ডেস্ক রির্পোট:- দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের আগেই বরখাস্ত হাথুরুসিংহে। আজ মঙ্গলবার মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ হাথুরুকে সাময়িক বরখাস্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ জানিয়েছেন, আচরণবিধি ভাঙার অভিযোগে আপাতত শোকজ ও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তার জায়গায় আপাতত ওয়েস্ট ইন্ডিজের ফিল সিমন্সকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আগামী বছরের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবেন তিনি। বোর্ড সভাপতি বলেছেন, পরবর্তীতে হাথুরুসিংহেকে ছাঁটাই করা হবে।
ফারুক আহমেদ বলেন, ‘বর্তমান কোচের ব্যাপারে আমরা চেষ্টা করছিলাম মানিয়ে নিতে। দুই-তিনটা ঘটনা ঘটেছে। ইচ্ছেমতো ছুটি কাটানো, জাতীয় দলের খেলোয়াড়ে গায়ে হাত তোলার মতো ঘটনা কোনোভাবেই দলের জন্য ভালো উদাহরণ ছিল না। তাই তাকে ৪৮ ঘণ্টার শোকজ ও সাসপেনশন দেওয়া হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই এটা স্থায়ী হয়ে যাবে।
২০১৪ সালের জুন থেকে ২০১৭ সালের অক্টোবর পর্যন্ত প্রথম মেয়াদে বাংলাদেশ জাতীয় দলের হেড কোচ ছিলেন চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। কিন্তু সেবার চুক্তির মাঝপথে হাথুরুসিংহে অনেকটা আকস্মিকভাবে বাংলাদেশ ছেড়ে চলে যান। সেই সময়ে আলোচনা ওঠে, কোনও ক্রিকেটার বা বোর্ড কর্তার সঙ্গে খারাপ সম্পর্কের কারণেই হয়ত দেশ ছাড়েন তিনি। যদিও অনেক পরে এসে জানান, শ্রীলঙ্কার কোচ হওয়ার কারণেই সেই সময়ে বাংলাদেশের দায়িত্ব ছাড়েন তিনি।
২০২৩ সালে দ্বিতীয় মেয়াদে বাংলাদেশের কোচ হয়ে আসেন শ্রীলঙ্কার কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। ৩৫ হাজার ডলারে তার সঙ্গে চুক্তি করা হয়েছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পক্ষ থেকে। যে চুক্তির মেয়াদ ছিল ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। তবে চুক্তি অনুযায়ী মেয়াদ পূরণ না করে এবারও বরখাস্ত করা হলো হাথুরুসিংহেকে।
দ্বিতীয় মেয়াদে হাথুরুর অধীনে ১০টি টেস্ট, ৩৫টি ওয়ানডে ও ৩৫টি টি-টোয়েন্টি খেলেছে বাংলাদেশ। টেস্টে হারজিত সমানে সমান- ৫টি জয় ও ৫টি হার। তবে ওয়ানডেতে ফল ছিল হতাশাজনক- ৩৫ ম্যাচে ১৩টি জয়, হার ১৯টি, ৩ ম্যাচে ফল হয়নি। টি-টোয়েন্টিতে ৩৫ ম্যাচের ১৯টিতে জিতেছে বাংলাদেশ, হেরেছে ১৫টি, একটিতে ফল হয়নি।
কোচ হাথুরুসিংহেকে নিয়ে পুরোনো দ্বন্দ্ব বিসিবির নতুন বস ফারুক আহমেদের। ২০১৬ সালে দল নির্বাচনে হাথুরুর হস্তক্ষেপের কারণেই প্রধান নির্বাচকের পদ থেকে সরে গিয়েছিলেন ফারুক। বোর্ড প্রধানের দায়িত্ব নেওয়ার আগে একটি টিভি চ্যানেলের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে ফারুক আহমেদ বলেছিলেন, ‘আমি মনে করি না বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের জন্য হাথুরু খুব কার্যকর ভূমিকা রাখতে সক্ষম।’
রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর বিসিবির সভাপতির চেয়ারে বসেই আগের সিদ্ধান্তেই অটল থাকার কথা জানান ফারুক আহমেদ। দায়িত্ব নেবার প্রথম দিনেই হাথুরুকে বাংলাদেশ দলে না রাখার বিষয়ে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন।
অভিযোগ আছে, প্রথম মেয়াদের মতো দ্বিতীয় মেয়াদেও বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনকে ‘ম্যানেজ’ করে চলতেন হাথুরুসিংহে। যে কারণে ওয়ানডে বিশ্বকাপে দলের ভরাডুবি, টি২০ বিশ্বকাপের সুপার এইটে হতাশাজনক পারফরম্যান্সেও কোচের কোনো দায় দেখেনি বিসিবি। ফারুক আহমেদ মনে করেন, হাথুরুসিংহে দেশের ক্রিকেটের কাঠামো নষ্ট করে দিয়েছেন।