ডেস্ক রির্পোট:- সারাদেশের মতো চট্টগ্রামেও কোটাবিরোধী আন্দোলনে সংঘর্ষের পর নগর জুড়ে রাতভর ‘গ্রেফতার’ অভিযান চালিয়েছে পুলিশ।
অভিযানে ছাত্র ইউনিয়নের দুই নেতাসহ ৮৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, বিভিন্ন থানায় দায়ের হওয়া মামলায় তাদের গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলমান।
বুধবার (১৭ জুলাই) দুপুরে নগরীর পাঁচলাইশ থানা ও খুলশী থানায় মোট ৪টি মামলা দায়ের হয়েছে। এসব মামলায় সাড়ে সাত হাজার জনকে অজ্ঞাত হিসেবে আসামি উল্লেখ করা হয়েছে।
পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সন্তোষ কুমার চাকমা জানিয়েছেন, হত্যা, দাঙ্গা ও সরকারি কাজে বাধাদানের অভিযোগে এবং বিস্ফোরক আইনে পুলিশ বাদী হয়ে আলাদা দুটি মামলা দায়ের করেছেন।
এছাড়া হামলায় আহত হয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় থাকা ইমন ধরের মা বাদী হয়ে আরেকটি মামলা দায়ের করেছেন। দুই মামলার প্রতিটিতে ১০০ থেকে ১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ নেয়ামত উল্লাহ জানিয়েছেন, হামলায় আহত হয়ে চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সাহেদ আলী নামে এক ব্যক্তি একটি মামলা দায়ের করেছেন। এতে অজ্ঞাতনামা ৫০০ থেকে ৬০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
সিএমপির পুলিশের ৪টি জোনের চার উপ-কমিশনারের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, নগরীর ১৬ থানায় রাতভর অভিযানে মোট ৮৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে দক্ষিণ জোনের অধীন কোতোয়ালী, চকবাজার, বাকলিয়া ও সদরঘাট থানায় তিনজন করে মোট ১২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
উত্তর জোনের অধীন পাঁচলাইশ থানায় ১ জন, খুলশী থানায় ২ জন ও বায়েজিদ বোস্তামি থানায় ৩ জনসহ মোট ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
পশ্চিম জোনের অধীন ডবলমুরিং থানায় ১৬ জন, পাহাড়তলী থানায় ১০ জন, আকবর শাহ থানায় ৫ জন এবং হালিশহর থানায় ২৩ জনসহ মোট ৫৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বন্দর জোনের অধীন কর্ণফুলী থানায় ৩ জন, বন্দর থানায় ৫ জন, ইপিজেড ও পতেঙ্গা থানায় চারজন করে মোট ১৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এদিকে নগরীর পাহাড়তলী থানায় গ্রেফতার হওয়া দশজনের মধ্যে দুজন ছাত্র ইউনিয়নের নেতা। এরা হলেন- জেলা ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক শুভ দেবনাথ ও সাবেক সহসভাপতি ড্যানি বিশ্বাস।
কোটা সংস্কার আন্দোলনে যাওয়ার অপরাধ দেখিয়ে গ্রেপ্তার করে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ,চট্টগ্রাম জেলার সাধারণ সম্পাদক শুভ দেবনাথ,ড্যানি বিশ্বাস এবং পাহাড়তলী থানার সহ সভাপতি নিশান রায়কে।
প্রসঙ্গত, কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরতদের সঙ্গে ছাত্রলীগের সংঘর্ষে মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) বিকেলে চট্টগ্রাম নগরীর ষোলশহর, দুই নম্বর গেট ও মুরাদপুর এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এতে তিনজন নিহত ও প্রায় শ’খানেক আহত হন। আহতদের মধ্যে ৭১ জন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।