ডেস্ক রির্পোট:- সিলেট নগরের আখালিয়া, মদিনা মার্কেট এলাকায় সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও পুলিশের দফায় দফায় পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে দুই পক্ষের অন্তত দেড় শতাধিক আহত হয়েছেন। এ সময় পুলিশ ৮ জনকে আটক করেছে।
আজ শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে এ সংঘর্ষ শুরু হয়। বিকেল ৫টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত পুলিশ ফাঁকা গুলি, কাঁদানে গ্যাসের শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ছে। জবাবে শিক্ষার্থীরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করছেন।
এর আগে বিকেল ৪টার দিকে শিক্ষার্থীরা শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) গেট থেকে গণমিছিল নিয়ে সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কে মদিনা মার্কেটের দিকে রওনা হয়। মিছিলটি মাউন্ট এডোরা হাসপাতালের সামনে এলে পুলিশ বাধা দিলে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়।
বর্ডার গার্ড পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী মাসুমা রহমান বলেন, ‘বেলা সাড়ে ৩টার দিকে মিছিলে এসে জড়ো হয়েছিলাম। মিছিল শুরু হওয়ার পর পাঁচ মিনিটের মধ্যেই দুই দিক থেকে পুলিশের আক্রমণের মধ্যে পড়ি। পরে আন্দোলনকারী সিনিয়র ভাইয়েরা আমাদের একটি বাসার মধ্যে নিয়ে অবস্থান করান। অন্তত দেড় ঘণ্টা ধরে এখানেই আছি। নিজের জায়গা থেকে সেইফ মনে হচ্ছে, তবে বাইরে যাঁরা আছেন, তারা কেমন আছেন? কেন এত সব?’
বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় (বাউবি) শিক্ষার্থী শামসুল আলম বলেন, ‘দেখেন, আজকে তো শান্তিপূর্ণ সমাবেশ ছিল। এখানে পুলিশ, বিজিবি এবং র্যাব যেভাবে নির্বিচারে গুলি করতেছে, মনে হচ্ছে যে দেশে যুদ্ধ লেগে গেছে। এটা কোনো প্রয়োজন ছিল না। ছাত্রদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে এরা পরিকল্পিত আক্রমণ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। ইতিমধ্যে প্রথম সারির গণমাধ্যমগুলোতে আমরা জেনেছি, ১০ জন আটক হয়েছেন।’
একজন কলেজশিক্ষক নাদিরা আক্তারও যোগ দেন আন্দোলনে। তিনি বলেন, ‘আমি একজন সাবেক সাস্টিয়ান, এর চেয়ে বড় কথা হচ্ছে আমি বাংলাদেশের একজন বৈধ নাগরিক। এই আন্দোলনে প্রথম থেকে আছি এবং থাকব; কারণ, এটা একটা ন্যায্য দাবি। সবার উচিত ছাত্রদের পাশে থাকা। তা ছাড়া সরকার যেভাবে অগণতান্ত্রিক উপায়ে ছাত্রদের ওপর ন্যক্কারজনকভাবে একের পর এক হামলা করছে, তাতে করে নিজেদের ধরে রাখা দায়।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক আসাদুল্লাহ গালিব বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ মিছিলে রাষ্ট্রীয় বাহিনী নিরীহ ছাত্র-জনতার ওপর নির্বিচারে গুলি ছুড়ছে। পাড়া-মহল্লায় ঢুকে গুলি কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করেছে। অন্তত ২ শতাধিক আহত হয়েছেন।’
জানতে চাইলে সিলেট মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর) অতিরিক্ত ডিআইজি আজবাহার আলী শেখ বলেন, ‘বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পাশাপাশি পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করছে। আমাদের অন্তত ৫-৬ জন পুলিশ আহত হয়েছে। নাক ফেটে রক্ত পড়ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ শটগানের গুলি, টিয়ার গ্যাসের শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করছে। আমরা ৮ জনকে আটক করে থানায় পাঠিয়েছি। এখনো সংঘর্ষ চলছে।’