শিরোনাম
রাঙ্গামাটির সাজেকে দিনভর গুলিবিনিময়, ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করল প্রশাসন যতটা দেখায়, মোদী কি ততটা শক্তিধর? এবার বাংলাদেশে শান্তিরক্ষী পাঠাতে ভারতের লোকসভায় প্রস্তাব হাসান মাহমুদের দোসর আমীর আলীর অত্যাচার থেকে বাঁচতে ভূক্তভোগীদের আকুঁতি রাঙ্গামাটিতে পৌর মাঠ রক্ষায় নাগরিকদের মানববন্ধন খালেদা জিয়া-তারেক রহমানের মামলা নিষ্পত্তি, উজ্জীবিত বিএনপি আগরতলায় বাংলাদেশের কনস্যুলার সার্ভিস বন্ধ ঘোষণা ভারতীয় হাইকমিশনারকে জরুরি তলব সীমান্তে যেকোনো অপতৎপরতা রোধে বিজিবি সম্পূর্ণ প্রস্তুত রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়িতে জেএসএস’র সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ইউপিডিএফ’র এক সশস্ত্র সদস্য নিহত

৫৬৯ জনের নিয়োগ চূড়ান্ত,কারারক্ষী নিয়োগে কামালের ভূত

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ৬৯ দেখা হয়েছে

বিজ্ঞপ্তি ৩৬৯ জনের জন্য, নিয়োগ হচ্ছে ৫৬৯।
নিয়োগ-বাণিজ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ ৪৬ জনের নাম।
অনিয়মের বিষয়টি স্বরাষ্ট্র ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের খতিয়ে দেখা উচিত: ইফতেখারুজ্জামান।

ডেস্ক রির্পোট;- শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের কোটা সংস্কার হলেও পুরোনো কোটায় ৫৬৯ জন কারারক্ষীর নিয়োগ চূড়ান্ত করেছে কারা অধিদপ্তর। শুধু তা-ই নয়, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে ৩৬৯ জন কারারক্ষী নিয়োগের কথা বলা হলেও নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে অতিরিক্ত আরও ২০০ জন। অভিযোগ রয়েছে, পুরো নিয়োগপ্রক্রিয়ার পেছনে বড় অঙ্কের আর্থিক লেনদেন হয়েছে। আর এই লেনদেনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ একটি চক্র।

জানা গেছে, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সরকারি কর্ম কমিশনসহ (পিএসসি) অনেক প্রতিষ্ঠানই নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত রেখেছে।

কিন্তু কারা অধিদপ্তর এই নিয়োগের ক্ষেত্রে বেশ তড়িঘড়ি করেছে। সারা দেশে যখন পুলিশ নিষ্ক্রিয়, তখনো বিশেষভাবে প্রার্থীদের ভেরিফিকেশন করে নিয়োগ চূড়ান্ত করা হয়। মূলত অনিয়ম ও আর্থিক লেনদেনের কারণে এমন তড়িঘড়ি করা হয় বলে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্রের দাবি।

বাতিল হওয়া কোটাপদ্ধতি অনুসরণ করে কেন নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে, সে প্রশ্ন করা হয়েছিল কারারক্ষী নিয়োগ কমিটির সভাপতি ও অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক কর্নেল শেখ সুজাউর রহমানকে। জবাবে তিনি বলেন, এ নিয়োগপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল ছাত্র-জনতার আন্দোলনের আগেই। তবে আন্দোলনের পর তাঁদের পুলিশ ভেরিফিকেশন শেষ হয়েছে। এখন কেবল নিয়োগপত্র চূড়ান্ত করা হচ্ছে। আর চাকরি দেওয়ার নামে অবৈধ লেনদেনের যে অভিযোগ আছে, সে প্রশ্ন করা হলে তিনি কোনো জবাব দিতে পারেননি। শুধু বলেছেন, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও মন্ত্রণালয়ের নির্দেশেই এসব করা হয়েছে।

৩৬৯ জন কারারক্ষী নিয়োগে ২০২৩ সালের ২১ জুন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে কারা অধিদপ্তর। বিজ্ঞপ্তিতে কারারক্ষীর ৩৫৫টি পদের বিপরীতে ৩৩ জেলার পুরুষ প্রার্থীদের কাছ থেকে আবেদন আহ্বান করা হয়। জেলাগুলো হলো ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, শেরপুর, চট্টগ্রাম, বান্দরবান, কক্সবাজার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চাঁদপুর, কুমিল্লা, খাগড়াছড়ি, ফেনী, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, রাঙ্গামাটি, সিলেট, মৌলভীবাজার, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, রাজশাহী, জয়পুরহাট, সিরাজগঞ্জ, নওগাঁ, নাটোর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, বগুড়া, রংপুর, দিনাজপুর, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, নীলফামারী, পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাঁও। একই বিজ্ঞপ্তিতে মহিলা কারারক্ষীর ১৪টি পদের জন্য ১৪টি জেলা হলো শেরপুর, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চাঁদপুর, কুমিল্লা, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, সিলেট, রাজশাহী, সিরাজগঞ্জ, নওগাঁ, নাটোর ও খুলনা। এই জেলাগুলোর প্রার্থীদের কাছ থেকে আবেদনপত্র চাওয়া হয়।

তবে শুধু এতিম কোটায় সব জেলার প্রার্থী আবেদন করতে পারবেন বলেও উল্লেখ করা হয় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে। গত বছরের এপ্রিলে প্রার্থীদের লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হয়। লিখিত পরীক্ষায় ২ হাজার ৪৩৩ জন পুরুষ এবং ১৫ জন নারী উত্তীর্ণ হন। চলতি বছরের জুনে উত্তীর্ণ প্রার্থীদের মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হয়। গত ২ জুলাই কোটা সংস্কারের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শুরু হলে কারা অধিদপ্তর তড়িঘড়ি করে গত ১১ জুলাই ৫৫৪ পুরুষ এবং ১৫ জন নারীসহ মোট ৫৬৯ প্রার্থীকে নিয়োগের জন্য চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করে। এক্ষেত্রে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লিখিত পদের চেয়ে ২০০ জন বেশি নেওয়ার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়, যার মধ্যে ১ জন নারী ও ১৯৯ জন পুরুষ।

কারা অধিদপ্তর সূত্র জানিয়েছে, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশেই বাড়তি ২০০ প্রার্থীকে চূড়ান্ত করা হয়েছে। তবে তাঁরা কোন জেলার অধিবাসী, কোন কোটায় এবং কীভাবে তাঁদের নির্বাচিত করা হয়েছে, তা স্পষ্ট করা হয়নি। এক্ষেত্রে অনিয়মের আশ্রয় নেওয়া হয়েছে।

জানতে চাইলে নিয়োগ কমিটির সভাপতি ও অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক কর্নেল শেখ সুজাউর রহমান বলেন, ‘আমরা আগেই নিয়মিত শূন্য পদে নিয়োগের জন্য তৎকালীন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছিলাম। এই ৩৬৯ জন নিয়োগের অনুমোদন পাওয়ার পর শূন্য পদগুলোতে নিয়োগেরও অনুমতি পাই। এরপর আমরা একই আবেদন থেকে ওই ২০০ প্রার্থী বাছাই করি। আমরা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলাপ করেই এটি করেছি।’

তবে জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, শূন্য পদ কম হলে একই নিয়োগে তাঁদের নিয়োগ দেওয়া যেত। তবে ২০০ প্রার্থীকে ঘোষণা ছাড়াই নিয়োগ দেওয়ার ঘটনা অস্বাভাবিক। এটি অনিয়ম। কারা অধিদপ্তরের উচিত ছিল সংশোধনী দিয়ে পুনরায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা। তাতে হয়তো আরও বিভিন্ন জেলার প্রার্থীদের চাকরির সুযোগ সৃষ্টি হতো। এখন কিছু জেলা নিশ্চিতভাবে বঞ্চিত হয়েছে।

এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সাবেক সচিব মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন ভূঁইঞা বলেন, কোটা সংস্কার হওয়ার পরও পুরোনো নিয়মে নিয়োগপ্রক্রিয়া চালিয়ে নেওয়ার একটি ব্যাখ্যা কারা অধিদপ্তরের থাকা উচিত। পরবর্তী সময়ে যে ২০০ জনকে নিয়োগের জন্য চূড়ান্ত করা হয়েছে, তাঁরা কীভাবে নির্বাচিত হয়েছেন, তাও পরিষ্কার করা উচিত ছিল। তা না হলে এ নিয়োগপ্রক্রিয়া স্বচ্ছ হবে না।

নিয়োগ-বাণিজ্যে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ ৪৬ জনের চক্র কারারক্ষী নিয়োগে ৩৩ জেলার প্রার্থীদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ চক্রের বিরুদ্ধে। প্রথমে ৩৬৯ প্রার্থী নিয়োগে কাঙ্ক্ষিত অর্থ হাতিয়ে নিতে না পেরে তাঁরা পরে পদের সংখ্যা বাড়িয়ে নীরবে নিয়োগ-বাণিজ্য করেছেন। চারটি অঞ্চলের প্রার্থীদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, খুলনা, যশোর ও চট্টগ্রাম অঞ্চলের প্রার্থীদের কাছ থেকে ১৫ লাখ থেকে ২০ লাখ এবং কুমিল্লা ও সিলেটের প্রার্থীদের কাছ থেকে ৮ লাখ থেকে ১০ লাখ করে টাকা নেওয়া হয়েছে।

একাধিক চাকরিপ্রার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পুরো নিয়োগে প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে কারা অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয়ের একটি চক্র দরদাম করেছে। যাঁরা চাহিদা অনুযায়ী অর্থ দিতে পেরেছেন তাঁদের চূড়ান্ত তালিকায় রাখা হয়েছে। মোটা অঙ্কের অর্থ লেনদেন হওয়া নিয়োগপ্রক্রিয়া শেষ করতে তাড়াহুড়ো করেছে নিয়োগ কমিটি।

পাঁচ সদস্যের নিয়োগ কমিটির সভাপতি ছিলেন অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক কর্নেল শেখ সুজাউর রহমান, পদাধিকার বলে সদস্যসচিব ছিলেন তৎকালীন সহকারী কারা মহাপরিদর্শক (এআইজি প্রিজন প্রশাসন) মো. মাইন উদ্দিন ভূঁইয়া। এ ছাড়াও পিএসসি, স্বরাষ্ট্র ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন করে সদস্য ছিলেন। গত জুলাইয়ে কোটা সংস্কার নিয়ে রায় দিলে, এই কমিটিকে দ্রুত নিয়োগপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে নির্দেশ দিয়েছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

কমিটির এক সদস্য জানিয়েছেন, পুরো বিষয়টি মন্ত্রণালয় থেকে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী মনির হোসেন নিয়োগ কমিটির সদস্যসচিব মাইন উদ্দিনকে নির্দেশনা দিতেন। কোটা সংস্কার নিয়ে আদালতের রায়ের পর প্রার্থীদের মধ্যে নিয়োগ বাতিল হওয়া নিয়ে শঙ্কা দেখা দেয়। অনেক প্রার্থী তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করা শুরু করেন। তখন কয়েকজন প্রার্থী দ্রুত নিয়োগপ্রক্রিয়া শেষ করার জন্য দাবি জানান। তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দ্রুত নিয়োগ কার্যক্রম শেষ করার নির্দেশ দেন।

মনির হোসেন বর্তমানে আত্মগোপনে থাকায় এ বিষয়ে তাঁর বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে গত শনিবার মাইন উদ্দিন ভূঁইয়ার কাছে অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সবকিছু তৎকালীন মন্ত্রণালয়কে জানিয়ে করা হয়েছে। আমি বদলি হয়ে চলে এসেছি। অনিয়মের বিষয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই।’

উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর মাইন উদ্দিন ভূঁইয়াকে গত ৮ আগস্ট কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগারের জ্যেষ্ঠ জেল সুপার পদে পদায়ন করা হয়। তবে তাঁর র‍্যাঙ্ক জেল সুপার হওয়ায় অন্য কর্মকর্তাদের তোপের মুখে জ্যেষ্ঠ জেল সুপারের দায়িত্ব থেকে তাঁকে সরিয়ে গত ২০ আগস্ট গাজীপুর জেলা কারাগারের জেল সুপারের দায়িত্ব দেওয়া হয়। তাঁর বিরুদ্ধে দুটি নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এই নিয়োগ-বাণিজ্যে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, তাঁর সহকারী একান্ত সচিব মনির হোসেন, নিয়োগ কমিটির সদস্য, একজন জেল সুপার, একজন জেলার, চারজন ডেপুটি জেলার, সাবেক আইজি প্রিজনের দুজন স্টাফ অফিসার, ১৩ জন কারারক্ষী, পাঁচজন গাড়িচালক, দুজন হিসাব নিরীক্ষক, দুজন গানম্যান, দুজন অফিস সহায়ক এবং একজন ডেসপাস কর্মীসহ ৪৬ জন জড়িত ছিলেন। পুরো চক্রটি সংঘবদ্ধভাবে অনিয়ম করেছে। চার ডেপুটি জেলারের মধ্যে আশরাফুল ইসলামের বিরুদ্ধে নিয়োগ-বাণিজ্যের গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। তিনি সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকুর ব্যক্তিগত সহকারী ছিলেন। পরে তিনি কারা অধিদপ্তরে চাকরি নেন। প্রভাবশালীদের দাপট দেখিয়ে তিনি চাকরির শুরু থেকে এক দশক ধরে কারা সদর দপ্তরে চাকরি করেন। সরকার পতনের আগেই তিনি সপরিবারে আমেরিকায় চলে যান। বর্তমানে কর্মস্থলে তিনি পলাতক রয়েছেন।

নিয়োগে অনিয়মের বিষয়টি খতিয়ে দেখার দাবি জানিয়েছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। তিনি বলেন, কারারক্ষী নিয়োগে যেসব অনিয়মের কথা আসছে, তা নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন পূরণে বাধা। নিয়োগের প্রতিটি স্তরে স্বচ্ছতা থাকা উচিত। স্বরাষ্ট্র ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উচিত, অনিয়মের বিষয়টি খতিয়ে দেখা।আজকের পত্রিকা

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com
Website Design By Kidarkar It solutions