ডেঙ্গুতে চলতি বছরের ডিসেম্বরে সর্বাধিক আক্রান্ত ও মৃত্যুর রেকর্ড

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় শনিবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ৪০ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রির্পোট:- চলতি বছরে কোনোভাবেই যেন থামছে না এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গুর দাপট। শীতের সময়েও বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা, দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যুর মিছিল।

শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও এক জনের মৃত্যু হয়েছে এবং একই সময়ে সারা দেশে ৮৩ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

বছরজুড়ে ডেঙ্গুর প্রকোপ অব্যাহত থাকার কারণ সম্পর্কে কীটতত্ত্ববিদরা বলছেন, বর্ষা মৌসুম শেষেও যেখানেই পানি জমছে, সেখানেই এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যাচ্ছে। এমন কিছু জায়গায় এডিস মশা বংশ বিস্তার করছে, যেখানে বৃষ্টির পানি জমার কোন সম্ভাবনা নেই। এর মধ্যে রয়েছে বহুতল ভবনের পার্কিংয়ের জায়গা, নির্মাণাধীন ভবনের বেজমেন্ট, বাসাবাড়িতে জমিয়ে রাখা পানি ইত্যাদি।

আমাদের দেশে সাধারণত গ্রীষ্মকালে ডেঙ্গু রোগের মৌসুম হলেও জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বর্তমানে সারা বছর জুড়েই ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ দেখা যাচ্ছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টারের ডেঙ্গুবিষয়ক তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, চলতি বছরের ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে ৯৯ হাজার ৮৮৮ জন এবং চলতি বছরে এ যাবত ডেঙ্গুতে মোট মৃত্যুবরণ করেছেন ৫৫৮ জন। ডিসেম্বর মাসের ১ তারিখ থেকে ২০ তারিখ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন আট হাজার ৪১৯ জন যার মধ্যে ৭০ জন মারা গেছেন।

২০২৩ সালে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ও মৃত্যু হয়। ২০২৩ সালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট এক হাজার ৭০৫ জনের মৃত্যু হয় এবং হাসপাতালে ভর্তি হন তিন লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন। ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসের ১ তারিখ থেকে ২০ তারিখ পর্যন্ত ৭ হাজার ৯৮৭ জন এবং মারা যান ৭০ জন।

২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসের ২০ দিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত হন চার হাজার ২৭১ জন এবং মারা যান ১৮ জন। ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসের ২০ দিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত হন ৯৯৪ জন এবং মারা যান পাঁচ জন। এর আগে ২০১৯ সালে ডিসেম্বর মাসের ২০ দিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত হন এক হাজার ৬৬৭ জন, সে বছর ডিসেম্বর মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে কেউ মারা যায়নি।

চিকিৎসক এবং জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তন এবং ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থাগুলোরে কার্যক্রমের যথেষ্ট ঘাটতির ফলে শীতকালেও ডেঙ্গু সংক্রমণ এবং মৃত্যু হচ্ছে।

ডিসেম্বর মাসে ডেঙ্গু পরিস্থিতি প্রসঙ্গে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ববিদ ও অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার বলেন, এখনও আমরা এডিস মশা পাচ্ছি, যেমন বহুতল ভবনের বেজমেন্টে, নির্মাণাধীন ভবনে যেখানে পানির ব্যবহার আছে এবং পানির ঘাটতির ফলে কিছু এলাকায় মানুষ বিভিন্ন পাত্রে পানি জমিয়ে রাখে, সেখানেও এডিস মশা পাচ্ছি আমরা। ডেঙ্গুর এসব প্রজনন ক্ষেত্রের সঙ্গে বৃষ্টির কোনো সম্পর্ক নেই।

তিনি আরও বলেন, সারাবছরই এখন ডেঙ্গুর প্রকোপ থাকবে। একেবারে শূন্য হয়ে যাবে না, প্রতিদিন ডেঙ্গু কেস পাওয়া যাবে। এখন থেকে আমাদের ডেঙ্গুকে বছরব্যাপী রোগ হিসেবে বিবেচনা করে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। পাশাপাশি শীতকালে যেসব জায়গায় ডেঙ্গুর প্রজনন হয়, সেই সব স্থানকে টার্গেট করে এডিস নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা সাজাতে হবে।

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com
Website Design By Kidarkar It solutions