ডেস্ক রির্পোট:- মাঠ প্রশাসনের জেলা প্রশাসক (ডিসি) পদে পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে সরকার। চলতি মাসেই যে কোনো সময় নতুন ডিসি নিয়োগের প্রজ্ঞাপন জারি করবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। কমপক্ষে ১৫ জেলায় ডিসি পরিবর্তন হবে বলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে। ডিসি পরিবর্তনের পরপরই শুরু হবে বিসিএস ২৮ ব্যাচের ডিসি হওয়ার ফিট লিস্টের কার্যক্রম। এ নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগ। জানা গেছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর নিয়মিত বদলির কার্যক্রম হিসেবেই নতুন ডিসি নিয়োগ করতে যাচ্ছে সরকার। ইতোমধ্যে গত মাসে পুলিশের উচ্চ পর্যায়ে বড় রদবদল করা হয়েছে। যদিও কয়েক মাস ধরেই ডিসি পদে রদবদলের আলোচনা চলছিল। তবে উপজেলা নির্বাচন আর জুনের বার্ষিক হিসাব সমাপ্তির জন্য বিষয়টি আটকে ছিল।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, মাঠ প্রশাসনের ডিসি পদে বর্তমানে তিনটি ব্যাচের কর্মকর্তারা কাজ করছেন। ৬৪ জেলার মধ্যে ২৪ ব্যাচের ২৩ জন, ২৫ ব্যাচের ১৯ জন এবং ২৭ ব্যাচের ২২ জন কর্মকর্তা রয়েছেন। সাধারণত ডিসি পদে দুই বছর মাঠে রাখা হয়। তবে কারও কাজ সন্তোষজনক না হলে নির্ধারিত সময়ের আগেও পরিবর্তন করা হয়। ইতোমধ্যে ২৪ ব্যাচের বেশির ভাগ কর্মকর্তাকে মাঠ প্রশাসন থেকে সরিয়ে অন্যত্র দায়িত্ব দেওয়ার সময় হয়েছে। তবে একাধিক সূত্র জানিয়েছেন, ২৪ ব্যাচের সবাইকে বদলি করা হবে না। ২৫ ব্যাচেরও কয়েকজন ডিসিকে বদলি করা হতে পারে বলে জানা গেছে। ডিসি নিয়োগের ক্ষেত্রে খুবই গোপনীয়তা রক্ষা করে সার্বিক কার্যক্রম এগিয়ে রেখেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। নতুন ডিসি হিসেবে কাদের নাম চূড়ান্ত করা হয়েছে সে তালিকা অনেকটাই প্রস্তুত করেছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একাধিক সূত্র জানান, নতুন তালিকায় ২৭ ব্যাচের কর্মকর্তাদের নাম বেশি রয়েছে। মন্ত্রণালয়ের এক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, সরকার মাঠ প্রশাসনে সৎ, দক্ষ কর্মকর্তা নিয়োগ দিতে চায়। পাশপাশি অনেক কর্মকর্তা নানা কারণে বঞ্চিত হয়েছেন কিংবা জাতীয় নির্বাচনের আগে ইসির নির্দেশনায় মাঠ থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এমন কর্মকর্তাদের নামও নতুন তালিকায় রয়েছে। ডিসি পরিবর্তন বিষয়ে জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘মাঠে দুই বছর হয়ে গেলে ডিসি পদে আমরা পরিবর্তন করি। সিনিয়রদের পর্যায়ক্রমে বদলি করা হয়। একই সঙ্গে যথাযথ দায়িত্ব পালন করতে না পারলে, কোনো বড় অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেওয়া হয়।’ তিনি বলেন, এখন ডিসি হিসেবে যারা আছেন তাদের মধ্যে ২৪ ব্যাচের প্রমোশন হবে। চলতি মাসেই কয়েকটি জেলায় নতুন ডিসি নিয়োগ দেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছেন, ডিসি পরিবর্তন আসছে ১৫ জেলায়। এখন পর্যন্ত সেভাবেই তালিকা তৈরি করা হয়েছে। শেষ মুহূর্তে প্রয়োজনে আরও এক বা দুটি জেলা বাড়তেও পারে। ডিসি রদবদলের পর ২৮ ব্যাচের ডিসি হওয়ার ফিট লিস্টের কার্যক্রম শুরু করবে মন্ত্রণালয়। সূত্রগুলো জানান, ডিসি নিয়োগের ক্ষেত্রে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় খুবই গোপনীয়তা রক্ষা করে। প্রজ্ঞাপন জারির আগ পর্যন্ত এ-সংক্রান্ত নিয়োগ তালিকা সময়ে সময়ে বদলেও যায়। আবার প্রজ্ঞাপন জারির পরও বাদ পড়েন কোনো কোনো কর্মকর্তা।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একাধিক সূত্র জানান, নতুন নিয়োগের পাশাপাশি ২৫ ও ২৭ ব্যাচের দায়িত্ব পালন করা ডিসিদের কিছু জেলাও পরিবর্তন আসতে পারে। অনেক কর্মকর্তাকে পরিবর্তন করে গুরুত্বপূর্ণ বা বড় জেলায় দায়িত্ব দিতে পারে সরকার। যেসব কর্মকর্তা ইতোমধ্যে দক্ষতা দেখিয়েছেন তাদের আরও উৎসাহিত করতে চায় সরকার। কয়েক দিন ধরেই কর্মকর্তাদের মধ্যে এ নিয়ে আলোচনা রয়েছে। বিশেষ করে ২৭ ও ২৮ ব্যাচের কর্মকর্তারা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে খোঁজখবর রাখার চেষ্টা করছেন। ২৭ ব্যাচের কর্মকর্তারা আশায় আছেন কে হচ্ছেন ডিসি আর ২৮ ব্যাচ আশায় আছেন ফিট লিস্টের।