রাঙ্গামাটি,কাপ্তাই:- অবশেষে আপন নীড়ে ফিরলো অসহায় সেই বৃদ্ধ লোকটি। বৃহস্পতিবার বেলা দুইটায় বৃদ্ধ লোকটির সহধর্মিণী ফরিদা বেগম এবং তাঁর মেয়ের জামাই মো. শাহাদাত এসে রাঙ্গামাটির কাপ্তাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: রুইহ্লা অং মারমার কাজ হতে লোকটিকে বুঝিয়ে নেন। এসময় কর্ণফুলী সরকারি কলেজের প্রভাষক মো. আরাফাত হোসেন, কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দপ্তরের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন এবং স্থানীয় যুবক সুমন রায়হান উপস্থিত ছিলেন।
কাপ্তাই স্বাস্থ্য বিভাগের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. ওমর ফারুক রনি জানান, বিগত এক সপ্তাহ আগে কে বা কারা একজন রোগাক্রান্ত বৃদ্ধ লোককে কাপ্তাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে রেখে চলে যান। লোকটিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পুরুষ বেডে ভর্তি করার পর তিনি হাসপাতাল বেডে পায়খানা প্র¯্রাব করে দুর্গন্ধ ছড়ান। যার ফলে পুরুষ বেডে অন্যান্য রোগীরা বেড ত্যাগ করেন।
এদিকে এই খবর জানার পরের দিন কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দপ্তরের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন লোকটিকে পুরুষ বেড হতে নিয়ে এসে হাসপাতাল চত্বরে নিরাপত্তা প্রহরীর রুমে জায়গা করে দেন। বিগত এক সপ্তাহ ধরে তিনি এবং তাঁর সহধর্মিণী মোছাম্মদ হামিদা বেগম তাঁর সেবা শুশ্রুষা করেন। এছাড়া গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশ, সাধারণ শিক্ষার্থী, এলাকার যুবসমাজ, এলাকার সাধারণ মানুষ, সমাজ সেবা অধিদপ্তর ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষসহ সকলের সহায়তায় একটা ছোট ফান্ড কালেক্ট করে লোকটির দৈনন্দিন খাবারসহ অন্যান্য ব্যয় নির্বাহ করছিলেন।
মুঠোফোনে বৃহস্পতিবার বিকালে এই প্রতিবেদক এর সাথে যোগাযোগ হয় অসহায় বৃদ্ধ লোকটার সহধর্মিণী ফরিদা বেগম এর সাথে। তিনি জানান, তাঁর স্বামীর নাম মহরম আলী। তাদের বাড়ি রাউজান উপজেলার নোয়াপাড়া কচুখাইন এলাকায়। তাঁর স্বামী দীর্ঘ দিন ধরে প্যারালাইসিসসহ নানা জটিল রোগে ভুগছিলেন। তিনি কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন। গত ২২ নভেম্বর তাঁর স্বামী মাজারে যাবে বলে ঘর হতে বের হয়ে আর ফিরের নাই। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং কাপ্তাইয়ের সাংবাদিক ঝুলন দত্তের নিউজ দেখে তাঁরা নিশ্চিত হন তাঁর স্বামী কাপ্তাই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আছেন। এসময় ফরিদা বেগম এই কয়দিন তাঁর স্বামীর যাঁরা সেবা শুশ্রুষা করেছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।