ডেস্ক রির্পোট:- টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে অবস্থান নিয়েছিলেন কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া এলাকার গৃহবধূ শান্তা আক্তার। কিন্তু তাঁর আসার খবরেই বাড়ি থেকে সটকে পড়েন প্রেমিক সোহাগ। টানা চারদিন ধরে প্রেমিকের বাড়িতে অবস্থান করছিলেন তিনি। দ্রুত সময়ের মধ্যে বিয়ে না করলে আত্মহত্যা করার হুমকিও দিয়েছিলেন।
এ নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল। বিষয়টি জানতেন স্থানীয় মাতব্বর, জনপ্রতিনিধি এবং পুলিশও। তবে শান্তার সাহায্যে এগিয়ে আসেননি কেউ। বরং সোহাগের পক্ষ নিয়ে শান্তাকে অপমান করার অভিযোগ উঠেছে কয়েকজন মাতব্বরের বিরুদ্ধে। সোহাগের পালিয়ে যাওয়া ও তাঁর স্বজন এবং স্থানীয় মাতব্বরদের অপমান সইতে না পেরে অবশেষে গত শনিবার প্রেমিকের ঘরে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন শান্তা।
ঘটনাটি উপজেলার নাগবাড়ী ইউনিয়নের খালুয়াবাড়ি এলাকার। গৃহবধূ শান্তা আক্তার কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার অলুয়া গ্রামের মোখলেছুর রহমানের মেয়ে। তিনি বিবাহিত। তাঁর একটি সন্তানও রয়েছে। সোহাগ কালিহাতী উপজেলার খালুয়াবাডী গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে।
প্রেমিকের বাড়িতে অবস্থান নেওয়ার পর শান্তা আক্তার দেশ রূপান্তরকে জানিয়েছিলেন, এক বছর আগে টিকটকে সোহাগের সঙ্গে পরিচয় হয় তার। প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠার পর বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক করেন সোহাগ। এছাড়াও তার কাছ থেকে দুই লাখ টাকাসহ তিন ভরি স্বর্ণ নিয়েছেন তিনি।
অভিযোগ করে তিনি আরও বলেছিলেন, সোহাগই তাকে ফোনে বাড়িতে আসতে বলেন। কিন্তু বিষয়টি টের পেয়ে সোহাগের মা ছেলেকে বাড়ি থেকে চলে যেতে বলেন। সোহাগের জন্য আমার ঘর-সংসার সব শেষ হয়ে গেছে। সোহাগ তাকে বিয়ে না করলে আত্মহত্যার হুমকিও দিয়েছিলেন শান্তা।
বিষয়টি স্থানীয় মাতবর ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের জানালেও কোনো প্রতিকার পাননি। অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি ছেলের পক্ষ নিয়ে শান্তাকে অপমান করেন। সোহাগের স্বজনরাও তাকে অপমান করেন। এক পর্যায়ে গত শনিবার রাত ৮টার দিকে প্রেমিকের ঘরে গলা ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন শান্তা।
প্রেমিকের বাড়িতে অবস্থানের বিষয়টি জানতেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল কাইয়ুম বিপ্লব। তিনি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। তবে সোহাগের মা পারিবারিকভাবে বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস দিয়েছিলেন।
এ ঘটনায় গতকাল রবিবার সোহাগকে প্রধান আসামি করে ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন শান্তার বোন বিউটি বেগম। পরে পুলিশ সোহাগের বাবা নুরুল ইসলাম ও মা ছোবুরা বেগমকে আটক করেছে।
কালিহাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ফারুক জানান, দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।