শিরোনাম
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে সব নির্বাচন চান সম্পাদকরা রাজপথে পরিকল্পিত নৈরাজ্য,হাসিনার ষড়যন্ত্রে একের পর এক অস্থিরতার চেষ্টা প্রতিষ্ঠানের মালিকানা হারাচ্ছেন বড় গ্রুপের প্রভাবশালীরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ঘুষের সিন্ডিকেট,বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংস্থার সঙ্গে দেনদরবারেও জড়িত পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ পুনর্গঠনের দাবিতে রাঙ্গামাটিতে বিক্ষোভ-সমাবেশ ডিসেম্বরে বাংলাদেশ-ভারত বৈঠকের প্রস্তুতি, হাসিনার প্রত্যর্পণ নিয়ে আলোচনার সম্ভাবনা বিচারের পর আ.লীগকে নির্বাচনে স্বাগত জানানো হবে-টাইম ম্যাগাজিনকে ড. ইউনূস আগামী নির্বাচন নিয়ে দিল্লি ভয়ংকর পরিকল্পনা করছে: জাগপা নেতা রহমত নতুন সিইসি নাসির উদ্দীনের নাম ছিল বিএনপির তালিকায় নাসির উদ্দীনকে সিইসি করে নির্বাচন কমিশন গঠন

কেন খুনের বিচার হয় না পাহাড়ে

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ৭২ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রির্পোট:- শান্তিচুক্তির ২৭ বছর পার হলেও শান্তি ফেরেনি পার্বত্য চট্টগ্রামে। কখনও পাহাড়ি-বাঙালি বিরোধে জড়িয়ে প্রাণ হারিয়েছে মানুষ। কখনও সন্ত্রাসী গোষ্ঠী কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) আক্রোশের শিকার হয়ে পড়েছে লাশ। আবার জনসংহতি সমিতি ও ইউপিডিএফের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বেও একের পর এক লাশ পড়ছে পাহাড়ে। তুচ্ছ একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত সপ্তাহেই লাশ হয়েছে চারজন। আশ্চর্যজনক হলেও সত্য, আগে সংঘটিত কোনো হত্যাকাণ্ডেরই হয়নি দৃষ্টান্তমূলক বিচার। তাই পাহাড়ে এমন ঘটনা ঘটছে বারবার।
চাকমা রাজা দেবাশিস রায় বলেন, ‘সহিংসতায় প্রাণহানির ঘটনা পাহাড়ে অনেকবার ঘটেছে। কিন্তু দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি না হওয়ার কারণে বারবার এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। এসব ঘটনার বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যদি যথাযথ পদক্ষেপ নিত, তাহলে এ ধরনের ঘটনা ঘটলেও ব্যাপক হারে মানুষ মারা যেত না, সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি এ পর্যায়ে যেত না।’ সাবেক সংসদ সদস্য ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সহসভাপতি ঊষাতন তালুকদার বলেন, ‘ধ্বংসাত্মক কার্যক্রমে না গিয়ে পাহাড়ে সবাইকে একসঙ্গে মিলেমিশে থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।’
জনসংহতি সমিতির সঙ্গে সরকারের শান্তিচুক্তি হয়েছিল ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর। চুক্তি অনুযায়ী ১৯৯৮ সালে জনসংহতি সমিতির তৎকালীন শান্তি বাহিনীর প্রায় দুই হাজার সদস্য সরকারের কাছে অস্ত্র জমা দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসেন।
কেন শান্তি ফিরছে না পাহাড়ে-
শান্তিচুক্তি পুরোপুরি বাস্তবায়ন না হওয়ায় গত ২৬ বছরে ছয়টি আঞ্চলিক দলের সৃষ্টি হয়েছে পাহাড়ে। এসব দল নিজেরাও অভ্যন্তরীণ বিরোধে জড়াচ্ছে। অবশ্য চুক্তির ব্যাপারে সরকার দাবি করছে পার্বত্য চুক্তির ৭২টি ধারার মধ্যে এ পর্যন্ত ৬৫টি ধারা সম্পূর্ণ বাস্তবায়ন করা হয়েছে। কিন্তু জনসংহতি সমিতির দাবি ৭২টি ধারার মধ্যে মাত্র ২৫টি ধারা বাস্তবায়ন হয়েছে। ১৮টি ধারার আংশিক বাস্তবায়ন হয়েছে।
সুফল আসেনি বড় উদ্যোগে
পাহাড়ের অন্যতম সমস্যা ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তির লক্ষ্যে ২০০১ সালে গঠন করা হয় পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন। এ পর্যন্ত ছয়বার কমিশনের চেয়ারম্যান পরিবর্তন হলেও ভূমি বিরোধ সমস্যা সমাধানে কোনো সফলতা আসেনি। তিন পার্বত্য জেলা থেকে ভূমি বিরোধ নিয়ে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তিদের কাছ থেকে প্রায় ২২ হাজার দরখাস্ত জমা নেওয়া হয়েছে।
পড়ছে একের পর এক লাশ
সামরিক-বেসামরিক বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুসারে, পাহাড়ে সশস্ত্র তৎপরতায় লিপ্ত থাকা সন্ত্রাসীদের হাতে স্বাধীনতার পর থেকে চুক্তির পূর্ববর্তী সময়ে নিহত, আহত ও অপহরণ কিংবা নিখোঁজের শিকার হয়েছে অন্তত ৮ হাজার ১৪০ জন। তার মধ্যে পাহাড়ি ১ হাজার ১৩৮, বাঙালি ১ হাজার ৪৪৬ নিয়ে নিহত হয়েছে সর্বমোট ২ হাজার ৫৮৪ জন। একই সময়ে ৩৮০ জন বিভিন্ন বাহিনীর সদস্য নিহত হয়েছেন। শান্তিচুক্তির পরও অব্যাহত আছে মৃত্যুর এই মিছিল। মোটরসাইকেল চুরির এক ঘটনায় মামুন নামের এক ব্যক্তির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে রাঙামাটি ও খাগড়াছড়িতে প্রাণ হারিয়েছেন চারজন। এ বছরই কুকি- চিনের হামলাতে রক্ত ঝরেছে পাহাড়ে। ইউপিডিএফ ও জনসংহতি সমিতির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বেও চলতি বছর প্রাণ গেছে অনেকের। এসব ঘটনায় মামলা হলেও কারোরই হয়নি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি। বিচার হয়নি এর আগের হত্যাকাণ্ডগুলোরও।
২০২৩ সালের ৭ এপ্রিল বান্দরবানের বোয়াংছড়ির দুর্গম পাহাড়ি এলাকা থেকে আট যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়। তারা সবাই বম জনগোষ্ঠীর। পুলিশ দুই গ্রুপের বন্দুকযুদ্ধে তারা নিহত হয়েছেন বলে দাবি করলেও ওই দুটি গ্রুপের পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। পাহাড়ে একসঙ্গে এতজনকে হত্যার ঘটনা সাম্প্রতিক সময়ে আর ঘটেনি।
এর আগে ২০১৮ সালের ৩ মে আধিপত্যের কোন্দলে ব্রাশফায়ার করে জনসংহতি সমিতি, সংস্কার (জেএসএস) সমর্থিত নানিয়ারচর উপজেলা চেয়ারম্যান শক্তিমান চাকমাকে হত্যা করা হয়। অভিযোগের তীর ইউপিডিএফের সদস্যদের দিকে। পরদিন ৪ মে শক্তিমানের শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাওয়ার সময় ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক)-এর সভাপতি তপন জ্যোতি চাকমা বর্মাসহ পাঁচজনকে ‘ব্রাশফায়ার’ করে হত্যা করা হয়। ইউপিডিএফ (মূল)-এর সশস্ত্র গ্রুপ এই কাজ করেছে বলে অভিযোগ। একই বছরের ২ মে ইউপিডিএফের সাবেক সদস্য উজ্জ্বল কান্তি চাকমাকে জেএসএস (সংস্কার)-এর সশস্ত্র ক্যাডাররা গুলি করে হত্যা করে বলে অভিযোগ। কয়েক দিন পর ২৮ মে সাজেক থানার করল্লাছড়ি এলাকায় ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক)-এর ক্যাডারদের গুলিতে ইউপিডিএফ (মূল)-এর সদস্য স্মৃতি চাকমা, সুশীল চাকমা ও অটল চাকমা নিহত হন।
শান্তিচুক্তির পরে গত ২৬ বছরে অন্তত ৮৯৯ জন পাহাড়ি, ৩৯০ বাঙালিসহ সামরিক-আধাসামরিক বাহিনীর ২৬ জনসহ মোট ১ হাজার ৩১৫ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন প্রায় ১ হাজার ৮২৩ জন। চুক্তি-পরবর্তী সময়ে পাহাড়ে অপহরণের শিকার হয়েছেন ২ হাজার ১৯৮ জন। কিন্তু কোনো ঘটনারই হয়নি দৃষ্টান্তমূলক বিচার।সমকাল

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com
Website Design By Kidarkar It solutions