রাঙ্গামাটি:- পাহাড়ের বিদ্যমান পরিস্থিতি বিবেচনায় পর্যটকদের নিরাপত্তা এবং জানমালের ক্ষতি এড়াতে এবার ০৪ অক্টোবর থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য সাজেকে ভ্রমণে পর্যটকদের নিরুৎসাহ করেছে রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার (০৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ০৪ অক্টোবর থেকে অর্দিষ্টকালের জন্য পর্যটকদের সাজেক ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করা হলো।
এর আগে যেকোন ধরণের অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি এড়াতে তিন দফায় গত ২৫ থেকে ২৭ সেপ্টেম্বর, ২৮ থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর এবং ০১ অক্টোবর থেকে ০৩ অক্টোবর পর্যন্ত সাজেক ভ্রমণে পর্যটকদের নিরুৎসাহিত করেছিলো জেলা প্রশাসন।
উল্লেখ্য: গত ১৯ সেপ্টেম্বর ভোরে খাগড়াছড়ি জেলার পানখাইয়া পাড়ায় মোটরসাইকেল চোর সন্দেহে মো. মামুন (৩০) নামে এক যুবককে পেটানো হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এর প্রতিবাদে ১৯ সেপ্টেম্বর জেলার দিঘীনালা উপজেলার লারমা স্কয়ারে এলাকায় বিক্ষোভ মিছিলকে কেন্দ্র করে বাঙালি ও পাহাড়িদের মধ্যে সংঘর্ষের রূপ নেয়। ওই ঘটনায় সেখানে তিনজন নিহত হয়েছে।
এ ঘটনার উত্তাপ পরদিন রাঙ্গামাটি শহরেও ছড়িয়ে পড়ে। ২০ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টার দিকে জেলা শহরে শতশত পাহাড়ি জনতা মিছিল বের করে। সেই মিছিল থেকে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বনরূপা এলাকার দোকানপাট ও স্থাপনায় ভাঙচুর চালানো হয়। পরে দুপুরে পাহাড়ি-বাঙালিদের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। এ ঘটনায় এক যুবক নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে ৬৩ জন।
এই ঘটনায় গত ২১ সেপ্টেম্বর থেকে জুম্ম ছাত্রজনতা ৭২ ঘণ্টা অবরোধের ডাক দেয়। এতে গত তিনদিন ধরে সাজেকে আটকা ছিলেন প্রায় দেড় হাজার পর্যটক। অবরোধের পরের দিন নিরাপত্তা বাহিনীর সহযোগিতায় গত ২৪ সেপ্টেম্বর থেকে সাজেক ছাড়ে পর্যটকরা।
এদিকে ০১ অক্টোবর খাগড়াছড়ি জেলায় আবুল হাসনাত মোহাম্মদ সোহেল রানা নামের এক শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যা করেছে পাহাড়ি ছাত্র-যুবকরা। এরপর ঘটনাটি কেন্দ্র করে ওইদিন পাহাড়ি- বাঙালি সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছিলো।