তাকে হত্যা করা হয়, যারা ছিলেন সেনাবাহিনীর অত্যন্ত চৌকস অফিসার। এমন হত্যাকাণ্ড ইতিহাসে নজিরবিহীন।

বিডিআর হত্যাকাণ্ডের পর সচিব আনিস-উজ জামানের নেতৃত্বে জাতীয় যে তদন্ত কমিটি হয়, সেই তদন্ত কমিটির রিপোর্টেও এ ঘটনার অন্যতম সন্দেহভাজন হিসেবে কর্নেল শামসের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়, ‘বিডিআর বিদ্রোহ ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় অধিনায়ক কর্নেল শামসসহ ৪৪ রাইফেলস ব্যাটালিয়নের সদস্যদের ভূমিকা সন্দেহজনক। ঘটনার সূচনালগ্নে সরাসরি নেতৃস্থানীয় ভূমিকা পালনকারী বিডিআরের ডিএডি, জেসিও এবং সৈনিকদের ইউনিটভিত্তিক তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, তাদের অনেকেই ৪৪ রাইফেলস ব্যাটালিয়নের সদস্য।

তদন্তের বিভিন্ন পর্যায়ে তদন্ত কমিটির কাছে প্রতীয়মান হয় যে, ঘটনার আগে ৪৪ রাইফেলসের মাঠে ও সৈনিক লাইনে বিদ্রোহীরা একাধিক সভা করেছেন। বিদ্রোহে সংশ্লিষ্ট কিছু বেসামরিক ব্যক্তি, যেমন বিডিআরের সাবেক সদস্য তোরাব আলী ও তার ছেলে লেদার লিটন বিদ্রোহীদের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ ও ষড়যন্ত্রমূলক সভা করেছেন।’

একইভাবে বিডিআর জওয়ানদের সঙ্গে ষড়যন্ত্রমূলক অনেক সভা করেছেন শেখ সেলিম ও তাপস। ২২ ফেব্রুয়ারি তাপসের সঙ্গে বিদ্রোহীরা দেখা করার পর তাপস সুস্পষ্টভাবে বলে দেন, ‘পরিকল্পনা অনুযায়ী খতম করে দাও।’ তদন্ত কমিটির রিপোর্টে এও বলা হয়, ‘৪৪ রাইফেলস ব্যাটালিয়নের মাধ্যমে ২১ ফেব্রুয়ারি লিফলেট বিতরণ করা হয়। ২৫ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে আটটায় দরবার শুরুর আগেই ৪৪ রাইফেলসের বিদ্রোহীরা সেন্ট্রাল কোয়ার্টার গার্ড দখল করে নেন। দরবার হলের মঞ্চে ডিজির দিকে যে অস্ত্র প্রথম তাক করা হয় তাও ৪৪ রাইফেলস ব্যাটালিয়নের ছিল।

বিডিআর ডিজি মেজর জেনারেল শাকিল তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ অন্যদের সঙ্গে মোবাইলে কথা বলার সময় ৪৪ রাইফেলস ব্যাটালিয়ন বিদ্রোহ করেছে বলে উল্লেখ করেন।’ তদন্ত রিপোর্টে আরো উল্লেখ করা হয়, ‘২৪ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর পিলখানায় আসা উপলক্ষে চিফ সিকিউরিটি অফিসারের দায়িত্বও দেওয়া হয়েছিল ৪৪ রাইফেলস ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল শামসকে।

দরবারের নিরাপত্তাসহ সব প্রশাসনিক আয়োজনের দায়িত্বও ছিল তার। বিদ্রোহ ও হত্যাকাণ্ডের পর দেখা যায়, ৪৪ রাইফেলস ব্যাটালিয়নের মোট চারজন কর্মকর্তার মধ্যে অধিনায়ক লে. কর্নেল শামসসহ সবাই প্রাণে বেঁচে যান এবং তারা বিপথগামী বিডিআর জওয়ানদের বাসায় ছিলেন। ফলে এটাও প্রতীয়মান হয় যে, ঘটনার সঙ্গে কর্নেল শামস এবং এই ব্যাটালিয়নের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে।’

অনুসন্ধানে পাওয়া তথ্যে দেখা যায়, ২০০৯ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি লে. কর্নেল শামসকে স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সে (এসএসএফ) বদলি করা হলেও ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে অনুষ্ঠেয় বিডিআর সপ্তাহের বিভিন্ন দায়িত্ব পালনের জন্য পিলখানায় রেখে দেওয়া হয়। বিডিআর সপ্তাহের পর তাকে এসএসএফে যোগদানের নির্দেশ জারি হয়। আস্থাভাজন হিসেবে বিডিআর হত্যাকাণ্ড ঘটানোর স্বার্থেই তাকে পিলখানায় রাখা হয়।

রাজধানীর বকশীবাজার আলিয়া মাদরাসা মাঠে বিডিআর হত্যা মামলার অস্থায়ী আদালতের বিশেষ এজলাসে ১৯ অক্টোবর লে. কর্নেল শামসকে ডাকা হয়। সূত্র জানায়, এটা ছিল আইওয়াশ মাত্র। আদালতে তিনি এসেছেন এটা আনুষ্ঠানিকভাবে দেখানোর জন্যই তাকে আনা হয়। আদালতে তিনি তার জবানবন্দি রেকর্ড করান।

তাকে আইনজীবীদের পক্ষ থেকে ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা দেখিয়ে যেসব প্রশ্ন করা হয়, তার সবই তিনি শুধু বলেন, ‘সত্য নয়’। তাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, হত্যাকাণ্ড ও বিদ্রোহ সম্পর্কে তিনি আগে থেকেই জানতেন, বিদ্রোহীদের সঙ্গে তার যোগাযোগ ছিল এবং প্রধানমন্ত্রীকে তার পক্ষ থেকে অবহিত করার পর তিনি পরবর্তী কর্মসূচি বাতিল করেন।

তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্নেল শামসকে এ ঘটনায় তদন্ত কমিটিতে আসা বিভিন্ন প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও জড়াতে দেননি। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে তদন্ত কমিটির রিপোর্ট থেকে আওয়ামী লীগ নেতাদের সংশ্লিষ্টতা এবং কর্নেল শামস সম্পর্কে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বাদ দেওয়া হয়। শেখ হাসিনা উপরন্তু কর্নেল শামসকে একের পর এক পদোন্নতি দিয়েছেন।

এসএসএফ থেকে তাকে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআইর পরিচালক এবং পরে ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশ দূতাবাসে কূটনীতিক হিসেবে ‘মিলিটারি অ্যাটাচে’ করা হয়। ২০১৯ সালের ২ আগস্ট তিনি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন।

অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, চট্টগ্রামে সেনাবাহিনীর মেজর থাকা অবস্থায়ই শেখ হাসিনার সঙ্গে তার যোগাযোগ হয় এবং তাদের মধ্যে ওয়ান-টু-ওয়ান কথাও হয়। কর্নেল শামস চট্টগ্রামে ১৯৯৬ সালে ডিজিএফআইর প্রধান কো-অর্ডিনেটর অফিসার ছিলেন। স্পেশাল অপারেশনের দায়িত্ব ছিল তার। একসময় চট্টগ্রামের রাজনীতিতে একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল তৎকালীন মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরীর। তিনি শেখ হাসিনার অনেক কথাই শুনতেন না।

ফলে শেখ হাসিনা মেয়র মহিউদ্দীনের প্রতি অখুশি ছিলেন। তাই তিনি মেয়র মহিউদ্দীনের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে চট্টগ্রামে তার বিরুদ্ধে আ জ ম নাছিরকে তৈরি করেন। অনুসন্ধানে জানা গেছে, আ জ ম নাছির ছিলেন চট্টগ্রাম আন্ডার ওয়ার্ল্ডের ডন। শেখ হাসিনা তাকে ক্রিকেট বোর্ডে আনার মাধ্যমে রাজনীতিতে একটা অবস্থান করিয়ে দেন। তিনি মেজর শামস এবং সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল ইকবাল করিম ভূঁইয়াকে দায়িত্ব দেন চট্টগ্রামের রাজনীতিতে আ জ ম নাছিরকে প্রতিষ্ঠিত করতে। ইকবাল করিম ভূঁইয়া তখন চট্টগ্রামে ছিলেন। ফলে তারাই তাকে আন্ডারগ্রাউন্ডের ডন থেকে রাজনীতির ডনে পরিণত করেন।

ওই সময় চট্টগ্রামে পুলিশের কর্মকর্তা বর্তমানে পলাতক মনিরুল ইসলাম ও বনজ কুমার মজুমদার সিএমপিতে ছিলেন। সেনাবাহিনী ও পুলিশের এই আওয়ামী গ্যাং সদস্যদের সহায়তায় আ জ ম নাছির মহিউদ্দিন চৌধুরীকে চ্যালেঞ্জ করে শেখ হাসিনার অবস্থানকে সুদৃঢ় করে রাখেন। এক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছিলেন বিডিআর হত্যাকাণ্ডের অন্যতম সন্দেহভাজন এই কর্নেল শামস। তার সম্পর্কে অনুসন্ধানে আরো জানা গেছে, তিনি ক্যাডেট কলেজ নয়Ñ সাধারণ কলেজ থেকে পড়াশোনা করে সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন। কলেজে থাকার সময় তিনি ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন। ফলে সেনাবাহিনীতে আওয়ামী বলয় তৈরি করেন।

শেয়ালের মতো অত্যন্ত ধূর্ত প্রকৃতির অফিসার কর্নেল শামস। ছাত্রলীগের রাজনীতি করার কারণে সৈনিকদের মোটিভেশন করার ক্ষেত্রেও তার দক্ষতা ছিল। বিডিআরের সেন্ট্রাল কমান্ড অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টার রয়েছে বান্দরবানে ‘বায়তুল ইজ্জত’ নামে। সেখানে বিডিআর সৈনিকদের ট্রেনিংও করিয়েছেন তিনি। পিলখানায় বিডিআরের সদস্যদের সঙ্গে তার কানেকটিভিটি গড়ে ওঠে। এটাই তিনি কাজে লাগিয়েছেন। সূত্র জানায়, ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নে তিনি প্রথমে তার ৪৪ রাইফেলস ব্যাটালিয়নের সদস্যদের মোটিভেট করেন।

তাদের মাধ্যমে অন্যদেরও এই কাজে নিয়োজিত করেন। তৎকালীন আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব ও বাইরের লোকদের সঙ্গে যোগাযোগের যোগসূত্রও তিনি তৈরি করে দেন। বিডিআর হত্যাকাণ্ডের দিন ২৫ ফেব্রুয়ারি তিনি অস্ত্রাগারের দায়িত্বে ছিলেন। বিডিআর সপ্তাহ ও দরবার চলাকালে সিপাহি, জওয়ান ও অফিসারদের সঙ্গে অস্ত্র থাকলেও, গোলাবারুদ থাকে না। কিন্তু ওইদিন সকালে তিনি অস্ত্রাগার থেকে প্রথমে ৪৪ ব্যাটালিয়নের সদস্যদের অস্ত্র ও গোলাবারুদ সহজে নিতে দেন এবং পরে অন্যদের সরবরাহ করেন।

আদালতে এসব বিষয় অস্বীকার করলেও সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ওইদিন তিনিই অস্ত্রাগার থেকে যেন সহজে অস্ত্র ও গোলাবারুদ বিপথগামীরা নিতে পারেন সে সুযোগ করে দিয়েছিলেন। বিদ্রোহীরা যদি জোরপূর্বক অস্ত্র নিত, তাহলে তাকে গুলি করে হত্যা করে অস্ত্রাগার লুট করত। কিন্তু সেদিন এমন কোনো ঘটনাই ঘটেনি। কোনো ধরনের বাধা না দিয়ে তিনি অস্ত্রাগার থেকে সহজে অস্ত্র নেওয়ার ব্যবস্থা করে দেন।
ব্রিগেডিয়ার (অব.) শামসুল আলম চৌধুরী, যিনি কর্নেল শামস নামে পরিচিত, তার গ্রামের বাড়ি মিরসরাইয়ের ইছাখালী ইউনিয়নের আবুরহাট গ্রামে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, তিনি ওই গ্রামের আবু ভূঁইয়াবাড়ির বাসিন্দা।

ব্রিগেডিয়ার (অব.) শামস বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। ২০১৮ সাল থেকে চট্টগ্রাম-১ মিরসরাই আসন থেকে আওয়ামী লীগের নৌকা মার্কায় নির্বাচন করার ইচ্ছা প্রকাশ করে প্রচারে নামেন। কিন্তু দুবারই শেষ মুহূর্তে নির্বাচনে অংশ নেননি। এ বিষয়ে চট্টগ্রামের স্থানীয় পত্রিকায় তার সাক্ষাৎকারও ছাপা হয়েছে।

শেখ হাসিনার পতনের আগে তিনি দেশে এসেছিলেন। আবার আমেরিকায় চলে যান। তিনি যখন এলাকায় আসতেন তখন উপজেলা ও পুলিশ প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা তার সঙ্গে থাকতেন।আমারদেশ

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com
Website Design By Kidarkar It solutions