ডেস্ক রির্পোট:- উপস্থাপনা তার জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে, কিন্তু অভিনয়েও কম যান না। সম্ভাবনার আলো ছড়িয়ে দুই মাধ্যমেই আইশা খানের ব্যস্ততা এখন তুঙ্গে। গেল বছরের ভালোবাসা দিবসে ‘বুক পকেটের গল্প’-তে অভিনয় করে তুমুল প্রশংসিত হন। এর পর থেকে আর থেমে নেই সম্ভাবনাময়ী এই তারকা।
কাজ, ব্যস্ততা, প্রেম, অবসরের আদ্যোপান্ত নিয়ে তার সঙ্গে কথা বলেছে বিনোদন।
কাজের ব্যস্ততা কেমন যাচ্ছে?
মোটামুটি ভালোই ব্যস্ততা বলতে পারেন। ভালোবাসা দিবসকে ঘিরে গত বছরের শেষ দিক থেকেই কাজ শুরু করি। সাতটির মতো কাজ করেছিলাম।
এর মধ্যে এই উৎসবে কয়টি কাজ রিলিজ হবে, তা এখনো নিশ্চিত নই। তবে তিনটি কাজের বিষয়ে আমি নিশ্চিত।
ফেব্রুয়ারি মাস ভালোবাসার মাস। ভালোবাসার মাসে প্রেমের গল্প থাকবে, এটাই স্বাভাবিক।
তার পরও জানতে চাই, আপনার কাজগুলোতে বিশেষ কী থাকছে?
আমার কাছে যখন গল্প চুজ করার অপশন ছিল তখন শুধু এটাই মাথায় রেখেছি যে দর্শক যেন আমাকে রিপিটেড কোনো কাজে দেখতে না পায়। আমাদের ইন্ডাস্ট্রিটা ছোট হলেও কিন্তু প্রতিনিয়ত অনেক কাজ হচ্ছে। সেদিক থেকে আগের কোনো কাজের সঙ্গে কিংবা সাম্প্রতিক দেখা কোনো কাজের সঙ্গে একটা গল্পের কোনো অংশ মিলে যায়; যেটা সম্পূর্ণ কাকতালীয়। সে জন্য আমি চেষ্টা করেছি একটু ডিফরেন্ট রাখার।
বিশেষ দিবস কিংবা উৎসবগুলোতে একসঙ্গে অনেক শিল্পীর কাজই আসে এবং সেটাও একাধিক।
এত কাজের ভিড়ে আপনার কাজগুলো দর্শক দেখবে কি না— কখনো এ রকম ইনসিকিউরড ফিল হয় কি?
আমার মধ্যে কখনো এই বিষয়টি কাজ করে না। তার কারণ, আমার শুরুটা হয়েছে মাল্টিকাস্টিং প্রজেক্টের মধ্য দিয়ে, যেখানে আমি ছাড়াও অনেক শিল্পীই ছিলেন। ‘বুক পকেটের গল্প’ কিংবা ‘ফ্রেঞ্জি’ এ রকম আরো কাজ করেছি যেখানে মাল্টিকাস্টিং ছিল। শুধু ‘দাগ’ ছিল আমার সিঙ্গেল প্রডাকশন। তখনই আমি এসব নিয়ে চিন্তিত ছিলাম না আর এখন যখন এককভাবে অনেক কাজ করার সুযোগ পাচ্ছি তখন তো ভাবার আরো কিছু নেই। অনেক শিল্পীর মধ্য থেকে আমি নিজেকে বের করে এনেছি। যেটা আমার কাছে অনেকটা লুকোচুরি খেলার মতো। অনেকের অনেক কাজের সঙ্গে আমার কোনো একটা কাজও যদি দর্শকরা গ্রহণ করেন কিংবা পছন্দ করেন আমার জন্য সেটাই হবে অনুপ্রেরণার। আর যদি তা-ও না হয় তাহলে ধরে নেব, আমাকে আরো বেশি সিলেকটিভ হতে হবে এবং সিরিয়াস হতে হবে। ব্যস, এতটুকুই। আমি সব কিছুই ইতিবাচকভাবে দেখতে পছন্দ করি। আমার মন্ত্রই হচ্ছে- ওয়ার্ক হার্ড, বি অনেস্ট অ্যান্ড বি ডেডিকেটেড।
ইতিমধ্যে আপনার বেশ ভালো ফ্যান-ফলোয়িং তৈরি হয়েছে। ভক্তদের সঙ্গে ঘটা কোনো একটা মজার মুহূর্ত শেয়ার করুন।
আজ থেকে দুই বছর আগে, ২০২৩ সালে যখন বইমেলাতে গিয়েছিলাম সে সময় বাচ্চাদের সেকশনে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে কিছু বাচ্চা আমাকে দেখে তাদের অভিভাবকদের বলছিলেন যে, ‘নতুন আপা এসেছে নতুন আপা এসেছে’। ‘এলাটিং বেলাটিং’ নামে দুরন্ত টিভিতে আমার অভিনীত একটা শিশুতোষ ধারাবাহিক প্রচারিত হতো যেখানে আমার চরিত্রের নাম ছিল ‘নতুন আপা’। ওই সময় তারা এসে আমার সঙ্গে ছবি তুলতে চেয়েছে, অটোগ্রাফ নিয়েছে। ওই মুহূর্তটাতে আমি খুবই নস্টালজিয়া হয়ে গিয়েছিলাম। এখন পর্যন্ত এই মুহূর্তটাই আমার জন্য সেরা এবং অন্য রকম ভালো লাগার স্মৃতি। এটা আমি সব সময় লালন করব।
কথা প্রসঙ্গে যেহেতু বইমেলা এসেছে সেহেতু বই পড়া প্রসঙ্গে কিছু জানতে চাই…
প্রচণ্ড ভালোবাসি। আমার বাসায় যে বুকশেলফ রয়েছে সেটাতে আর বই রাখার জায়গা নেই। এখন ভাবছি আরো বড় দেখে শেলফ নিতে হবে। প্রতিবছরই বইমেলায় যাওয়ার চেষ্টা করি এবং সেখান থেকে অনেকগুলো বই সংগ্রহ করি। এ ছাড়া বাহিরে গেলেও আমার বাকেট লিস্টে বই সব সময় থাকে। সত্যজিৎ রায়, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়, বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং হুমায়ূন আহমেদের বই পড়া হয়। এর বাইরে থ্রিলার-সাসপেন্স পড়তে ভালো লাগে। এখনকার সময়ের নাজিম উদ দৌলা, সাদাত হোসাইন, কিংকর আহসানের বই ভালো লাগে। ইংরেজি লেখকদের মধ্যে হারুকি মুরাকামি (জাপানি লেখক) আমার খুব প্রিয়, এরপর পাউলো কোয়েলহো (ব্রাজিলিয়ান গীতিকার ও ঔপন্যাসিক)। এদের বাইরে আরো অনেক বই পড়া হয়, কিন্তু সেগুলো শুধু জানার আগ্রহ থেকে।
প্রেমের মাসে প্রেম নিয়ে কিছু জানতে চাই। আপনার কাছে ভালোবাসা মানে কী?
আমার কাছে ভালোবাসা হচ্ছে একটা অনুভূতি। যেটা দেখা যায় না, কিন্তু অনুভব করা যায়। আমি যেহেতু একটু ক্ল্যাসিক, সেই পার্সপেক্টিভ থেকে বলব- ভালোবাসা মানে হচ্ছে ইতি, যার সঙ্গে আমি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত থাকতে চাই।
আপনার জীবনে কি কখনো প্রেম এসেছে?
প্রেমের সঠিক সংজ্ঞা কী, আমি আসলে জানি না। যদি জানতাম তাহলে হয়তো বলতে পারতাম যে প্রেমে পড়েছিলাম কি না। তবে হ্যাঁ, কারো প্রতি ভালো লাগা তৈরি হয়েছিল। সেই ভালো লাগার জায়গা থেকে আমি সেই মানুষটির সঙ্গে কথা বলে তাকে জানতে চেয়েছিলাম, বুঝতে চেয়েছিলাম। কিন্তু একটা সময়ে বুঝতে পারলাম যে আমাদের মধ্যে ফ্রেন্ডশিপ থাকতে পারে কিন্তু পার্টনারশিপ না। কারণ, পার্টনারশিপ হতে হয় শর্তহীন। শর্ত দিয়ে কখনো পার্টনারশিপ হয় না। শর্ত দিয়ে যে আসে সে কখনো পার্টনার হতে পারে না। ভালোবাসায় কোনো শর্ত থাকে না, থাকতে নেই। আমি নিঃশর্ত ভালোবাসায় বিশ্বাসী।কালের কন্ঠ