শিরোনাম
রাঙ্গামাটির সাজেকে দিনভর গুলিবিনিময়, ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করল প্রশাসন যতটা দেখায়, মোদী কি ততটা শক্তিধর? এবার বাংলাদেশে শান্তিরক্ষী পাঠাতে ভারতের লোকসভায় প্রস্তাব হাসান মাহমুদের দোসর আমীর আলীর অত্যাচার থেকে বাঁচতে ভূক্তভোগীদের আকুঁতি রাঙ্গামাটিতে পৌর মাঠ রক্ষায় নাগরিকদের মানববন্ধন খালেদা জিয়া-তারেক রহমানের মামলা নিষ্পত্তি, উজ্জীবিত বিএনপি আগরতলায় বাংলাদেশের কনস্যুলার সার্ভিস বন্ধ ঘোষণা ভারতীয় হাইকমিশনারকে জরুরি তলব সীমান্তে যেকোনো অপতৎপরতা রোধে বিজিবি সম্পূর্ণ প্রস্তুত রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়িতে জেএসএস’র সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ইউপিডিএফ’র এক সশস্ত্র সদস্য নিহত

ইন্ডিয়া টুডের নিবন্ধ : বাংলাদেশে চূড়ান্ত অরাজকতা, পতনের দ্বারপ্রান্তে হাসিনা সরকার

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় রবিবার, ৪ আগস্ট, ২০২৪
  • ৬৬ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রির্পোট:- বাংলাদেশে একপ্রকার নৈরাজ্য চলছে। নতুন করে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠা সহিংসতায় রবিবার কমপক্ষে ৮৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন জেলায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কার্যালয় জ্বালিয়ে দিচ্ছে এবং নিরাপত্তা বাহিনী সহিংস আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। শেখ হাসিনার গদি টলমল। রবিবার অসহযোগ আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দিনব্যাপী সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা ৮৮তে পৌঁছে গেছে। প্রতি মিনিটে বাড়ছে নিহতের সংখ্যা । বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যদি বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের দাবি মেনে নেন, তাহলে আগামী দিনে একটি সামরিক সরকার প্রত্যক্ষ করতে চলেছে বাংলাদেশের মানুষ। কারণ জনগণের রায় তার আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে। স্পষ্টভাবে বিক্ষোভকারীদের সমর্থনের কথা না বললেও বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে তারা জনগণের পাশে আছে। সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান অফিসারদের বলেছেন যে, ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জনগণের আস্থার প্রতীক’ এবং ‘তারা সর্বদা জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে।

জনগণ ও রাষ্ট্রের স্বার্থে এই সমর্থন অব্যাহত থাকবে’। একই সময়ে কয়েকজন সাবেক সামরিক কর্মকর্তা ছাত্র আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন এবং সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল ইকবাল করিম ভূঁইয়া সমর্থন প্রদর্শনে তার ফেসবুক প্রোফাইলের ছবি লাল করে দিয়েছেন।

গত ১৯ জুলাই কোটা বিরোধী আন্দোলনে সাধারণ মানুষ যোগ দেয়ায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও এর নেতারা সহিংস বিক্ষোভের শিকার হচ্ছেন। ঐক্যবদ্ধভাবে স্লোগান তোলা হচ্ছে – ‘হাসিনা সরকারকে যেতে হবে’। রবিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারফিউ জারি করা হয়েছে। ইন্টারনেট আংশিক বন্ধ আছে। বাংলাদেশি মোবাইল ফোন অপারেটরদের কর্মকর্তারা বলেছেন যে, তারা দেশে ফোর জি পরিষেবা বন্ধ করার নির্দেশনা পেয়েছেন। ঢাকা-ভিত্তিক একটি সূত্র ইন্ডিয়াটুডে-কে জানিয়েছে- ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে আগুন লাগানো হয়েছিল কিন্তু পুলিশ বা অন্য কোনো নিরাপত্তা বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছায়নি।’ তিনি আরও জানিয়েছেন , ‘বেশিরভাগ জেলায় আওয়ামী লীগের অফিসে আগুন দেওয়া হয়েছে। একজন এমপির বাসভবনে হাজার হাজার জনতা হামলা করেছে এবং তাকে পানির ট্যাঙ্কে লুকিয়ে থাকতে হয়েছে।’

একজন বাংলাদেশি-আমেরিকান রাজনৈতিক বিশ্লেষক তথা ডালাস বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাকাল্টি সদস্য শাফকাত রাব্বি বলছেন – ‘শেখ হাসিনা সম্ভবত একই ভুল করেছিলেন যেটা ইয়াহিয়া খান ২৬শে মার্চ, ১৯৭১ সালে নির্বিচারে ঢাকার মানুষকে গুলি করে করেছিলেন। হাসিনা জুলাইয়ের মাঝামাঝি সেই ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি করেছেন এবং ফলাফলটি একই দিকে যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে’। বাংলাদেশের একাধিক সূত্রের সঙ্গে তার যোগাযোগ রয়েছে। তিনি যোগ করেছেন – ‘৪০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় প্রায় এক মাস তরুণ শিক্ষার্থীদের পেছনে তাড়া করার পর সারাদেশে পুলিশ ক্লান্ত এবং শ্রান্ত । এমন কিছু অঞ্চল রয়েছে যেখানে উল্লেখযোগ্যভাবে পুলিশ কোনো পদক্ষেপ করছে না। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কিছু সদস্য (আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন) যারা পুলিশ বাহিনীতে যোগ দিয়েছিল তারা নিজেরাই হাতে আইন তুলে নিয়েছে এবং প্রায় ৪০ জন ছাত্রকে হত্যা করেছে’। শাফকাত রাব্বি বলছেন, বাংলাদেশের রাস্তায় প্রায় এক কোটি মানুষ প্রতিবাদে নেমেছে।

ঢাকা-ভিত্তিক সূত্রগুলি বলছে যে, এবার হয়তো হাসিনার যাবার সময় উপস্থিত এবং একটি সামরিক সরকার তার জায়গা নেবে। তবে হাসিনা বাংলাদেশে থাকবেন কিনা তা নির্ভর করবে পরিবর্তিত পরিস্থিতির ওপর। তিনি সবাইকে অনুরোধ করে পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টা করছেন বটে তবে জনগণের ক্ষোভ তার এবং তার দলের প্রতি বেড়েই চলেছে । শেখ হাসিনা ২০০৯ সাল থেকে ক্ষমতায় রয়েছেন। প্রধান বিরোধী দল – বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) সাম্প্রতিক নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তা বয়কট করে । শাফকাত রাব্বি মনে করেন ‘এই অবস্থা থেকে হাসিনার বাঁচার একমাত্র উপায় হবে ব্যাপক হারে দমনপীড়ন। সামরিক বাহিনী ইতিমধ্যেই তাদের মেশিনগান নিয়ে সারা বাংলাদেশে প্রায় ১০ মিলিয়ন বিক্ষোভকারীর মুখোমুখি হয়ে রাস্তায় নেমেছে। ছাত্র বিক্ষোভ দমন করার জন্য আগামী দিনে যে ভয়ঙ্কর মাত্রার দমনপীড়ন শুরু হবে তা সহজেই অনুমেয়। তিনি আবার একটি আক্রমণাত্মক জয় ছিনিয়ে নিতে পারেন, তবে এই মুহুর্তে সেটির সম্ভাবনা কম’।

ঢাকাভিত্তিক সূত্র মোতাবেক, হাসিনা সরকারকে সমর্থন দেওয়ায় বাংলাদেশিদের মনে ভারতের বিরুদ্ধে তিক্ততা তৈরি হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা ১৯ জুলাই থেকে একটি নজিরবিহীন বিক্ষোভ প্রত্যক্ষ করছেন এবং তারা বিশ্বাস করেন যে, হাসিনা সরকার এই মুহূর্তে পতনের দ্বারপ্রান্তে। বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে কোটা প্রথা বাতিলের দাবিতে গত জুলাইয়ের মাঝামাঝি থেকে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে আন্দোলন চালিয়েছে শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভ তীব্র হওয়ার সাথে সাথে, বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট ২১শে জুলাই কোটা কমিয়ে ৫ শতাংশ করে। এরপরেও বিক্ষোভ অব্যাহত ছিল। বিক্ষোভকারীরা অশান্তি দমন করতে সরকার কর্তৃক ব্যবহৃত অত্যধিক বল প্রয়োগের জন্য জবাবদিহিতার দাবি জানায়। আন্দোলন (যার কেন্দ্রস্থল ছিল ঢাকা), যা একাধিকবার সহিংস রূপ নিয়েছে, তাতে এখনো পর্যন্ত সারা দেশে কমপক্ষে ২৫০ জন (সরকারি হিসেব ) নিহত হয়েছে। সংখ্যাটা ক্রমবর্ধমান।

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.com
Website Design By Kidarkar It solutions