সহিংসতা-প্রাণহানিতে ঢাকাকে যা বলছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় শনিবার, ৩ আগস্ট, ২০২৪
  • ৭২ দেখা হয়েছে

ডেস্ক রির্পোট:- কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে প্রাণহানি ও সহিংসতার ঘটনা তদন্তে ও বিচারে সরকারের প্রতি ধীরে ধীরে আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ছে। একই সঙ্গে ঢালাওভাবে গ্রেফতার ও হয়রানি না করার তাগিদ দিয়েছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা।

মধ্য জুলাই থেকে শুরু হওয়া ওই সহিংসতায় সরকারি হিসাবে প্রায় দেড়শ প্রাণহানি হয়েছে। অবশ্য, পত্রিকার প্রতিবেদন অনুসারে তা দুই শতাধিক। ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে শত শত কোটি টাকার রাষ্ট্রীয় সম্পদের। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো প্রাণহানির ঘটনার পাশাপাশি সব ঘটনার স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ তদন্ত এবং জড়িতদের বিচারের আহ্বান জানিয়েছে।

এরই মধ্যে আন্দোলনে প্রাণহানি-সহিংসতার ঘটনায় জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), অ্যামেনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া গভীর উদ্বেগ জানিয়ে স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে জড়িতদের শাস্তির দাবি জানিয়েছে। এছাড়া এই ঘটনায় ঢাকার ১৪টি দূতাবাস যৌথভাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে চিঠিও দিয়েছে।

জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক কোটা সংস্কার আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে উদ্বেগ ও প্রাণহানির ঘটনার তদন্তের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চিঠি দিয়েছেন। সরকারের পক্ষ থেকে সেই চিঠির জবাবও দেওয়া হয়েছে।

দ্রুত ও স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় এবং নিরপেক্ষভাবে তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। একই সঙ্গে এই ঘটনায় দায়ীদের বিচারের আওতায় আনারও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। আন্দোলন ঘিরে হাজারো তরুণ ও বিরোধী রাজনীতিককে গ্রেপ্তারের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন মহাসচিব।

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে বাংলাদেশ সরকার ‘শ্যুট অন সাইট নীতি’তে (দেখা মাত্র গুলি) ছিল দাবি করে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক প্রধান জোসেফ বোরেল ‘বেআইনি হত্যাকাণ্ডে’ গভীর উদ্বেগ জানান।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মহাসচিব অ্যাগনেস ক্যালামার্ড শেখ হাসিনার কাছে খোলা চিঠিতে কোটা আন্দোলনে হতাহতের ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ, কার্যকর, স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন। এ ঘটনায় ‘আইনবহির্ভূতভাবে শক্তিপ্রয়োগের জন্য দায়ী’ ব্যক্তিদের জবাবদিহি নিশ্চিতের তাগিদ দিয়েছেন তিনি।

কোটা সংস্কার আন্দোলন ইস্যুতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের কাছে যৌথ চিঠিটি পাঠিয়েছে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, স্পেন, নেদারল্যান্ডস, কানাডা, সুইজারল্যান্ড, সুইডেন, ডেনমার্ক, নরওয়ে, অস্ট্রেলিয়া ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দূতাবাস। চিঠিতে আটক ব্যক্তিদের যথাযথ প্রক্রিয়ায় বিচার নিশ্চিত, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, সমাবেশের অধিকারসহ মানবাধিকার সমুন্নত রাখার আহ্বান জানিয়েছে দেশগুলো।

আন্দোলন ঘিরে বাংলাদেশে যে সংকট চলছে তার স্থায়ী ও শান্তিপূর্ণ সমাধানের আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এছাড়া কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া প্রাণহানির ঘটনায় স্বাধীন ও স্বচ্ছ তদন্তের আহ্বান জানায়।

আন্দোলন ঘিরে ছাত্রদের ওপর ‘অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের’ অভিযোগ তুলে মার্কিন সিনেটর বেন কার্ডিন ও কোরি বুকার বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি নিন্দা জানিয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছেন।

আন্দোলন ঘিরে চলমান পরিস্থিতি নিয়ে ইতোমধ্যেই বিদেশি কূটনীতিকদের নিয়ে দু’দফা ব্রিফিং করেছে সরকার। বিদেশি কূটনীতিকদের সহিংসতার ক্ষতচিহ্ন ও ধ্বংসযজ্ঞও ঘুরিয়ে দেখানো হয়েছে। এছাড়া পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বিবৃতি দিয়ে ঘটনার ব্যাখ্যা দিয়েছে সরকার।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বিদেশি কূটনীতিকদের জানিয়েছেন, কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে হত্যাকাণ্ড, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের সঙ্গে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনা হবে। পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন ঢাকার বিদেশি কূটনীতিকদের আশ্বস্ত করে জানিয়েছেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহতের ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিশন সুষ্ঠুভাবে প্রতিটি ঘটনার তদন্ত করবে। সে অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বাংলানিউজ

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো
© All rights reserved © 2023 Chtnews24.net
Website Design By Kidarkar It solutions