ডেস্ক রির্পোট:- ৫ই আগস্টের আগে ব্যাংক লুট ও দখল করেছিল আওয়ামী লীগ আর এরপর একটি রাজনৈতিক দল ব্যাংক দখল করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। গতকাল রাজধানীর চন্দ্রিমা উদ্যানে সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি এ অভিযোগ করেন। এর আগে জাতীয়তাবাদী রিকশা ভ্যান অটো শ্রমিক দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা জানান তিনি। কোনো দলের নাম উল্লেখ না করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ১৬ বছরের নিরবচ্ছিন্ন আন্দোলনের ফল জুলাই বিপ্লব। এই আন্দোলন করতে গিয়ে ৯৭ জন শ্রমজীবী মানুষ শহীদ হয়েছেন। তাদের অবদান গোটা জাতিকে আন্দোলনকে অগ্নিগর্ভ করেছে। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার দেখি সবক দেয়। আবার দুই-একটি রাজনৈতিক দল দেখি তারাও সবক দেয়। বলেন, ‘যে চাঁদাবাজ বিদায় নিয়েছে, আমরা আর কোনো চাঁদাবাজকে দেখতে চাই না, চাঁদাবাজরা না আসুক’- কাকে উদ্দেশ্য করে বলছেন, আমরা কি বুঝতে পারি না? শেখ হাসিনার আমলে যারা ব্যাংক লুট ও ব্যাংক আত্মসাৎ করেছে, ৫ই আগস্টের পরে কি আমরা ব্যাংক আত্মসাৎ করতে দেখিনি? আমরা তো দেখেছি, ইসলামী ব্যাংকগুলো কীভাবে গ্রাস করে নিলো একটি রাজনৈতিক দলের অনুসারীরা। তাহলে আজকে কোন মুখে বলছেন, এক চাঁদাবাজরা পালিয়েছেন, আরেক চাঁদাবাজকে কেউ দেখতে চায় না।
তিনি বলেন, আমরা দেখলাম, ৫ই আগস্টের পরের দিনই কীভাবে আপনারা ইসলামী ব্যাংকগুলো দখল করেছেন। এটা তো জনগণ দেখেছে। আর আজকে বড় বড় কথা বলে বিএনপি’র নামে কলঙ্ক লেপনের চেষ্টা করছেন। কিন্তু পাড়া-মহল্লায়, জেলায় জেলায় অনেক টার্মিনাল ও সিএনজি স্ট্যান্ড দখলসহ এবং অনেক টেন্ডার বাণিজ্যসহ ভাগাভাগিতে আপনাদের লোকজন কি জড়িত নেই? আমি সেই রাজনৈতিক দলটিকে বলতে চাই, খুব নীরবে-নিভৃতে সব অপকর্মের সঙ্গে আপনারা জড়িত।
রিজভী আহমেদ আরও বলেন, আমরা হাসিনার আমলে দেখেছি চাপাতি লীগ, হেলমেট লীগ, বন্দুক লীগ। জনগণ এটাও জানে, ক্ষুর ও পায়ের রগ কাটা পার্টি কারা? আপনাদের একাত্তরের অর্জন কী? আপনারা একাত্তরের বিরোধিতা করেছেন। ৭১ ও ৯০-এর গৌরব বিএনপি’র। সেদিনও শেখ হাসিনার সঙ্গে আঁতাত করে এরশাদের কুলাঙ্গারের নির্বাচনে যাননি? কিন্তু বিএনপি সেই নির্বাচনে যায়নি। ফখরুদ্দীন-মইনুদ্দীনরা গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার জন্য এবং একটি ভয়ঙ্কর হাসিনার স্বৈরশাসনের জন্য এসেছিলেন। তখনও সেদিন আপনারা বাধ্য করেছিলেন, তার নির্বাচনে যেতে। এটাও তো জনগণ জানে। ইসলাম নিয়ে রাজনীতি করেন। ইসলাম মানে কি বারবার মোনাফেকি করা।
৭১ থেকে ৫ই আগস্ট পর্যন্ত গণতন্ত্রের প্রশ্নে কখনো মাথা নিচু করেনি বিএনপি মন্তব্য করেন রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ৫ই আগস্টের পর আপনারা বললেন- ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন করবেন। ভালো কথা। আমাদের আপত্তি নেই। শেখ হাসিনার প্রতিটি গুম ও খুনের দোসর হচ্ছে পার্শ্ববর্তী দেশ। এর মধ্যদিয়েই তো প্রমাণিত হয়, আপনারা ন্যায়-নীতির পরোয়া করেন না। তারা ক্ষমা চাইলো না, কিছু না। আপনারা তাদের ক্ষমা করে দেবেন, সম্পর্ক উন্নয়ন করবেন। অর্থাৎ আপনারা আপনাদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি হলো না? তাই আজকে শুধু পার্শ্ববর্তী দেশ তারাই শুধু অপতথ্য, অপপ্রচার করছে না, ভেতর থেকেও অনেকে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করার রাজনৈতিক ফায়দা নেয়ার চেষ্টা করছে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, সহ অর্থ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমন, ডা. জাহিদুল কবির প্রমুখ।