ডেস্ক রির্পোট:- দীর্ঘ ১২ বছরেও সাংবাদিক দম্পতি সাগর–রুনি হত্যার তদন্ত শেষ না হওয়ায় এটি ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থার সঙ্গে উপহাস বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। আসামিদের কনডেম সেলে রাখার বিধান চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিটের পূর্ণাঙ্গ রায়ে এমন পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি মো. বজলুর রহমানের বেঞ্চ।
গত ১৩ মে দেওয়া ওই রায়ের ৬৫ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি আজ মঙ্গলবার প্রকাশিত হয়েছে। হাইকোর্ট রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেন, ‘১২ বছরেও সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্ত শেষ করতে না পারা আমাদের ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থার সঙ্গে ক্রমাগত উপহাস। সে কারণে এটি এখনো বিচারের আলো দেখতে পারেনি। এটি বিচার ব্যবস্থাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।’
রায়ে বলা হয়, ‘আমাদের দেশে হত্যার বিচার হতে কখনো কখনো ২০ বছরের বেশি সময় লাগে। এ ধরনের হত্যাকাণ্ডকে যদি কোনো রাজনৈতিক রং দেওয়া হয়, তাহলে এর চেয়েও বেশি সময় লাগতে পারে। উদাহরণস্বরূপ বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার এফআইআর দায়ের করা যায়নি ২১ বছরের বেশি সময় ধরে।’
রায়ে হাইকোর্ট কারাগারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবিলম্বে কনডেম সেল থেকে বন্দীদের সাধারণ কারাগারে স্থানান্তরের জন্য শিগগির ব্যবস্থা নেওয়ার এবং দুই বছরের মধ্যে এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার নির্দেশ দেন।
১০৯ বারের মতো পেছাল সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ ১০৯ বারের মতো পেছাল সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ
এর আগে তিন আসামির করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে মৃত্যুদণ্ডাদেশ চূড়ান্ত হওয়ার আগেই আসামিদের কনডেম সেলে রাখা যাবে না বলে গত ১৩ মে রায় দেন হাইকোর্ট। হাইকোর্ট বলেছেন, মৃত্যুদণ্ড চূড়ান্ত হওয়ার আগেই নির্জন কারাগারে দীর্ঘদিন রাখা ডাবল সাজা। এটি সংবিধান ও ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থা অনুমোদন করে না। তাই বর্তমানে কনডেম সেলে থাকা আসামিদের দুই বছরের মধ্যে সাধারণ কয়েদিদের সঙ্গে রাখার ব্যবস্থা করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু যাদের সংক্রামক বা অন্য কোনো শারীরিক সমস্যা আছে তাঁদের ব্যতীত। তবে এদেরকে বিশেষভাবে পৃথক রাখতে হলে তাদের সঙ্গে কথা বলতে বলা হয়েছে।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের জামিন আবেদন হাইকোর্ট বিভাগকে অন্য আবেদনের মতো বিবেচনা করতে বলা হয়েছে রায়ে। মৃত্যুদণ্ডের আসামিদের বিষয়ে তথ্য চাইলে (সাংবাদিক, গবেষক) কারা কর্তৃপক্ষ ও সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার কার্যালয়কে বলা হয়েছে তা সরবরাহ করতে। এছাড়া সুপ্রিম কোর্টের বার্ষিক প্রতিবেদনে এই সংক্রান্ত তথ্য বিস্তারিত উল্লেখ করতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
এদিকে সরকারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি গত ১৫ মে হাইকোর্টের রায় ২৫ আগস্ট পর্যন্ত স্থগিত করেন। আর ওই সময়ের মধ্যে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আদালতে লিভ টু আপিল দাখিল করতে বলা হয়।