ডেস্ক রির্পোট:- সবকিছুই ঠিকঠাক। উন্নয়ন সহযোগী চীনের অর্থায়নে তিস্তা মহাপ্রকল্পের কাজ শুরুর রোডম্যাপ চ‚ড়ান্ত হবে। শেখ হাসিনা রংপুরের জনসভায় তিস্তাপাড়ের মানুষকে মহাপরিকল্পনার কাজ শুরু করার প্রতিশ্রæতি দিয়ে এসেছেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ বিতর্কিত নির্বাচনের কারণে কর্মযজ্ঞ শুরু হতে বিলম্ব হচ্ছে। ডামি প্রার্থীর নির্বাচনে ভারতের সহায়তায় ক্ষমতায় এসে শেখ হাসিনা দিল্লি সফরে গিয়ে ডিগবাজি দেন। হিন্দুত্ববাদী নরেন্দ্র মোদি তিস্তা মহাপ্রকল্পের কাছ ঠেকিয়ে দিতে ভারতীয় টেকনিক্যাল টিম পাঠানোর প্রস্তাব দেন। আটকে যায় উত্তরাঞ্চলের কোটি মানুষের স্বপ্ন তিস্তা মহাপ্রকল্প। শুধু তাই নয়, দিল্লির তাঁবেদার শেখ হাসিনা গণভবনে সংবাদ সম্মেলন করে জানান, ‘আমি চাই তিস্তা মহাপ্রকল্পের কাজ ভারতই করুক’। ভারতকে খুশি রাখতে চীনের সঙ্গে শেখ হাসিনার এই বিশ্বাসঘাতকতায় চুরমার হয়ে যায় তিস্তাপাড়ের মানুষের স্বপ্ন। হাসিনা পালিয়ে যাওয়ায় রাজনৈতিক পটপরিবর্তন হয়েছে। ড. ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায়। এখন নদীপাড়ের লাখো মানুষের দাবি চীনের অর্থায়নে দ্রæত তিস্তা মহাপরিকল্পনার কাজ শুরু করা হোক।
জানতে চাইলে, ‘তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও’ সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম হক্কানী বলেন, তিস্তা মহাপরিকল্পার কাজ দ্রæত শুরু করতে হবে। শেখ হাসিনা তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের প্রতিশ্রæতি দিয়ে দিল্লির স্বার্থে প্রকল্প আটকে দিয়েছে। এখন হাসিনা পালিয়েছে। আমরা চীনের অর্থায়নে তিস্তা মহাপরিকল্পনার কাজ দ্রæত শুরু দেখতে চাই।
চীনের অর্থায়নে তিস্তা মহাপ্রকল্পের সবকিছুই চূড়ান্ত। নতুন করে ফাইল চালাচালির প্রয়োজন নেই। পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ে প্রকল্পের নকশা থেকে শুরু করে দু’দেশের মধ্যকার চুক্তির কাগজপত্র সবকিছুই প্রস্তুত। কিন্তু চলতি বছরের জুন মাসে ভারতের নাচের পুতুল শেখ হাসিনা দিল্লি সফরে গেলে চীনের অর্থায়নে তিস্তা প্রকল্প ঠেকিয়ে দেয়। ভূ-রাজনৈতিক কারণে ‘চীনের নেক’ ভীতিতে আতঙ্কিত ভারত ‘তিস্তা মহাপরিকল্পনা’য় নিজেদের অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাব দেয়। ২২ জুন দিল্লিতে শেখ হাসিনা মোদির যৌথ সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, তিস্তা নদীর পানি ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে দুই দেশের মধ্যে একটি টেকনিক্যাল টিম (কারিগরি দল) গঠন করা হবে। ভারতের টেকনিক্যাল টিম তিস্তা নদীর মহাপ্রকল্পে অংশীদার হবে। ভারতের অনুকম্পায় ক্ষমতায় আসা শেখ হাসিনা রাজনৈতিক গুরু মোদির প্রস্তাব মেনে নিতে বাধ্য হলে তিস্তা মহাপরিকল্পনা প্রকল্পের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। চীনের প্রস্তাব ও পরিকল্পনায় করা উত্তরাঞ্চলের কোটি মানুষের স্বপ্নের কার্যত মৃত্যু ঘটে।
এখন পাল্টে গেছে দৃশ্যপট। ভারতের তাঁবেদার হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হয়ে পালিয়ে গিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছে। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ব্যক্তিত্ব ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায়। বাংলাদেশে অস্থিরতা সৃষ্টির অপচেষ্টায় ভারত একের পর এক অপকাÐ করছে। এ অবস্থায় নদীপাড়ের মানুষ তিস্তা মহাপরিকল্পনা প্রজেক্টের কাজ এখনই শুরুর দাবি জানিয়ে সভা-সমাবেশ, মানববন্ধন করছে। নীলফামারীর ডালিয়া থেকে শুরু করে গাইবান্ধার ফুলছড়ি ১০৮ কিলোমিটার এলাকার নদীপাড়ের মানুষ মনে করছেন, তিস্তা প্রকল্পের কাজ এখনই শুরু করতে হবে। ভারতের স্বার্থে শেখ হাসিনা তিস্তা প্রকল্প নিয়ে চীনের সঙ্গে যে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে তিস্তা মহাপ্রকল্পের কাজ শুরুর মাধ্যমে তার জবাব দিতে হবে।
এদিকে ২৫ সেপ্টেম্বর ‘অভিন্ন নদীতে বাংলাদেশের ন্যায্য অধিকার’ শীর্ষক এক সেমিনারে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, ‘পানির ন্যায্য হিস্যা নিশ্চিতে ভারতের সঙ্গে শিগগিরই বৈঠকে বসা হবে। আমরা অবশ্যই ভারতের সঙ্গে বসে আন্তর্জাতিক নদীর বিষয়ে আলাপ-আলোচনা করব। আলোচনার সূত্রপাতে আমরা খুব দেরি করব না, শিগগিরই করতে চাই। তবে এই মুহ‚র্তে আরও কিছু বিষয় বেশি গুরুত্ব দিয়ে দেখার কারণে এটির (ভারতের সঙ্গে আলোচনা) হয়তো আরও কিছুদিন সময় লাগতে পারে।’ উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান ভারতের সঙ্গে আলোচনার কথা বললেও দেশের পানি বিশেষজ্ঞরা মনে করেন তিস্তা মহাপ্রকল্প নিয়ে ভারতের সঙ্গে আলোচনার কোনো প্রয়োজন নেই। চীন পদ্মা সেতুসহ গত তিন দশকে বাংলাদেশের অনেকগুলো উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। অতি দ্রæত তিস্তা মহাপ্রকল্পের কাজ শুরু করে হিন্দুত্ববাদী ভারতকে শিক্ষা দিতে হবে।
সূত্র জানায়, ২০১৬ সালে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বাংলাদেশ সফরে এলে দুই দেশের মধ্যে তিস্তা মহাপরিকল্পনাসহ ২৭টি প্রকল্পের চুক্তি হয়। অনেকগুলো প্রকল্প বাস্তবায়ন এবং কাজ শুরু হলেও তিস্তা প্রকল্পটি ভারতের কারণে নানা জটে পড়ে। প্রস্তাবিত তিস্তা মহাপরিকল্পনা অনুযায়ী, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের ভাটি থেকে তিস্তা-যমুনার মিলনস্থল (ডালিয়া থেকে ফুলছড়ি) পর্যন্ত নদীর প্রস্থ কমিয়ে ৭০০ থেকে ১০০০ মিটারে সীমাবদ্ধ করা হবে। নদীর ভাঙন ঠেকাতে গভীরতা বাড়ানো হবে ১০ মিটার। নদী শাসনের মাধ্যমে তিস্তা নদীকে সঠিক ব্যবস্থাপনার আওতায় আনা হবে, ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে পানি বহন ক্ষমতা বাড়ানো হবে, নদীর দুই পাড়ে বিদ্যমান বাঁধের মেরামত করা হবে, নদীর দুই পাড়ে মোট ১০২ কিলোমিটার নতুন বাঁধ নির্মাণ করা হবে, ৫০টি গ্রয়েন স্থাপন করা হবে, ড্রেজিংয়ের মাটি ভরাট করে নদীর দুই পাড়ে ১৭০ বর্গকিলোমিটার ভ‚মি উদ্ধার করা হবে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রস্তাবিত তিস্তা নদীর উন্নয়ন প্রকল্পের প্রাথমিক প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়েছিল, ৯৮৩ মিলিয়ন ডলারের এ প্রকল্পের মাধ্যমে বন্যা নিয়ন্ত্রণ, পানি প্রাপ্যতা বৃদ্ধি, জমি উদ্ধার, নৌ-চলাচল বৃদ্ধিসহ তিস্তাপাড়ে কৃষি অঞ্চল, শিল্প-কারখানা, আবাসন প্রকল্প, সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প গড়ে তোলা হবে এবং তিস্তাপাড়ের মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন করা হবে। চিলমারী বন্দর থেকে ডালিয়ায় তিস্তা বাঁধ অংশে তিনটি নৌ-টার্মিনাল তৈরি করা হবে। নদীর দুই পাড়ে হাইওয়ে তৈরি করা হবে, যার মাধ্যমে যোগাযোগ ব্যবস্থায় উন্নতি হবে। তখন আর তিস্তা নদীর পানির জন্য ভারতের সঙ্গে চুক্তির প্রয়োজন পড়বে না।
এ প্রকল্প নিয়ে উত্তরাঞ্চলের মানুষ নতুন করে স্বপ্ন দেখা শুরু করেন। বিশেষ করে চীনের অর্থায়নে প্রকল্প গ্রহণ করায় সবার ধারণা ছিল প্রকল্প বাস্তবায়ন হবেই। কিন্তু বাগড়া দেয় ভারত। কারণ ভারতের সহায়তায় শেখ হাসিনা বার বার বিতর্কিত নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে। সে জন্য ভারতের বিরোধিতা করার সক্ষমতা হাসিনা হারিয়ে ফেলে। এমনকি চীন সফরে যেতে হলেও শেখ হাসিনাকে ভারতের অনুমতি নিতে হয়।
চীন মূলত বাংলাদেশের কোটি মানুষের দুঃখ-দুর্দশা ঘোচাতে চায়। নদীভাঙন ও বন্যায় দেশের উত্তরাঞ্চলের মানুষকে বাঁচাতে তিস্তা প্রকল্পের প্রস্তাব দেয়। হোয়াংহো নদীকে একসময় বলা হতো চীনের দুঃখ। প্রতি বছর ওই নদীর পানি ভাসিয়ে দিত দেশটির শত শত কিলোমিটার জনপদ। ভেঙে নিয়ে যেত বহু গ্রাম-পথ-ঘাট জনপদ। সেই সর্বনাশা হোয়াংহো নদী শাসন করায় (পরিকল্পিত ড্রেজিং) চীনের মানুষের দুঃখ ঘুচেছে। হোয়াংহো এখন হয়ে গেছে চীনের কৃষকদের জন্য আশীর্বাদ। সেই হোয়াংহোর মতোই চীন এখন বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের তিস্তা ড্রেজিং করে কোটি মানুষের দুঃখ ঘোচানোর পরিকল্পনা করেছে। মূলত তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে বন্যা, নদীভাঙন বন্ধ হবে। উত্তরাঞ্চলের ৫ জেলার মানুষের ভাগ্যের চাকা খুলে যাবে। ২০১১ সালে তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা বণ্টনের লক্ষ্যে তিস্তা চুক্তি হওয়ার কথা ছিল। সে সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ঢাকা সফরে এলেও চুক্তি আটকে যায়। তখন থেকে ভারত তিস্তা চুক্তির মুলা ঝুলিয়ে রেখেছে। অথচ এক সপ্তাহের নোটিশে ফেনী নদীর পানি চু্িক্ত করে ভারত ত্রিপুরার মানুষের জন্য ফেনী নদীর পাতি তুলে নিচ্ছে। চীনের তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে ভারত থেকে বাংলাদেশকে অতিরিক্ত পানি তথা তিস্তা চুক্তির আর প্রয়োজন পড়বে না।
চীনের বিশেষজ্ঞ দল ও বাংলাদেশের পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিশেষজ্ঞরা একাধিকবার সরেজমিন পরিদর্শন করে তিস্তা মহাপরিকল্পনার নকশা তৈরি করেন। জানা গেছে, পূর্ব চীনের জিয়াংসু প্রদেশের সুকিয়ান সিটির আদলে তিস্তার দু’পাড়ে পরিকল্পিত স্যাটেলাইট শহর, নদী খনন ও শাসন, ভাঙন প্রতিরোধ ব্যবস্থা, আধুনিক কৃষি সেচব্যবস্থা, মাছ চাষ প্রকল্প, পর্যটন কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। এতে ৭ থেকে ১০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হবে। তিস্তা রিভার কমপ্রিহেনসিভ ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড রেস্টোরেশন নামে প্রকল্পটি পরিকল্পনা কমিশন থেকে ইআরডিতে পাঠানো হয়েছিল। চায়না পাওয়ার কোম্পানি দুই বছর থেকে তিস্তাপাড়ে নির্মিতব্য প্রকল্প বাস্তবায়নে নকশা ও সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ শেষ করেছে। তিস্তাপাড়ের জেলাগুলো নীলফামারী, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, রংপুর ও গাইবান্ধায় চায়নার তিনটি প্রতিনিধিদল কাজ করে।
২০২৩ সালের ২ আগস্ট রংপুর জিলা স্কুল মাঠে জনসভায় শেখ হাসিনা ঘোষণা দেন, উত্তরাঞ্চলের মানুষের দুঃখ মোচনে চীনের অর্থায়নে তিস্তা মহাপ্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। কিন্তু ২০২৪ সালের জুন মাসে ভারত সফর করে দিল্লি থেকে ফিরে গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি চাই তিস্তা মহাপ্রকল্প ভারতই করুক’। শেখ হাসিনার এই বক্তব্যের প্রতিবাদে উত্তরের ডালিয়া থেকে শুরু করে দক্ষিণের চিলমারী বন্দর পর্যন্ত তিস্তাপাড়ের লাখো মানুষ বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন করে। কর্মসূচিতে তিস্তাপাড়ের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার হাজার হাজার মানুষ তথা স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক, সাংবাদিক, সাংস্কৃতিককর্মী, রাজনীতিকসহ সুশীলসমাজের প্রতিনিধিরা অংশ নেন, দাবির প্রতি সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন।
মূলত তিস্তা প্রকল্প আশু বাস্তবায়নের দাবিতে বৃহত্তর রংপুর অঞ্চলে গত কয়েক বছরে বেশ কিছু মানববন্ধন, সভা, সেমিনার হয়েছে। রংপুর, লালমনিরহাট, নীলফামারী, গাইবান্ধা সংবাদদাতারা জানান, প্রতিদিন তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়নের দাবিতে সভা-সমাবেশ হচ্ছে। নদীপাড়ের মানুষ চায় তিস্তা প্রকল্পের কাজ এখনই শুরু করা হোক। কারণ নদীভাঙা ও বন্যা থেকে বাঁচতে চায় মানুষ। এছাড়া প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে কয়েক লাখ লোকের কর্মসংস্থান হবে সে প্রত্যাশায় মানুষ প্রকল্পের কাজের শুরু দেখতে মুখিয়ে রয়েছে।
এদিকে কুড়িগ্রাম সংবাদদাতা জানান, কুড়িগ্রামে গত বুধবার রাত থেকে শুরু হয়েছে বৃষ্টিপাত। চলছে অনবরত। ফলে ব্রহ্মপ্ত্রু, তিস্তা, ধরলা, দুধকুমরসহ কুড়িগ্রামের ১৬টি নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। আবারও ভাঙনের আশঙ্কায় নদীপাড়ের মানুষদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। অন্যদিকে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের আশায় বুক বেঁধে থাকা মানুষদের মাঝে সংশয় দেখা দিয়েছে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তিস্তায় তিস্তার পানি ৬ মিমি বেড়েছে। তবে সবক’টি নদীর পানি বিপদসীমার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এভাবে বৃষ্টি চলতে থাকলে একপর্যায়ে পানি বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে। রাজারহাট উপজেলার বুড়িরহাট গ্রামের ফয়েজ উদ্দিন (৮০) বলেন, এইবার নিয়্যা ৭ বার মোর বাড়ি ভাঙছে। নিজের আর কোনো জায়গা জমি নাই। অন্যের জায়গাত কোনোমতে ধাপরি নটকে আছং। এইবার ভাঙলে আর কোনো উপায় থাকপের নয়।
ওই উপজেলার বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের কালিরহাট গ্রামের কৃষক মিলন মিয়া বলেন, তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন ছাড়া নদীভাঙনের স্থায়ী সমাধান সম্ভব নয়। একই উপজেলার ঘড়িয়াল ডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য ও বুড়িরহাট খিতাবখা গ্রামের বাসিন্দা মামুন মÐল বলেন, আমরা এই এলাকার মানুষজন দীর্ঘ দিন ধরে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের আশায় বুক বেঁধে রয়েছি। বর্তমান পরিস্থিতিতে তা বাস্তবায়ন হবে কি না তা এখন অনিশ্চিত।