ডেস্ক রির্পোট:- পুলিশের দুর্নীতিবাজ, অসৎ, ক্ষমতার অপব্যবহারকারী কর্মকর্তাদের পক্ষে বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের বিবৃতিতে উদ্বেগ জানিয়েছে গণঅধিকার পরিষদ (নূর)। রোববার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ উদ্বেগ প্রকাশ করেন দলটির সভাপতি নুরুল হক নুর ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ রাশেদ খাঁন। বিবৃতিতে তারা বলেন, পুলিশের সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) এর সাবেক কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়া, পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি রফিকুল ইসলামসহ পুলিশের সাবেক ও বর্তমান কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতি করে অবৈধভাবে বিপুল সম্পত্তির মালিক হওয়া নিয়ে গণমাধ্যমে সুস্পষ্ট তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। শুধু দুর্নীতি এবং অবৈধ সম্পদ অর্জন নয়, ক্ষমতার অব্যবহার করে সাবেক পুলিশ প্রধান বেনজীর আহমেদ কর্তৃক একজন সংসদ সদস্যের টেলিভিশন চ্যানেলের শেয়ার দখল, পাহাড়ে জমি দখল, গোপালগঞ্জে সংখ্যালঘুদের জমি দখলের মতো জঘন্য ঘটনা বেরিয়ে এসেছে। এমন প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার করে অবৈধ সম্পত্তির মালিক হওয়াসহ নানাবিধ অপকর্মে জড়িত পুলিশ সদস্যদের বিষয়ে সঠিক তদন্ত ও বিচার দাবি না করে বরং রাজনৈতিক রং মাখিয়ে গণমাধ্যমসহ যারা পুলিশ সদস্যদের দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার নিয়ে সোচ্চার তাদের নিয়ে বিষোদগার করে বিবৃতি প্রদান করেছে। যা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হিসেবে পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন করতে পারে না। এটি সংবিধান ও নৈতিকতা পরিপন্থী। এ ধরণের কর্মকান্ড পুলিশের অসৎ কর্মকর্তাদের রক্ষা করার অপপ্রয়াস।
বিবৃতিতে তারা বলেন, বাংলাদেশ পুলিশ দেশের জনগণের ভ্যাট-ট্যাক্সের অর্থে পরিচালিত, জনসেবায় নিয়োজিত একটি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। শহর থেকে গ্রামে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষায় পুলিশের ভূমিকা অনস্বীকার্য। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে পুলিশের সাবেক আইজিপি, ডিএমপির সাবেক কমিশনারসহ পুলিশের সাবেক ও বর্তমান কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার করে অর্থ-বিত্তের মালিক বনে যাওয়া থেকে সাধারণ মানুষের জমি দখল, সংরক্ষিত এলাকায় জমিদখল, সংখ্যালঘুদের জমি দখলসহ নানাবিধ অপকর্মে পুলিশ বাহিনী সম্পর্কে জনমনে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করেছি, বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন নামে পুলিশের শীর্ষ কর্তাদের সংগঠন, এসব অপকর্মে জড়িতদের সঠিক তদন্ত ও বিচার দাবি না করে বরং দুর্নীতিবাজ অসৎ, দস্যু কর্মকর্তাদের পক্ষে সাফাই গেয়ে বিবৃতি প্রদান করেছে। কৌশল হিসেবে দেশের তরে পুলিশ সদস্যদের অবদান, ইতিহাস, ঐতিহ্য তুলে রাজনৈতিক রং মাখিয়ে বিবৃতি দিয়েছে। যা স্পষ্টতই প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হিসেবে নৈতিকতা ও সংবিধান পরিপন্থী। জনসেবায় দেশের তরে পুলিশ সদস্যদের ইতিবাচক ভূমিকা সচেতন নাগরিক হিসেবে অবশ্যই আমরা শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করি। তাই বলে গুটিকয়েক ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তার দুর্নীতি ও অপকর্মের দায় পুরো বাহিনীর ওপর আসতে পারে না। কিন্তু পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের বিবৃতি প্রকারান্তরে অসৎ, দুর্নীতিবাজ পুলিশ সদস্যদের পক্ষে। জবাবদিহিতামূলক গণতান্ত্রিক সরকার না থাকায় দেশের সর্বত্র যে অসৎ, দুর্নীতিবাজ দুষ্ট লোকের আধিপত্য ও সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে, পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের বিবৃতি তারই একটি উদাহরণ।
পুলিশের কতিপয় ঊর্ধ্বতন দুর্নীতিবাজ, অসৎ কর্মকর্তার কারণে পুরো পুলিশ বাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হতে পারে না। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি আড়াই লক্ষ পুলিশ সদস্যের পরিবার কখনোই এই গুটিকয়েক অসৎ, দুর্নীতিবাজ, দুর্বৃত্তদের সমর্থন করে না।
আমরা গণঅধিকার পরিষদের পক্ষ অনতিবিলম্বে পুলিশ বাহিনীসহ সকল পর্যায়ের দুর্নীতিবাজ, অসৎ কর্মকর্তাদের চিহ্নিত করে গ্রেফতারের পাশাপাশি শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।