ডেস্ক রির্পোট:- কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে বিক্ষোভ, সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। রাজধানীর হাইকোর্ট এলাকা ও দোয়েল চত্বরে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থী, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, আইনজীবী ও অভিভাবকরা। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ চলাকালে পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ, লাঠিচার্জ, টিয়ারশেল নিক্ষেপ ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এতে শিক্ষার্থী, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সাংবাদিকসহ আহত হয়েছেন অনেকে। আটক করা হয়েছে আন্দোলনকারীদের। এছাড়াও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আদালত প্রাঙ্গণে হট্টগোলের ঘটনা ঘটে। সিলেট, বরিশাল, গাজীপুর, খুলনা, যশোর, ঠাকুরগাঁওয়ে আন্দোলনকারীদের ওপর লাঠিচার্জ, টিয়ারশেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। চট্টগ্রামে আদালত প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ করেন কয়েক হাজার শিক্ষার্থী। সংহতি সমাবেশ হয়েছে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানে শিক্ষক কর্মকর্তারা শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করেন। একই সঙ্গে শিক্ষার্থী হত্যার বিচার দাবি করেন।
সকাল থেকেই রাজধানীর হাইকোর্ট এলাকার আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর ব্যাপক পরিমাণ সদস্যের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। এরপর কয়েকজন শিক্ষার্থী আশপাশে অবস্থান নিয়েছিলেন। তাদের সঙ্গে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক। এ সময় পুলিশ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে আটক করে। এক শিক্ষার্থীকে আটকের সময় আরেক নারী শিক্ষার্থী আটক ঠেকানোর প্রচেষ্টা চালান। এরপর পুলিশভ্যানে উঠে সেই শিক্ষার্থী বলতে থাকেন, আমাদের আটকিয়ে রাখা যাবে না।
আরেক শিক্ষার্থীকে আটক করে নিয়ে যাওয়ার সময় তিনি পুলিশ সদস্যের সঙ্গে স্যার সম্বোধন করে কথা বলতে থাকেন। তিনি বলেন, আমাকে ছেড়ে দেন আমিতো আপনার ভাই। এ সময় পুলিশ সদস্য বলেন, স্টপ নো মোর টক। এই শিক্ষার্থীর মুখ চেপে ধরে তিনি বলেন, চুপ আর একটা কথাও না। এ সময় আরেক পুলিশ সদস্যকে বলতে শোনা যায়, যারা মারা গেছে তারা তো ফিরে আসবে না। এখন মিছিল বিক্ষোভ করলে আরও ক্ষতি।
এ সময় গণমাধ্যমে ওই শিক্ষার্থী বলেন, আমরা দাবি-দাওয়া আদায়ের কর্মসূচিতে অংশ নিতে এখানে উপস্থিত হই। পুলিশ সদস্যরা আমাদের সরে যেতে বলেন। আমরা তাদের কথা শুনে গেট থেকে সরেও আসি। কিন্তু আসার সময়ই আমাকে আটক করা হলো। আমরা শুধু আমাদের ন্যায্য হিস্যার কথা জানানোর জন্য এসেছি। কেন আটক করা হবে? আটক করে নিয়ে যাওয়ার সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আরিফ হোসেন আরিফ বলেন, সবাই আমরা একত্রে ছিলাম। কারণ ছাড়াই আমাকে ধরে নিয়ে আসা হয়েছে।
আরেক শিক্ষার্থীকে আটক করে নিয়ে যাওয়ার সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষক শেহরীন আমিন মোনামীকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ ওঠে পুলিশের বিরুদ্ধে। তিনি আটকের বিরুদ্ধে বাধা হয়ে দাঁড়ান। তখন জোরপূর্বক শারীরিক শক্তি প্রয়োগ করে এবং তাকে হাত মোচড় দিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীকে টেনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে এবং ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। এ সময় তিনি হাঁটুতে এবং পায়ে আঘাত পান।
এ সময় লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. নুসরাত জাহান চৌধুরী বলেন, আমরা কী কোথাও দাঁড়াতেও পারবো না? সে অধিকার আমাদের নেই? আমাদের শিক্ষার্থীদের জন্য আমরা এখন না দাঁড়াতে পারলে ক্লাস নেয়ার জন্য তাদের সামনে কীভাবে দাঁড়াবো?
গতকাল ‘মার্চ ফর জাস্টিস’- কর্মসূচি পালনের জন্য শুরুতে আসা শিক্ষার্থীদের আটক করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়ার চেষ্টা করা হয়। এরপর দোয়েল চত্বর থেকে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা একটি মিছিল নিয়ে হাইকোর্টের দিকে আসতে থাকেন। শিশু একাডেমির সামনে পুলিশ সদস্যরা তাদের আটকে দেন। এ সময় শিক্ষকরা উই ওয়ান্ট জাস্টিস বলে স্লোগান দিতে থাকেন। পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে চলতে থাকে বাকবিতণ্ডা। এরই মধ্যে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে শিক্ষকদের সঙ্গে এসে উপস্থিত হন। আন্দোলনরতরা ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘গভেট গভেট, পুলিশ গভেট’, ‘রক্তের বন্যায়, ভেসে যাবে অন্যায়’ ইত্যাদি স্লোগান দেন। এই সমাবেশে আরেকটি মিছিল নিয়ে যোগ দেন আন্দোলনকারীদের আরেকটি অংশ। পুলিশ সড়ক অবরোধ করায় তারা সেখানেই কিছু সময়ের জন্য বসে পড়েন।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, আমরা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের কর্মসূচি ‘মার্চ ফর জাস্টিস’-এ সংহতি জানাতে এসেছি। আজকে দেশে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছে যে, শিক্ষার্থী হিসেবে পরিচয় দিতে ভয় পাচ্ছে। তার ভয় যেকোনো সময় তাকে আটক করে নিয়ে যাওয়া হতে পারে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক কামরুল ইসলাম বলেন, আমরা কোনো দলের দালালি করতে আসি নাই। আমরা শিক্ষার্থীদের পক্ষে। আজকেও শিক্ষার্থীদের আটক করা হয়েছে। এ সময় তিনি দ্রুত শিক্ষার্থীদের ছেড়ে দেয়ার দাবি জানান।
আন্দোলনে বেশ কয়েকজন মা আসেন তাদের সন্তানকে নিয়ে। ফারজানা ইসলামের মেয়ে বেসরকারি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তিনি বলেন, আমরা ভেবেছিলাম আমরা ঘরের মধ্যে নিরাপদ। কিন্তু নিরাপত্তা কোথায়, আজ ঘরের মধ্যেও গুলি এসে লাগছে। আজ শিক্ষার্থীরা মাঠে নেমেছে কারণ তাদের ভাইয়ের রক্তে রাজপথ লাল হয়েছে। আজ আমরা বাধ্য হয়ে রক্তাক্ত প্রান্তরে এসে দাঁড়িয়েছি। তিনি সকল অভিভাবককে আন্দোলনে আসার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আজ আপনি ভাবছেন আমি নিরাপদ, আমার সন্তান নিরাপদ। কিন্তু না তারা নিরাপদ না। রক্তাক্ত প্রান্তরে এসে প্রতিবাদ জানান। নয়তো বিজয়ের মিছিলে আপনার আসার কোনো অধিকার থাকবে না।
বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলনে এসেছেন শিখা। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি জানানোর জায়গাটা কোথায়? শিক্ষার্থীদের কথা তো মন্ত্রীরা শুনবেন না। তাহলে তাদের দাবিতো এভাবেই জানাতে হবে। দাবি জানানোর অধিকার সবার আছে। দাবি জানানোর জন্য এতগুলো মায়ের বুক খালি হয়ে গেল। শিক্ষার্থীরা নাকি সন্ত্রাসী। এই শিক্ষার্থীরা সন্ত্রাসী কীভাবে হয়? পুলিশের সন্তানরা কী দেশে পড়াশুনা করে না? কিছু বললেই বলে, জামায়াত-শিবির। তাহলে পুরো দেশটাই জামায়াত-শিবির।
শিক্ষার্থীরা দোয়েল চত্বরে দাবির পক্ষে উত্তপ্ত স্লোগান এবং বক্তব্য দিতে থাকেন। এ সময় শিক্ষকরা নিশ্চিত করে বলেন, আটক দুই শিক্ষার্থীকে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। এরপর পদযাত্রা করে শহীদ মিনারের উদ্দেশ্যে যান আন্দোলনকারীরা। এ সময় নানা স্লোগান দিতে থাকেন। ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস, আমার ভাইয়ের রক্ত বৃথা যেতে দেবো না’।
শহীদ মিনারে কর্মসূচি শেষ পর্যায়ে আরেক অভিভাবক মিজানুর রহমান আন্দোলনরতদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমার তিনটা সন্তান তাদের চোখে তাকাতে পারি না। তাদের চোখের দিকে তাকালেই লেখা দেখি কাপুরুষ। আমি সন্তানদের জন্য এসেছি। সন্তানের নিরাপত্তা না থাকলে বাবা হিসেবে বেঁচে থাকার কোনো অধিকার নেই। তিনি এ সময় অভিভাবকদের মাঠে নেমে আসার আহ্বান জানান।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, যে ক্ষতি হয়েছে তা আমরা ফিরিয়ে আনতে পারবো না। আমাদের দাবি মানতেই হবে। এই দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা মাঠে থাকবো। এই দেশটা আমাদের, এভাবে হত্যা আমরা মেনে নেবো না। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহ-সমন্বয়ক তারেক আদনান বলেন, আমার ভাইয়ের রক্তের বিচার আমরা চাই। তাদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ ছাড়বো না। আমরা আমাদের আন্দোলনকে চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যাব।
আন্দোলন শেষে সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে পাঠানো এক বার্তায় ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’র নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। বৃহস্পতিবার সারা দেশে অনলাইন-অফলাইনে স্মৃতিচারণ ও প্রচারণা চালানো হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানান সহ-সমন্বয়ক রিফাত রশিদ। তিনি বলেন, ভয়ানক অন্ধকার পরিস্থিতিতে সারা দেশে ছাত্র-জনতার ওপর গণহত্যা, গণগ্রেপ্তার, হামলা-মামলা, গুম-খুন ও শিক্ষকদের ওপর ন্যক্কারজনক হামলার প্রতিবাদে, জাতিসংঘ কর্তৃক তদন্তপূর্বক বিচারের দাবিতে এবং ছাত্র সমাজের ৯ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আজ (বৃহস্পতিবার) বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ‘রিমেম্বারিং আওয়ার হিরোস’ কর্মসূচি ঘোষণা করছে।
পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে বিক্ষোভকারীরা:
‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি নিয়ে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে মিছিল করেছেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা সমবেত কণ্ঠে গানও পরিবেশন করেন। বুধবার দুপুরে তারা পুলিশ ও বিজিবি’র বাধা অতিক্রম করে শিক্ষার্থীরা হাইকোর্ট মাজার গেটের পশ্চিম পাশের কাঁটাতারের ব্যারিকেড ভেঙে সুপ্রিম কোর্ট চত্বরে প্রবেশ করেন। এ সময় তারা ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ বলে স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। হাইকোর্ট মাজার গেটের সামনে থেকে দুই শিক্ষার্থীকে আটক করে পুলিশ নিয়ে যেতে চাইলে শিক্ষার্থী ও আইনজীবীদের বাধার মুখে ছেড়ে দিতে বাধ্য হন।
বেলা সাড়ে ১২টার পরে ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ স্লোগান দিতে দিতে ব্যারিকেড ভেঙে সুপ্রিম কোর্ট আঙিনার ভেতরে ঢুকেন ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচির বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। এ সময় সুপ্রিম কোর্টের সাধারণ আইনজীবী, পথচারীরাও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগ দেন। পরে তারা সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবন ও সুপ্রিম কোর্টের পুরাতন ভবনের মাঝখানে চলাচলের (গ্যাংওয়ে) জায়গায় অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে। প্রায় আধাঘণ্টা তারা সেখানে অবস্থান করে বিভিন্ন স্লোগান দেন। পরে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বেলা ২টার দিকে সুপ্রিম কোর্ট আঙিনা থেকে বের হয়ে যান। বের হওয়ার সময় মাজার গেটের মূল ফটক খুলে দেয় পুলিশ। পরে তারা হাইকোর্ট মাজার গেট ও শিক্ষা অধিকার চত্বরে আগে থেকে অবস্থান নেয়া বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে যোগ দেয়। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কর্মসূচিতে আইনজীবী, শিক্ষক, অভিভাবক, সংস্কৃতি কর্মীরাও অংশ নেন। এ সময় সুপ্রিম কোর্টের মাজার গেটের ভেতরে-বাইরে বিপুল সংখ্যক সশস্ত্র পুলিশের অবস্থান ছিল। গেটের বাইরে পুলিশের সঙ্গে ছিল বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)’র সদস্যরাও। বিপুলসংখ্যক পুলিশ-বিজিবি’র উপস্থিতিতেই বেলা ৩টা পর্যন্ত শিক্ষা অধিকার চত্বরে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট), ইডেন ছাড়াও নর্থ সাউথ, ব্র্যাক, গ্রিন ইউনিভার্সির্টি, ঢাকা কলেজ, সিটি কলেজ, শেখ বোরহানুদ্দীন পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কলেজ, সবুজবাগ সরকারি কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচিতে অংশ নেন।
ঢাবির শিক্ষার্থী বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, শিক্ষার্থীদের নামে যেসব মামলা দেয়া হয়েছে, সব মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। নইলে আমরা রাজপথ ছাড়বো না। আমাদের আন্দোলন চলবে।
কর্মসূচি চলার মধ্যে এতে যোগ দেন আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, উন্নয়ন কর্মী শারমিন মুরশিদ, লেখক, অধিকারকর্মী রেহনুমা আহমেদ, সংস্কৃতি কর্মী কৃষ্ণকলি ইসলাম, ওয়ারদা আশরাফুসহ শিক্ষক, অভিভাবকরা। প্রতিবাদী গান গেয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের উদ্বুদ্ধ করতে দেখা যায় সংস্কৃতিকর্মীদের।
আইনজীবীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, তৈমূর আলম খন্দকার, রুহুল কুদ্দুস কাজল, গাজী কামরুল ইসলাম সজল, মোহাম্মদ আলী, গাজী তৌহিদ, আব্দুল্লাহ আল মাহবুব, মাহবুবুর রহমান খান, জামিউল হক ফয়সাল, মাহফুজুর রহমান, মাহফুজুর রহমান মিলন, আয়শা আক্তার, মাহবুবা জুঁই, মিনা আক্তার, ব্যারিস্টার ওসমান চৌধুরীসহ বিপুলসংখ্যক আইনজীবী। এদিকে আন্দোলনরত দুই শিক্ষার্থীকে পুলিশ আটক করে নিয়ে যেতে চাইলে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, মানজুর-আল-মতিন, আইনুন নাহার সিদ্দিকা, তানভীর আহমেদ ও এডভোকেট আব্দুল্লাহ আবু সাইদ বাধা দেন। পরে পুলিশ তাদের দুইজনকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হন।
ঢাকা কোর্টে আইনজীবীদের বিক্ষোভ:
‘মার্চ ফর জাস্টিস’ সমর্থনে ঢাকা কোর্টে আইনজীবীরা বিক্ষোভ করেন। চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ডাকা ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচির সমর্থন জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন ঢাকা জজ কোর্টের আইনজীবীরা। বুধবার দুপুর ১টার দিকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত প্রাঙ্গণে শতাধিক আইনজীবী এই বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেন। এ সময় চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ডাকা কর্মসূচির সমর্থন জানিয়ে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিতে থাকেন আইনজীবীরা। বিক্ষোভ মিছিল ঢাকা আইনজীবী সমিতি থেকে শুরু করে চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত প্রাঙ্গণে এসে শেষ হয়। এদিকে, কর্মসূচি ঘিরে ঢাকার নিম্ন আদালতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। সকাল থেকেই বিজিবি সদস্য ও অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
এ বিষয়ে লালবাগ জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ ইমরান হোসেন মোল্লা বলেন, আদালতের নিরাপত্তা যাতে বিঘ্নিত না হয় সে কারণে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে বেশ কয়েক স্তরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। নাশকতা ঠেকাতে তল্লাশি করা হচ্ছে।মানবজমিন