ডেস্ক রির্পোট:- ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর সামরিক অভিযান এক ভয়াবহ মানবিক সংকট তৈরি করেছে। গত দুই দিনে গাজার বিভিন্ন এলাকায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। UNICEF ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো শিশুদের পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার(১৯ ও ২০ ডিসেম্বর) ৭৭ ও ২৫ জন ফিলিস্তিনি ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত হয়েছেন। অক্টোবর ২০২৩ সালের ৭ তারিখে হামাসের নেতৃত্বে ইসরায়েলে চালানো আক্রমণের প্রতিক্রিয়ায় এই যুদ্ধ শুরু হয়। ইসরায়েল দাবি করছে, এই অভিযান সন্ত্রাস দমনের জন্য, তবে এর ফলে গাজার নারী ও শিশুরা শীতের মধ্যে ভয়ংকর পরিস্থিতিতে পড়েছে। UNICEF জানাচ্ছে, গাজায় ৯৬ শতাংশ নারী ও শিশু তাদের মৌলিক পুষ্টি চাহিদা পূরণে অক্ষম।
ইসরায়েলি এই হামলায় এখন পর্যন্ত ৪৫,২০৬ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১,০৭,৫১২ জন আহত হয়েছেন,ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।অনেক মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়ে আছেন কারণ উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছেন না।এছাড়া ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।
মূলত ইসরায়েলি আক্রমণ গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার সকলেই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন।
এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরায়েল ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে।
এছাড়াও, ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের সহায়তা প্রদানকারী জাতিসংঘের সংস্থা UNRWA-এর জন্য সুইডেন তাদের অর্থায়ন বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা একে “লজ্জাজনক” বলে মন্তব্য করেছেন এবং এই সিদ্ধান্তকে ফিলিস্তিনিদের জন্য আরও সংকট তৈরি করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
গাজায় যুদ্ধের অবসান এবং নিরপরাধ শিশু ও নারীদের সুরক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কার্যকর ভূমিকা অপরিহার্য। সংকট সমাধানে মানবিক সহায়তা এবং শান্তিপূর্ণ আলোচনার উদ্যোগ অবিলম্বে প্রয়োজন। তথ্যসূত্র : আল-জাজিরা