বান্দরবান:- কয়েকদিনের টানা বর্ষণে বান্দরবানের বিভিন্নস্থানে পাহাড় ধসে পড়েছে। ছোটবড় পাহাড় ধসে মাটি জমে বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে পাহাড়ের সড়কগুলো। ভারী বর্ষণ অব্যাহত থাকায় পাহাড় ধসে প্রাণহানির শঙ্কা রয়েছে। তাই ঝুঁকিপূর্ণ বসতি ছেড়ে লোকজনদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে মাইকিং করা হচ্ছে।
এদিকে টানা বর্ষণে জেলায় সাঙ্গু ও মাতামুহুরি নদীর পানি বেড়েছে। গত সোমবার সকাল নয়টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৮৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আগেরদিন হয়েছিল ৪৭ মিলিমিটার।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বান্দরবান মৃত্তিকা ও পানি সংরক্ষণ কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মাহবুবুল ইসলাম বলেন, আবহাওয়ার পূর্বাভাস মতে–এবারের বর্ষায় বৃষ্টি বেশি হবে। জুলাই মাসের প্রায় পুরো সময়জুড়ে দেশে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। বান্দরবান জেলায় সোমবার (গতকাল) বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বেড়েছে। টানা বৃষ্টিতে পাহাড় ধসে পড়েছে বিভিন্ন স্থানে। পাহাড় ধসে প্রাণহানির শঙ্কা থাকায় সকলকে নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
প্রশাসন জানায়, পরিস্থিতি মোকাবেলায় জেলার সাতটি উপজেলার চৌত্রিশটি ইউনিয়নে ২০৭টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এদিকে রুমা, থানচি, বান্দরবান–লামা–সূয়ালক, রোয়াংছড়ি–রুমা, থানচি–আলীকদমসহ অভ্যন্তরীণ সড়কগুলোর বিভিন্ন স্থানে ছোট পাহাড় ধসে সড়কে কাদা মাটি জমে সড়কগুলো পিচ্ছিল বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে। পরিবহন শ্রমিক নেতা জাফর আলম বলেন, কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে ছোটবড় পাহাড় ধসে সড়কগুলো বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে। দুর্ঘটনা রোধে যানবাহন চলাচলে সকলকে সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে। বান্দরবান পৌরসভার মেয়র মো. সামসুল ইসলাম বলেন, পৌরসভার নয়টি ওয়ার্ডেই ঝুঁকিপূর্ণ বসতিগুলো ছেড়ে লোকজনদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে মাইকিং করা হচ্ছে। খোলা হয়েছে আশ্রয়কেন্দ্রও। বালাঘাটা সড়কসহ অভ্যন্তরীণ সড়কে পাহাড় ধসে জমে থাকা মাটি অপসারণ করা হচ্ছে নিয়মিত। জেলা প্রশাসক শাহ্ মোজাহিদ উদ্দিন জানান, তিনদিন ধরে জেলায় প্রচুর বৃষ্টিপাত হচ্ছে। পাহাড় ধসে প্রাণহানির আশঙ্কায় পাহাড়ের পাদদেশে ও ঝুঁকিপূর্ণ বসতিগুলো ছেড়ে লোকজনদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে মাইকিং করা হচ্ছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় জেলা প্রশাসন পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদ ও ফায়ার সার্ভিসের লোকজন কাজ করছে। দুর্যোগ মোকাবেলায় সবধরনের প্রস্তুতি রয়েছে প্রশাসনের।