শিরোনাম
পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ পুনর্গঠনের দাবিতে রাঙ্গামাটিতে বিক্ষোভ-সমাবেশ ডিসেম্বরে বাংলাদেশ-ভারত বৈঠকের প্রস্তুতি, হাসিনার প্রত্যর্পণ নিয়ে আলোচনার সম্ভাবনা বিচারের পর আ.লীগকে নির্বাচনে স্বাগত জানানো হবে-টাইম ম্যাগাজিনকে ড. ইউনূস আগামী নির্বাচন নিয়ে দিল্লি ভয়ংকর পরিকল্পনা করছে: জাগপা নেতা রহমত নতুন সিইসি নাসির উদ্দীনের নাম ছিল বিএনপির তালিকায় নাসির উদ্দীনকে সিইসি করে নির্বাচন কমিশন গঠন ‘জনগণ যাতে ক্ষমতার মালিক হতে পারেন তেমন দেশ গড়তে চাই’ রাঙ্গামাটির কাপ্তাই অটল ছাপ্পান্ন আয়োজনে সশস্ত্র বাহিনী দিবস উদযাপন খালেদা জিয়াকে সেনাকুঞ্জে আনতে পেরে আমরা গর্বিত : প্রধান উপদেষ্টা সেন্ট মার্টিনে পর্যটন নিয়ন্ত্রণে কমিটি, অ্যাপস থেকে পাস

ভয়াবহ বন্যায় ডুবেছে ১১ জেলা, নিহত ৯

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ২৩ আগস্ট, ২০২৪
  • ৬২ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রির্পোট:- পাহাড়ি ঢল এবং বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট মৌসুমি লঘুচাপ ও ভারি বৃষ্টিপাতে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সুরমা-কুশিয়ারা, ধলাই, মনু, খোয়াই, পূর্বাঞ্চলের গোমতী, মুহুরী ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের ফেনী, হালদা নদীগুলোর পানি বেড়ে দেশের ১১ জেলায় ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে।

ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি,খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ ও সিলেটে পরিস্থিতি বেশি অবনতি হয়েছে। অন্যান্য জেলায় ধীরে ধীরে বন্যার অবনতি হচ্ছে। এতে ৩৭ লাখের বেশি মানুষ চরম মানবিক সংকটে পড়েছে।

এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ৯ জন। তাদের মধ্যে রাঙ্গামাটিতে ১ জন,কুমিল্লায় ৪ জন, ফেনীতে একজন ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একজন ও কক্সবাজারে দুজন রয়েছেন।

এদিকে পর্যাপ্ত নৌযান ও অন্যান্য উদ্ধার যানের অভাবে পানিবন্দি এসব মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে নেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, বিজিবিসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক সামাজিক ও ব্যক্তি উদ্যোগের সংগঠনগুলো তাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা দিয়ে বন্যার্তদের উদ্ধারে কাজ করছে। সরকারও বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানানোর পাশাপাশি নানা উদ্যোগ নিয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এবারের বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত জেলা ফেনী। গত ৪০ বছরের মধ্যে এত ভয়াবহ বন্যা দেখেনি ফেনীবাসী। কয়েক লাখ মানুষ জীবনমৃত্যুর মাঝখানে দাঁড়িয়ে উদ্ধারের আকুতি জানাচ্ছে। অথচ বৈরী আবহাওয়া ও পানি বাড়তে থাকায় তাদের নিরাপদ আশ্রয়ে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। বন্যার্তদের উদ্ধার করতে না পারলে ব্যাপক প্রাণহানি ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) পর্যন্ত ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি,খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, মৌলভীবাজার, সিলেট, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও লক্ষ্মীপুর বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। এসব জেলার ৬৫ উপজেলা ও ৪৯৫টি ইউনিয়ন বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে।

কানাডার সাসকাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু বিষয়ে পিএইচডি গবেষক আবহাওয়াবিদ মোস্তফা কামাল পলাশ বলেন, মৌসুমি লঘুচাপটি বাংলাদেশের ওপর স্থায়ী হয়ে আছে। বুধবার বিকেলেও এ লঘুচাপটি চট্টগ্রামের অংশে অবস্থান করছিল, যা পূর্ব দিকে অগ্রসর হচ্ছিল না। এর প্রভাবে বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত দেশের অধিকাংশ এলাকায় বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

তিনি বলেন, বর্তমানে বঙ্গোপসাগরে খুবই স্ট্রংলি ম্যাডেন-জুলিয়ান অসিলেশন (এমজেও) অবস্থান করছে। ফলে সাগরে নিয়মিত গরম ও আর্দ্র বাতাস তৈরি হচ্ছে, যা উপকূলের দিকে প্রবাহিত হচ্ছে। মধ্য এশিয়ার উপরে ‘জেট স্ট্রিম’-এর অবস্থান রয়েছে। এর ফলে ভারতসহ বাংলাদেশে বৃষ্টিপাত হচ্ছে।

পলাশ বলেন, বন্যার পেছনে ভারত বাঁধ খুলে দেওয়া অন্যতম কারণ। ভারি বর্ষণে নদীগুলোর পানি বিপৎসীমায় পৌঁছে যাওয়ায় ভারত বন্যার কবলে পড়েছে। প্রতি বছর ভারত বন্যার আক্রান্ত হলেই তারা বাঁধ খুলে দেয়। এ বছরও তারা কোথাও কোথাও বাঁধ খুলে দিয়েছে এবং কিছু জায়গায় অতিরিক্ত পানির কারণে বাঁধের গেটগুলো ভেঙে গেছে।

তিনি ব্যাখ্যা করেছেন, এ তিনটি কারণ একই সঙ্গে ঘটলে তখন ওই এলাকায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেড়ে যায় এবং এর ফলে পাহাড়ি ঢল ও বন্যার সৃষ্টি হয়। সর্বশেষ দেশে ২০১৭ সালের জুন মাসে এ তিনটি কারণ একই সঙ্গে ঘটেছিল এবং এর কেন্দ্র ছিল চট্টগ্রাম। যার ফলে সেই বছর চট্টগ্রামে পাহাড় ধসে শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়।

বর্তমান পরিস্থিতিতে সতর্ক করে তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার রাত ১২টার মধ্যে দেশের বিভিন্ন জেলায় ১০০-৩০০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের প্রবল আশঙ্কা রয়েছে। আগামীকাল শুক্রবার থেকে এই বৃষ্টি কমার সম্ভাবনা রয়েছে।

কোনদিকে যাচ্ছে বন্যা : বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) বিকেল সাড়ে ৫টায় আবহাওয়া সংস্থাগুলোর সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে ভারি বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমে আসতে পারে। এ সময় উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার মনু, খোয়াই, ধলাই নদীগুলোর সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি প্রাথমিকভাবে স্থিতিশীল থেকে পরে উন্নতি হতে পারে।

একই সময়ে দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল, পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে ভারি বৃষ্টিপাতের ভারি বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমে আসতে পারে। ফলে ফেনী, কুমিল্লা ও চট্টগ্রাম জেলার মুহুরী, ফেনী, গোমতী, হালদা ইত্যাদি নদী সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি প্রাথমিকভাবে স্থিতিশীল থেকে পরে উন্নতি হতে পারে।

কর্মকর্তাদের ছুটি বাতিল : বন্যা মোকাবিলায় বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় গত বুধবার থেকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করেছে। মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের দপ্তরগুলোর সব কর্মকর্তা ও কর্মচারীর ছুটি বাতিল করা হয়েছে। একই সঙ্গে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। কন্ট্রোল রুমের নম্বরগুলো হলো—০১৩১৮২৩৪৯৬২, ০১৭৬৫৪০৫৫৭৬, ০১৫৫৯৭২৮১৫৮, ০১৬৭৪৩৫৬২০৮ এবং ইমেইল: ffwcbwdb@gmail.com এবং ffwc05@yahoo.com.

বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) জরুরি সভাও করেছে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়। সভায় সচিব নাজমুল আহসান বলেছেন, আকস্মিক বন্যায় বিপদগ্রস্ত জনগণকে সর্বোচ্চ সেবা দিতে হবে। আশ্রয় শিবিরে প্রয়োজনীয় সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। তিনি সতর্ক করে বলেন, বন্যায় মানুষের দুর্ভোগ প্রশমনে কোনো অবহেলা দেখা গেলে বা কোনো কর্মকর্তার বিষয়ে অভিযোগে উঠলে তদন্ত সাপেক্ষে দৃষ্টান্তমূলক আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শিক্ষার্থী, সেনাবাহিনী, স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করার জন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নির্দেশ দেন সচিব।

তিনি আরও বলেন, বন্যাদুর্গত জনগণকে উদ্ধারে পর্যাপ্ত নৌযানের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে, প্রয়োজনে নৌযান ভাড়া করতে হবে। তারুণ্যের শক্তি কাজে লাগাতে হবে।

ক্ষয়ক্ষতি ও সরকারের ত্রাণ : সরকারি হিসাবে গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত ১১ জেলায় ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৪০টি পরিবারের ৩৬ লাখ ৪৫ হাজার ৫৫২ জন পানিবন্দি হয়ে পড়ার খবর এসেছে। তিন জেলায় ছয়জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। বন্যাকবলিতদের ২ হাজার ২৪৬টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে এবং আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে ৮২ হাজার ৬৯৪ জন লোক এবং ৭ হাজার ৭৫৫টি গবাদি পশুকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। ১১ জেলার ক্ষতিগ্রস্তদের চিকিৎসা সেবার জন্য ৪৯২টি মেডিকেল টিম চালু রয়েছে।

চট্টগ্রামের জন্য ৩৫ লাখ টাকা নগদ ও ১ হাজার ৬০০ টন চাল বরাদ্দ দিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। কুমিল্লায় ৪৫ লাখ টাকা নগদ ও ২ হাজার ৬০০ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সবচেয়ে বেশি বন্যাকবলিত ফেনী জেলায় ৬২ লাখ টাকা নগদ এবং ২ হাজার ৯০০ টন চাল দেওয়া হয়েছে। নোয়াখালীতে ৪৫ লাখ টাকা ও ২ হাজার ৬০০ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সিলেটে ৪৫ লাখ টাকা ও ২ হাজার ৬০০ টন চাল, মৌলভীবাজার ৩০ লাখ টাকা এবং ২ হাজার ৩৫০ টন চাল দিয়েছে সরকার। হবিগঞ্জে ৩৫ লাখ টাকা এবং ২ হাজার ৪০০ টন চাল, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১৫ লাখ টাকা এবং ১ হাজার ৬০০ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। লক্ষ্মীপুরে ১০ লাখ টাকা এবং ৫০০ টন চাল এবং খাগড়াছড়িতে ১০ লাখ টাকা এবং ৫০০ টন চাল বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। এ ছাড়া দেশের সব জেলায় পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রী মজুত রয়েছে।

বন্যা আক্রান্ত জেলাগুলোর জেলা প্রশাসককে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, মেডিকেল টিম ও অন্য স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে সমন্বয় করে একসঙ্গে কাজ করার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে সার্বক্ষণিক কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। তথ্য ও সহযোগিতার জন্য ০২৫৫১০১১১৫ নম্বর চালু রয়েছে।

মোবাইল নেটওয়ার্ক : তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম জানিয়েছেন, বন্যাদুর্গত এলাকার ১৩ শতাংশ সাইট ডাউন আছে। কয়েকটি উপজেলায় অপটিক্যাল ফাইবার ড্যামেজ হওয়ার কারণে নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন আছে কয়েকটি জায়গায়। জেনারেটর ব্যবহার করা হচ্ছে৷ নেটওয়ার্ক একবারে বিচ্ছিন্ন হলে ১০টি VSAT প্রস্তুত আছে। সংশ্লিষ্ট এলাকায় মোবাইল নেটওয়ার্ক ফ্রি করতে নির্দেশনা দেওয়া আছে।

সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ফেনী জেলার বন্যা পরিস্থিতি সম্পর্কে যোগাযোগের কিছু নম্বর জানিয়েছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়। সেগুলো হলো ফেনীর এনডিসি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তানভীর আহমেদ (০১৭১৩১৮৭৩০৪), লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সাইফুল (০১৭৬৯৭৫৪১০৩) ও মেজর ফাহিম (০১৭৬৯৩৩৩১৯২)।

বন্যা পরিস্থিতির বিস্তারিত সংবাদ কালবেলা প্রতিবেদকের পাঠানো তথ্যে— কুমিল্লা : অব্যাহত বৃষ্টি ও ভারত থেকে ধেয়ে আসা পানিতে ক্রমেই ফুঁসে উঠেছে কুমিল্লার গোমতী নদী। এরই মধ্যে প্রায় চার হাজার হেক্টর এলাকার ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। চলমান বন্যায় কুমিল্লায় এখন পর্যন্ত চারজনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে দুজন বন্যার পানিতে তলিয়ে, একজন বৃষ্টির মধ্যে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে এবং একজন মাথায় গাছ পড়ে মারা গেছেন।

তারা হলেন- নাঙ্গলকোট পৌরসভার দাউদপুর এলাকার কেরামত আলী (৪৫), কুমিল্লা শহরের ছোট এলাকার কিশোর রাফি (১৫), চৌদ্দগ্রাম উপজেলার সোনাকাটিয়া গ্রামের কানু মিয়ার ছেলে শাহাদাত হোসেন (৩৪) এবং লাকসামে পানিতে তলিয়ে মারা যাওয়া শিশুর নাম-পরিচয় জানা যায়নি।

ফেনী : ফেনীতে ভয়াবহ বন্যায় একজন নিহত হয়েছেন। নিখোঁজ রয়েছেন একাধিক ব্যক্তি। এ ছাড়া চার শতাধিক মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে। ফুলগাজী, পরশুরাম ও ছাগলনাইয়া উপজেলার সব এলাকার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তলিয়ে গেছে রাস্তাঘাট ও বসতবাড়ি। নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে বন্যাদুর্গতরা। এদিকে বিপৎসীমার ৯০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনীয়া নদীর পানি।

ফুলগাজী উপজেলার সদর ইউনিয়ন, আনন্দপুর, মুন্সীরহাট, আমজাদহাট ইউনিয়নের ৪০টির বেশি গ্রাম ও পরশুরাম উপজেলার মির্জানগর, চিথলিয়া, বক্সমাহমুদ এবং পৌর শহরসহ ৪৫টির বেশি গ্রাম পানিতে তলিয়ে গেছে।

ফেনীতে বন্যা উপদ্রুত এলাকায় সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনী উদ্ধার কাজে নিয়োজিত রয়েছে। সেনাবাহিনী থেকে ১৬০ জন সদস্য ও ৪০টি উদ্ধারকারী যান ফেনী জেলায় পাঠানো হয়েছে। একটি ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট স্থাপন করা হয়েছে। নৌবাহিনীর ৭১ জন সদস্য ও ৮টি উদ্ধারকারী যান কাজ করছে। এ ছাড়া বিজিবিসহ আরও নৌযান আনা হচ্ছে।

লক্ষ্মীপুর : টানা বর্ষণে ও মেঘনা নদীর জোয়ারে পানি জমে লক্ষ্মীপুরের সর্বত্র জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে প্রায় ৬ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছে। জলাবদ্ধতা নিরসনে স্থানীয়দের সহযোগিতায় খালের অবৈধ বাঁধ অপসারণ করছে উপজেলা প্রশাসন। এ ছাড়া পানিবন্দিদের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুকনো খাবার বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।

বৃহস্পতিবার লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক সুরাইয়া জাহান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, আমাদের স্থায়ী ও অস্থায়ী ১৮৯টি সাইক্লোন শেল্টারও প্রস্তুত রয়েছে। লক্ষ্মীপুরের খালগুলোতে অবৈধভাবে বাঁধ দিয়ে দখল করে রেখেছে প্রভাবশালীরা। এতে পানি নামতে পারছে না। জনগণ আমাদের এ ব্যাপারে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করছে। প্রশাসনের উপস্থিতি ও জনগণের সহযোগিতায় অবৈধ বাঁধগুলো কেটে দেওয়া হচ্ছে। পানিবন্দি মানুষের সহায়তায় কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।

নোয়াখালী : ভারি বৃষ্টি ও ফেনীর মুহুরী নদী থেকে নেমে আসা পানিতে নোয়াখালীতে বন্যার অবনতি হয়েছে। এতে ৪ লাখ মানুষ বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া গ্রামীণ সড়কে সব ধরনের যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এতে চরম দুর্ভোগ ও আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দারা। আগেই জেলার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন।

বৃহস্পতিবার নোয়াখালী জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে জেলা দুর্যোগ কমিটির এক জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান।

জেলা আবহাওয়া অধিদপ্তরের উচ্চ পর্যবেক্ষক আরজুল ইসলাম জানান, ভোর ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত নোয়াখালীতে ১৪৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। সক্রিয় লঘুচাপ ও মৌসুমি জলবায়ুর কারণে জেলায় আরও তিন দিন ভারি বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া : ভারি বর্ষণ ও ভারতের পাহাড়ি ঢলে ভারত সীমান্তবর্তী আখাউড়ার উপজেলার নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির উদ্ভব হয় গত মঙ্গলবার রাত থেকে। পরে বুধবার সন্ধ্যা নাগাদ ৩৪টি গ্রাম প্লাবিত হয়। পানিবন্দি হয়ে পড়ে প্রায় সাড়ে ৫০০ পরিবার। এ ছাড়াও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ধানি জমি, শাকসবজির জমিসহ বিভিন্ন মাছের ঘের। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার মনিয়ন্দ ইউনিয়নের ইটনা ও মোগড়া ইউনিয়নের খলাপাড়া এলাকায় হাওড়া নদীর বাঁধ ভেঙে নতুন নতুন গ্রাম প্লাবিত হয়।

এদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া বীরচন্দ্রপুর গ্রামে বন্যার পানিতে ডুবে সুবর্ণা আক্তার (১৯) নামে এক অন্তঃসত্ত্বার মৃত্যু হয়েছে। গত বুধবার সকালের দিকে ঘটেছে এ ঘটনা। জানা যায়, মৃত সুবর্ণা আক্তার আখাউড়া উপজেলার বীরচন্দ্রপুর এলাকার পারভেজ মিয়ার স্ত্রী। আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও লুৎফুর রহমান ও দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. জালাল উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

চট্টগ্রাম : টানা বৃষ্টিতে চট্টগ্রাম নগরের নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া সীতাকুণ্ড, মিরসরাই ও ফটিকছড়ি উপজেলার বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এসব উপজেলার ৩১ ইউনিয়নের অন্তত লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার মো. ফাহমুন নবী কালবেলাকে জানান, বন্যা পরিস্থিতি বিবেচনায় এরই মধ্যে ২৩৯ আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। এর মধ্যে ১ হাজার ৭২৫ জন লোক আশ্রয়কেন্দ্রে এসেছে। আশ্রিত লোকজনের মধ্যে ৬১৭ পুরুষ, ৬২০ নারী, ৪৬৩ শিশু ও ২৫ জন প্রতিবন্ধী রয়েছে। জেলায় জরুরি স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে প্রস্তুত করা হয়েছে ১৩৭ মেডিকেল টিম। বন্যা পরিস্থিতি বিবেচনায় এরই মধ্যে ৫০ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ফটিকছড়িতে ২০ টন, মিরসরাইয়ে ২০ টন এবং সীতাকুণ্ডে ১০ টন ত্রাণ হিসেবে বিতরণ করা হয়েছে।

এদিকে চট্টগ্রাম থেকে ট্রেন চলাচল বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) সকাল ৯টার পর থেকে চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চলাচলরত আন্তঃনগরসহ সব ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।

রাঙ্গামাটি- রাঙ্গামাটির নানিয়ারচর উপজেলায় চেঙ্গী নদীর স্রোতে ভেসে শ্রেষ্ঠ চাকমা (৩) নামের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) বিকালে উপজেলার বুড়িঘাট ইউনিয়নের কুকুর মারা এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।

জানা গেছে, নদীতে ডুবে মৃত শ্রেষ্ঠ চাকমা ওই এলাকার বাসিন্দা পেশায় সিএনজি অটোরিকশা চালক মৃদুল চাকমার ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার বিকাল ৪টার দিকে বন্ধুদের সঙ্গে নদীর পাশে মাঠে খেলতে যায় শ্রেষ্ঠ চাকমা। খেলার এক পর্যায়ে সে চেঙ্গী নদীর স্রোতে কবলে পড়ে ভেসে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে নানিয়ারচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন।

নানিয়ারচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. আরাফাত হোসেন জানান, হাসপাতালে শ্রেষ্ঠ চাকমা নামের তিন বছরের বাচ্চাকে আনা হয়েছে। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক দেখভাল করে তাকে মৃত ঘোষণা করে।

খাগড়াছড়ি : খাগড়াছড়িতে বন্যায় ডুবেছে ৩০ গ্রাম। কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে ভয়াবহ বন্যার কবলে পুরো খাগড়াছড়ি। খাগড়াছড়ির বিভিন্ন উপজেলায় পানিবন্দি হাজার হাজার মানুষ। খাগড়াছড়ি জেলা সদরে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও দীঘিনালায় বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে।

এদিকে টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে মাইনি ও কাচালং নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় ডুবে গেছে খাগড়াছড়ি-সাজেক সড়কের একাধিক অংশ।বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে খাগড়াছড়ি সদরে পানি নামতে শুরু করেছে। বিকেল ৫টার দিকে বিভিন্ন পয়েন্টে ৪-৫ ইঞ্চি পানি কমেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শন করছেন দায়িত্বে থাকা জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা। ত্রাণ সহায়তা অব্যাহত আছে। তবে দুর্গম এলাকাগুলোতে ত্রাণ পৌঁছতে বিলম্ব হচ্ছে। খাগড়াছড়ি সদরের শব্দমিয়াপাড়া এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা জানান, পরপর চারবার হওয়া বন্যায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এবার সবচেয়ে বেশি নষ্ট হয়েছে আসবাবপত্র ও সংসারে ব্যবহৃত জিনিসপত্র। এত পানি বৃদ্ধি পাবে কখনো ভাবতেই পারেননি অনেকে। ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে কয়েক জায়গায় সড়কের ওপর পাহাড় ধসে পড়েছে। এ ছাড়া পানিতে সড়ক তলিয়ে থাকায় খাগড়াছড়ির সঙ্গে এখন পর্যন্ত যান চলাচল বন্ধ আছে বেশিরভাগ সড়কেই।

কক্সবাজার : টানা কয়েক দিনের বৃষ্টি ও উজানের ঢলে কক্সবাজারে দুই শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়ে অন্তত ৩ লাখ মানুষ পানিবন্দি। এসব এলাকার আঞ্চলিক ও গ্রামীণ সড়ক পানিতে ডুবে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এ ছাড়া পানিতে ভেসে গিয়ে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) তাদের মৃত্যু হয়। নিহতরা হলেন- রামু উপজেলার সাচিং মারমা (২৬) ও আমজাদ হোছন (২২)।

রামু থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু তাহের দেওয়ান কালবেলাকে বলেন, টানা কয়েক দিনের ভারী বৃষ্টিতে রামুর বিভিন্ন নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এ ছাড়া ঢলের পানির স্রোতে ভেসে গিয়ে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শাহীন ইমরান কালবেলাকে বলেন, টানা বৃষ্টিতে কক্সবাজারের কয়েকটি উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। সেখানে উদ্ধার কার্যক্রম ও শুকনো খাবার দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।

সিলেট : টানা কয়েকদিন ধরে সিলেটে বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। সঙ্গে বৃদ্ধি পেয়েছে ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিলেটের নদ-নদীর পানি। সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি থাকলেও কুশিয়ারা নদীর চারটি পয়েন্টে এরই মধ্যে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ অবস্থায় আবারও বন্যার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। তবে সিলেট জেলায় এখনো বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) সিলেটের কুশিয়ারা নদীর ৪টি পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে পানি। পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের সর্বশেষ তথ্যমতে, একই নদীর পানি অমলসীদ পয়েন্টে ২৪ সেন্টিমিটার, শেওলা পয়েন্টে ৬ সেন্টিমিটার, ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে ১ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে ৭২ সেন্টিমিটার ও শেরপুরে ৩ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

মৌলভীবাজার : টানা ভারি বর্ষণ ও ভারত থেকে নেমে আসা উজানের ঢলে আকস্মিক বন্যায় মৌলভীবাজারের কুলাউড়া, জুড়ী, কমলগঞ্জ, রাজনগর, কমলগঞ্জ, বড়লেখা ও সদর উপজেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের অসংখ্য বসতঘর, আঞ্চলিক মহাসড়ক, গ্রামীণ সড়ক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তলিয়ে গেছে। সড়কে পানি উঠে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে জেলা সদরের সঙ্গে। বন্যায় কমপক্ষে আড়াই লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে মনু ও ধলাই নদীর একাধিক স্থানে প্রতিরক্ষা বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে।

মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার আপডেট অনুযায়ী জেলার মনু নদী (রেলওয়ে ব্রিজ) বিপৎসীমার ৮৫ সেন্টিমিটার, চাঁদনীঘাট এলাকায় ১১৮ সেন্টিমিটার, ধলাই নদীতে ৩০ সেন্টিমিটার ও জুড়ী নদীতে বিপৎসীমার ১৯৩ সেন্টিমিটার এবং কুশিয়ারা নদীর পানি বিপৎসীমার ৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এ ছাড়া জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, বন্যায় ২১২টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে ১৬টি। আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন ৪ হাজার ৩২৫ জন, মেডিকেল টিম রয়েছে ২৫টি।

মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জাবেদ ইকবাল বলেন, মনু ও ধলাই নদীতে পানি কমেছে। নিচের দিকে পানি বাড়ছে। রাতে মনু নদীর উজানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। বৃষ্টি কমে গেলে পানি নেমে যাবে। এ ছাড়া যেসব স্থানে বাঁধ ভেঙেছে, সেগুলোতে কাজ চলছে।

হবিগঞ্জ : হবিগঞ্জের মাধবপুরে তিন দিনের টানা বৃষ্টি ও ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সোনাই নদীর বাঁধ ভেঙে তীরবর্তী এলাকায় পানি ঢুকে রোপা আমন ও সবজির ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে কয়েকটি ইউনিয়নের বাসিন্দারা। এ ছাড়া এসব এলাকার মৎস্য খামার পানিতে ডুবে মাছের খামারের মাছ ভেসে গেছে।

গত সোমবার থেকে বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) পর্যন্ত মুষলধারে ভারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। ভারতের পশ্চিম ত্রিপুরা থেকে বয়ে চলা সোনাই নদীতে ব্যাপক পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। সোনাই নদীর পানি সুন্ধাদিল, উতলারপাড়, কুটানিয়া, দীঘিরপাড়, সুলতানপুর এলাকায় তীর উপচে লোকালয়ে ঢুকতে শুরু করেছে।

উপজেলা দুর্যোগ কর্মকর্তা নুর মামুন কালবেলাকে জানান, অবিরাম বর্ষণে অনেকের কাঁচা ঘরবাড়ি মাটিতে ধসে পড়েছে। রাস্তাঘাটের অনেক ক্ষতি হয়েছে। সুরমা, জগদীশপুর ও নোয়াপাড়া চা বাগানের ভেতর বালু উঠে চা গাছের ক্ষতি হয়েছে।

মাধবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম ফয়সাল কালবেলাকে জানান, সরেজমিন ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করার কাজ চলছে।কালবেলা

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com
Website Design By Kidarkar It solutions