ডেস্ক রির্পোট:- প্রায় তিন বছর ধরে একমাত্র এনজিওগ্রাম মেশিন দিয়ে চলছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগের কার্যক্রম। এর মধ্যে চলতি বছরের শুরুর দিকে মেশিনটি যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বন্ধ হয়ে যায়। সেই সময় অনেক গরিব রোগী টেমপোরারি পেস মেকার (টিপিএম), পার্মানেন্ট পেস মেকার (পিপিএম), এনজিওগ্রাম ও রিং স্থাপন করতে পারেননি। জরুরি সেবা না পেয়ে অনেক রোগী মারা যাওয়ার অভিযোগও করেন স্বজনেরা।
অবশেষে চমেক হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগের জন্য নতুন এনজিওগ্রাম মেশিন কিনছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। চমেক হাসপাতাল কর্র্তৃপক্ষ বলছে, এনজিওগ্রাম মেশিন কেনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। যে মেশিনটি নষ্ট পড়ে আছে, সেটি মেরামত করলে কেমন সার্ভিস পাওয়া যাবে তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। তাই নতুন মেশিন কেনা হচ্ছে। মেশিনটি স্থাপিত হলে কাজের গতি দ্বিগুণ বাড়বে।
জানা গেছে, দেশের অন্যান্য জেলার তুলনায় চট্টগ্রামে হৃদরোগের প্রকোপ বেশি। হৃদরোগের চিকিৎসায় উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ প্রতিবেশী দেশ ভারত, সিঙ্গাপুর–ব্যাংককসহ বিশ্বের উন্নত দেশে চিকিৎসা নিয়ে থাকেন। এক্ষেত্রে গরিব ও নিম্ন মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের একমাত্র ভরসা চমেক হাসপাতাল। চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন জেলা এবং বৃহত্তর চট্টগ্রামের কয়েক কোটি মানুষ এই হাসপাতালের ওপর নির্ভরশীল।
পিকচার টিউব নষ্ট হয়ে যাওয়ায় ২০২১ সালের শেষের দিকে হৃদরোগ বিভাগের একটি এনজিওগ্রাম মেশিনের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। হৃদরোগ বিভাগের চিকিৎসকরা জানান, ক্যাথল্যাব বা কার্ডিয়াক ক্যাথেটারাইজেশনের (এনজিওগ্রাম) মাধ্যমে হৃদযন্ত্রের মাংসপেশি, ভাল্ব (কপাটিকা), ধমনির পরিস্থিতি জানতে এবং হৃদযন্ত্রের রক্তের চাপ বুঝতে রোগীকে ক্যাথল্যাবে পরীক্ষা করে দেখা হয়। ত্রুটি ধরা পড়লে প্রয়োজন মতো রক্তনালিতে রিং পরানো, পেসমেকার বসানো, সংকুচিত ভাল্বকে ফোলানোসহ বিভিন্ন অস্ত্রোপাচার করা হয়।
হৃদরোগ বিভাগের একজন চিকিৎসক জানান, বর্তমানে জাপানের শিমার্জু ব্র্যান্ডের একটি মেশিন দিয়ে টিপিএম, পিপিএম, এনজিওগ্রাম, পেরিপাইরাল এনজিওগ্রাম ও রক্তনালীতে রিং স্থাপনের কাজ চলছে। অতিরিক্ত চাপে চলতি বছরের জানুয়ারিতে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে প্রায় দুই সপ্তাহ মেশিনটি বন্ধ থাকে। পরে মেশিনটির সরবরাহকারী কোম্পানির প্রতিনিধিরা পিকচার টিউব স্থাপন করে সচল করেন।
চমেক হাসপাতাল হৃদরোগ বিভাগের প্রধান ও সহযোগী অধ্যাপক ডা. আশীষ দে বলেন, চমেক হাসপাতাল হৃদরোগ বিভাগের সক্ষমতা আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। তবে হৃদরোগীর হার যেহেতু বাড়ছে, তাই সক্ষমতা আরো বাড়ানো উচিত। আমাদের দুটি এনিজওগ্রাম মেশিনের মধ্যে একটি দীর্ঘদিন ধরে নষ্ট পড়ে আছে। এখন নতুন মেশিন কেনা হচ্ছে শুনেছি। নতুন মেশিন কেনা হলে কাজের গতি বাড়ার পাশাপাশি কাজের গতিও বৃদ্ধি পাবে।
এ ব্যাপারে চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তসলিম উদ্দিন বলেন, চমেক হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগের জন্য নতুন একটি এনজিওগ্রাম মেশিন কেনা হচ্ছে। ইতোমধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কেনার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। নতুন মেশিনটি স্থাপিত হলে হৃদরোগ বিভাগের সক্ষমতা বাড়বে।আজাদী