রাঙ্গামাটি:- আইন অনুযায়ী পূর্ণ মেয়াদে দায়িত্ব পালনের সুযোগ দিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার ৫০টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যরা। তারা বলেন- জনগণের দেওয়া আমাদের ওপর অর্পিত পবিত্র দায়িত্ব পূর্ণ মেয়াদ পর্যন্ত আমরা পালন করে যেতে চাই। পার্বত্য জেলার দুর্গম ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের জনগোষ্ঠীর কাছে সরকারের দেয়া সকল সুযোগ সুবিধা পৌঁছে দিতে আমরা নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছি। দুর্গম পার্বত্য এলাকায় শিক্ষক কিংবা কোন সরকারি কর্মকর্তাকে প্রশাসক নিয়োগ দিয়ে জনসেবা পৌঁছে দেয়া আদৌ সম্ভব নয় বলেও উল্লেখ করেন তারা।
ইউনিয়ন পরিষদ বহাল রাখার দাবিতে রবিবার সকালে রাঙ্গামাটি শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা তুলে ধরেন জনপ্রতিনিধিরা।
সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয়, প্রান্তিক পর্যায়ে বিভিন্ন গ্রাম্য সালিশ পরিচালনা, রাজস্ব আদায়, নতুন রাস্তা নির্মাণ, পুরোনো রাস্তা সংস্কার ও মেরামত, সরকারি সেবাদানের প্রতিষ্ঠানগুলো রক্ষণাবেক্ষণ ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমেই করা হয়। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেম্বারদের অপসারণ করা হলে দুর্গম এলাকায় বসবাসকারী প্রান্তিক জনগোষ্ঠী নানা সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবে। ইউয়িন পরিষদের জনপ্রতিনিধিরা না থাকলে দুর্গম এলাকার সাধারণ মানুষ জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন সনদ, জাতীয়তা সনদ, বৃদ্ধভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা ও প্রয়োজনীয় সেবা থেকে বঞ্চিত হবে সাধারণ মানুষ। অপসারণ করা হলে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে যাবেন বলেও জানান জনপ্রতিনিধিরা।
তাছাড়া রাঙ্গামাটি জেলার ৫০টি ইউনিয়নের মধ্যে ৩৫টির অধিক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানগণ স্বতন্ত্র প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। এছাড়াও বর্তমানে সকল চেয়ারম্যান ও মেম্বারগণ পরিষদে উপস্থিদ থেকে সেবা প্রদান করে যাচ্ছেন। যা বর্তমান প্রেক্ষাপটে আমাদের জনসম্পৃক্ততার অনন্য দৃষ্টান্ত বলে দাবি করেন জনপ্রতিনিধিরা।
বক্তারা আরও বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম একটি সংবেদনশীল অঞ্চল। এই অঞ্চরকে অশান্ত করতে বিভিন্ন চক্রান্ত হয়। যার প্রমাণ সম্প্রতি খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটির সহিংস ঘটনা। লক্ষ্য করলে বুঝতে পারবে খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটি জেলা সদরে সমস্যা হয়েছে। কিন্তু এর কোন উত্তাপ কোন ইউনিয়নে ছড়াতে পারেনি। কারণ সেখানে আমরা এই ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধিগণ মাঠে থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছি। সুতরাং আমাদের খাটো করে দেখার কোনও সুযোগ নেই।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ ইউনিয়ন পরিষদ এসোসিয়েশন রাঙ্গামাটি জেলা শাখার সভাপতি ও বরকল উপজেলার ১নং সুবলং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তরুণ জ্যোতি চাকমা।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আইমাছড়া ইউপি চেয়ারম্যান সুবিমল চাকমা, বুড়িঘাট ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল সালাম, নানিয়ারচর ইউপি চেয়ারম্যান বাপ্পী চাকমা, কালাপাকুজ্যা ইউপি চেয়ারম্যান বারেক দেওয়ান, লংগদু উপজেলার বগাচতর ইউনিয়ন পরিষদের মহিলা মেম্বার মমতাজ বেগমসহ রাঙ্গামাটি জেলার ৫০টি ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধি।
সংবাদ সম্মেলন শেষে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বরাবরে স্মারকলিপি দেন তারা।