শিরোনাম
বঙ্গভবনের সামনের নিরাপত্তা ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা হাসনাত আব্দুল্লাহকে আহ্বায়ক করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কমিটি যে পর্যবেক্ষণে দেশত্যাগে বাধ্য করা হয় বিচারপতি সিনহাকে ‘কোনো একজন ব্যক্তি দ্বারা কোনো একটি দেশ বা জাতি তৈরি হয়নি’ ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের আলটিমেটাম পদ ছাড়তে রাষ্ট্রপতিকে ২৪ ঘণ্টা সময় দিলেন আন্দোলনকারীরা সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান এখন লন্ডনে, আমিরাতে আরও ৩০০ বাড়ির সন্ধান শাহবাগে না, সভা-সমাবেশ করতে হবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বান্দরবানে ভিক্টরী টাইগার্সের ৫৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন পাহাড়ে ফসলের নায্যমূল্য পাচ্ছেন না প্রান্তিক চাষীরা, কমেছে মিষ্টি কুমড়ার ফলন রাঙ্গামাটিতে সহিংসতার ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের ক্ষতিপূরণ প্রদান

১০ সচিব পদ শূন্য, ৮ জেলায় ডিসি নেই!

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় রবিবার, ১৩ অক্টোবর, ২০২৪
  • ৩৫ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রির্পোট:- অন্তর্বর্তী সরকারের বয়স দুই মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো প্রশাসনে প্রত্যাশিত গতি আসেনি। হাসিনার অলিগার্ক কর্মকর্তারা নাটাই ঘুড়ালেও নিরপেক্ষ্য যোগ্য কর্মকর্তা বাছাই ও পদায়নে চলছে ধীর গতি। এতে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার দোসররা নিজেদের বোল ও রং পাল্টিয়ে এ সরকারের সাথে মিশে যাওয়ার চেষ্টা করছে। অন্যদিকে এতদিনের বঞ্চিতরা কাক্সিক্ষত পদায়ন না পাওয়ায় তাদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে। সরকারের অতি গুরুত্বপূর্ণ অন্তত ১০টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগে বর্তমানে কোনো সচিব নেই। ৩দিন থেকে সর্বোচ্চ দুই মাস পর্যন্ত এসব পদ খালি। এসব দপ্তরে দায়িত্ব পাওয়া অতিরিক্ত সচিবরা সচিবের রুটিন কাজ কোনো রকমে চালিয়ে নিচ্ছেন। তার পরও এ বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ কোনো সিদ্ধান্ত হচ্ছে না।

মাঠ প্রশাসনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদ জেলা প্রশাসক (ডিসি)। প্রায় এক মাস ধরে দেশের আট জেলায় কোনো ডিসি নেই। এসব জেলার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ বিভাগীয় জেলা সদরও রয়েছে। রাজশাহী বিভাগে মোট জেলা আটটি। চারটিতেই কোনো ডিসি নেই।

সচিব ও ডিসির মত গুরুত্বপূর্ণ এসব শুন্য পদ পুরণের কোনো জোর তাগাদাও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নেই। যোগ্য কর্মকর্তা বাছাই ও পদায়নের কাজে ধীর গতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কোথাও কাউকে দিলেও আবার পরক্ষণেই আদেশ বাতিল করার ঘটনাও ঘটছে। যুগ্মসচিব ও উপসচিব পদে দুটি ব্যাচের বিপুল সংখ্যক কর্মকর্তা পদোন্নতিযোগ্য হয়ে পদোন্নতির অপেক্ষা করছেন। এ কাজও এখনো শুরুই করেনি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। পদায়ন ও পদোন্নতির কাজে দক্ষতা দেখাতে না পারলেও, উল্টো এ মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্তারা নানা বিতর্কে, সমালোচনায় নিজেদের জড়িয়ে ফেলছেন। ফলে খেই হারিয়ে ফেলছে প্রশাসন। দেখা গেছে, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়সহ কোনো কোনো মন্ত্রণালয়ের কাজের গতি অত্যন্ত ধীর। এসব মন্ত্রণালয়ের কাজে গতি আনতে সংশ্লিষ্ট সচিবরা বিন্দুমাত্র দক্ষতা দেখাতে পারছেন না। কেউ কেউ হাল ছেড়ে দিয়ে বসে আছেন। ৮ আগস্ট বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর সচিব পদে বড় ধরণের রদবদল আনা হলেও অজ্ঞাত কারণে প্রশাসনে কাজের গতি বাড়েনি। বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পগুলোরও একই দশা। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বঞ্চিত পাঁচ শতাধিক কর্মকর্তাকে কয়েক ধাপে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। তাদের পদায়নও করা হচ্ছে। এই নতুন কর্মকর্তারও সরকারি কাজের গতি বাড়াতে এখন পর্যন্ত তেমন সফল হননি।

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নিয়োগ পাওয়া ২২জন সচিব এখনো বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের দায়িত্বে রয়েছেন। নতুন করে সচিব দেওয়া হয়েছে ২৬টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগে। ৮ আগস্টের পর সিনিয়র সচিব ও সচিব পদে থাকা ১৭ জনের চুক্তি বাতিল করা হয়েছে। আর দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিয়ে ওএসডি করা হয়েছে ১৫জনকে। তাদের মধ্যে পাঁচজন সিনিয়র সচিব আর ১০জন সচিব। এছাড়া সচিব পদমর্যাদায় চুক্তিতে বিভিন্ন স্থানে কাজ করা আরও ১৮জনের নিয়োগ বাতিল করা হয়েছে। এছাড়া গ্রেড-১ ভুক্ত এবং অতিরিক্ত সচিব পর্যায়ের বেশ কিছু কর্মকর্তাকে ওএসডি করে রাখা হয়েছে। বর্তমানে বিভিন্ন স্তরের আড়াই শতাধিক কর্মকর্তাকে ওএসডি করে রাখা হয়েছে। সিনিয়র সচিব, সচিব এবং অতিরিক্ত সচিব পদমর্যাদার এত কর্মকর্তাকে একসঙ্গে এর আগে কখনো ওএসডি করে রাখা হয়নি। ক্ষমতার পালাবদলের পর গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরগুলোতে আগের সরকারের নিয়োগপ্রাপ্তদের ওএসডি করায় বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের শীর্ষ পদ ফাঁকা রয়েছে।

১০ সচিব পদ ফাঁকা : বর্তমানে তিন মন্ত্রণালয় এবং ছয় বিভাগে সচিবের পদ ফাঁকা রয়েছে। তিন মন্ত্রণালয় হলো–তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এবং সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়। আর সচিব না থাকা বিভাগগুলো হলো, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ, আইন ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ, পরিকল্পনা বিভাগ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, সুরক্ষা সেবা বিভাগ এবং স্থানীয় সরকার বিভাগ। এছাড়া পরিকল্পনা কমিশনের কার্যক্রম বিভাগে সচিব পদমর্যাদায় একজন সদস্যের পদ ফাঁকা রয়েছে।

সচিব পদে নিয়োগ দেওয়ার পরদিন ওই নিয়োগ বাতিল করা, ডিসি পদে নিয়োগের পরদিন নিয়োগ বাতিল করা এবং চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিয়ে কয়েক দিন পর তা বাতিল করার ঘটনা জনপ্রশাসনে এখন প্রায়ই ঘটছে। গত ৩০ সেপ্টেম্বর বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান এ কে এম মতিউর রহমানকে পদোন্নতি দিয়ে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব করা হয়। ২ অক্টোবর তাঁকে ওএসডি করে সরকার। খাদ্য ক্যাডারের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইলাহী দাদ খানকে ৩০ সেপ্টেম্বর চুক্তিতে খাদ্যসচিব হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। পরদিন তাঁর নিয়োগ বাতিল করে সরকার।
গত ১৪ আগস্ট বাংলাদেশ জ্বালানি ও বিদ্যুৎ গবেষণা কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মো. মোকাব্বির হোসেনকে জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব হিসেবে বদলি করে সরকার। ১৭ আগস্ট মোকাব্বিরকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব পদে বদলি করা হয়।

জানতে চাইলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোখলেস উর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, সচিবের কয়েকটি পদ শূন্য রয়েছে। এগুলো আমরা শিগগিরই পূরণ করব। তবে যোগ্য লোকের অভাব রয়েছে। তারপরও সচিব পদ বেশি দিন শূন্য রাখা ঠিক হবে না।

আট জেলায় ডিসি নেই : কোনো ডিসি ছাড়াই চলছে দেশের আট জেলা। গত ১০ সেপ্টেম্বর ডিসি হিসেবে নতুন কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেওয়ার পর ১১ সেপ্টেম্বর তাঁদের মধ্য আটজনের নিয়োগ বাতিল করায় এই আট জেলার ডিসির পদ ফাঁকা হয়ে যায়। একমাসেও এসব জেলায় কাউকে পদায়ন করা হয়নি। জেলাগুলো হলো রাজশাহী, নাটোর, জয়পুরহাট, সিরাজগঞ্জ, কুষ্টিয়া, রাজবাড়ী, শরীয়তপুর ও দিনাজপুর। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকরা (এডিসি) রুটিন কাজ চালিয়ে নিচ্ছেন।

চুক্তিতে নিয়োগের ছড়াছড়ি : চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ প্রশাসনে নেতিবাচক চোখেই বরাবর দেখা হয়। বর্তমান সরকারের আমলেও নতুন মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সচিবসহ জনপ্রশাসন, জননিরাপত্তা, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক, প্রেসিডেন্টের কার্যালয়, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগসহ গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ও সচিব পদে চুক্তিতে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। অনেকে বলছেন, অতীতের সরকারগুলোর পথেই হাঁটছে এ সরকারও। প্রশাসনে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বন্ধই করা যাচ্ছে না।

৮ আগস্টের আগপর্যন্ত শেখ হাসিনা সরকারের শেষ সময়ে প্রশাসনের দুই শীর্ষ পদসহ অন্তত ২৪টি পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে ছিলেন অবসরে যাওয়া সাবেক আমলারা। এ নিয়ে প্রশাসনে একধরনের অস্বস্তি ছিল।
চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জনপ্রশাসন বিশেষজবঞ মো. ফিরোজ মিয়া গণমাধ্যমকে বলেন, চুক্তি ছাড়া বর্তমান সরকারের কোনো বিকল্প নেই।

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.net
Website Design By Kidarkar It solutions